পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শিক্ষা বই – নূরানী নামাজ শিক্ষা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শিক্ষা বই

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শিক্ষা বই

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শিক্ষা বই

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“আল্লাহ তায়ালার” উপর ঈমান

বিশুদ্ধতম মতানুসারে لله। আল্লাহর শব্দটি সৃষ্টিকর্তার ইসমে যাত বা সত্তাবাচক নাম পরিভাষাগতভাবে ‘আল্লাহ’ ঐ চিরন্তন সত্তার নাম, যার অস্তিত্ব অবশ্যম্ভাবী, যিনি সমস্ত গুণাবলির অধিকারী। আল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান বলতে আল্লাহর যাত বা স্বত্তা ও তার সিফাত বা গুণাবলীর প্রতি বিশ্বাস করা এবং মেনে নেয়াকে বুঝায়।

আল্লাহর সত্তাবাচক নাম ব্যতীত নিরানব্বইটি গুণবাচক নামও রয়েছে।

ইসলামী ৫ স্তম্ভ

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন অর্থাৎ জীবন ব্যবস্থা হল ‘ইসলাম’। সমস্ত মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন-যাপনের যে পদ্ধতি বা তরীকা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাধ্যমে নির্ধারণ করে দিয়েছেন উহাকে ইসলাম বলে। ইসলামের অনুশাসন যিনি মেনে চলেন, তাকে বলে মুসলমান।

ইসলামের ভিত্তি যে পাঁচটি বিষয়ের উপর রাখা হয়েছে সেগুলি হল: কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত।

প্রথম নম্বর হচ্ছে ঈমান। একজন মুসলমানের জন্য সর্বপ্রথম দায়িত্ব হল আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। যাহা কতগুলি কালিমার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বপ্রথম হচ্ছে-

আখিরাতের পাসপোর্ট রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামাজ

কালেমা তাইয়্যিবা (পবিত্র বাক্য)

لا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ

উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্।

অর্থ : আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।

কালেমা শাহাদাৎ

أَشْهَدُ أَنْ لا إِلهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُولُه .

উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু- লা-শারী-কালাহু-ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু-ওয়া রাসূ-লুহ্।।

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই এবং তিনি একক। তার কোন অংশীদার নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।

কালেমা তাওহীদ

لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَاحِدًا لَّا ثَانِيَ لَكَ مُحَمَّدُ رَّسُولُ اللَّهِ

إِمَامُ الْمُتَّقِينَ رَسُولُ رَبِّ الْعَلَمِينَ )

উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লা-আন্তা ওয়া-হিদাল্ লা-ছা- নিয়ালাকা মুহাম্মাদুর রাসূ-লুল্লা-হি ইমা-মুল মুত্তাক্বি-না রাসূ-লু রাব্বিল ‘আ-লামী-ন।

অর্থ : হে আল্লাহ্! তুমি ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই, তুমি এক। তোমার কোন দ্বিতীয় নেই, আল্লাহ্ তা’আলার রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরহেযগারগণের ইমাম, জগতসমূহের পালন কর্তার প্রেরিত রাসূল।

কালেমায়ে তামজীদ

لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ نُورًا يَهْدِيَ اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ مُحَمَّدُ رَّسُولُ اللَّهِ إِمَامُ الْمُرْسَلِينَ خَاتَمُ النَّبِيِّينَ )

উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লা-আন্তা নূ-রাই ইয়াহদিয়াল্লা-হু লিনূ-রিহী-মাইয়্যাশা-উ মুহাম্মাদুর রাসূ-লুল্লা-হি ঈমা-মুল মুরছালী-না খা-তামুন্নাবিয়্যিন।

অর্থ : হে আল্লাহ্! তুমি ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। তুমি আলোকময়। তোমার নূর দ্বারা যাকে ইচ্ছা হেদায়েতের আলো দান কর। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, তিনি রাসূলগণের ঈমাম এবং সমস্ত নবীর শেষ নবী।

ঈমানে মুজমাল

امَنْتُ بِاللَّهِ كَمَا هُوَ بِأَسْمَائِهِ وَصِفَاتِهِ وَقَبِلْتُ جَمِيعَ

أَحْكَامِهِ وَأَرْكَانِهُ .

উচ্চারণ : আমানু বিল্লাহি কামাহু-ওয়া বিআছমা-ইহী- ওয়া ছিফা-তিহী-ওয়া ক্বাবিলতু জামীআ’ আহ্হ্বামিহীওয়া আরকানিহ।

অর্থ : আল্লাহ্ এবং তার সমস্ত নাম ও গুণাবলীর উপর ঈমান আনলাম এবং তার যাবতীয় বিধি-বিধান ও রুকনসমূহ মেনে নিলাম।

ঈমানে মুফাচ্ছাল

امَنْتُ بِاللهِ وَمَلئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ

وَالقَدْرِ خَيْرِهِ وَشَرِّه مِنَ اللَّهِ تَعَالَى وَالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ )

উচ্চারণ : আমানতু বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহী-ওয়া কুতুবিহী-ওয়া রুসুলিহী-ওয়াল ইয়াওমিল আ-খিরি ওয়াল ক্বাদ্রি খাইরিহী-ওয়া শাররিহী-মিনাল্লা-হি তা’আ-লা- ওয়াল বা’ছি বা’দাল মাওত।

অর্থ: আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর উপর এবং তার ফেরেশতাগণের উপর, তার প্রেরিত কিতাবসমূহের উপর ও তার প্রেরিত রাসূলগণের উপর এবং কিয়ামতের দিনের উপর এবং তক্বদীরের ভাল-মন্দের উপর যা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের ওপর।

ইসলামের দ্বিতীয় ভিত্তি হল সালাত অর্থাৎ নামাজ। আমালের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। আর কিয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম এই নামাজের হিসাব নেয়া হবে। নামাজ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন-

উচ্চারণ : আকীমুচ্ছালাতা ও আতুযযাকাতা।

অর্থ: তোমরা নামাজ কায়েম কর এবং যাকাত আদায় কর।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন-

অর্থ: নিশ্চয় নামাজ অশোভন ও অন্যায় আচরণ হইতে বিরত রাখে।

নবী করীম (সা.) যেভাবে নামাজ পড়তেন

الحمد لله وحده والصلاة والسلام على عبده

ورسوله محمد و آله وصحبه .

যাবতীয় প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্ জন্য এবং দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর বান্দাহ্ ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সাহাবাগণের প্রতি। আমি প্রত্যেক মুসলমান নারী ও পুরুষের উদ্দেশ্যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের নামায আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করতে ইচ্ছা করছি।

এর উদ্দেশ্য হলো যে, যারা পুস্তিকাটি পাঠ করবেন তারা যেন প্রত্যেকেই নামায পড়ার বিষয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করতে পারেন। এ সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-

صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي رواه البخاري

অর্থ: (তোমরা সেভাবে নামায আদায় কর, যে ভাবে আমাকে নামায আদায় করতে দেখ।) [বুখারী]

পাঠকের উদ্দেশ্যে (নিম্নে) তা বর্ণনা করা হলো ১. সুন্দর ও পরিপূর্ণভাবে ওযু করবে

আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে যেভাবে ওযু করার নির্দেশ প্রদান করেছেন সেভাবে ওযু করাই হলো পরিপূর্ণ ওযু। আল্লাহ্ সোবহানাহু ওয়াতা’আলা এ সম্পর্কে এরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُؤُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ [ سورة المائدة : ]

অর্থ : হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাযের উদ্দেশ্যে দন্ডায়মান হও তখন (নামাযের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলোকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসেহ কর এবং পাগুলোকে টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেল। [সূরা আল-মায়েদাহঃ ৬]

নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- 

لا تُقْبَلُ صَلاةٌ بِغَيْرِ طَهُورٍ وَلَا صَدَقَةٌ مِنْ غُلُولٍ

অর্থ: পবিত্রতা ব্যতীত নামায কবুল করা হয় না। আর খেয়ানতকারীর দান গ্রহণ করা হয় না।

ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামাযে ভুল করার কারণে বললেন-

إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَأَسْبِعُ الْوُضُوءَ.

অর্থ: (তুমি যখন নামযে দাঁড়াবে (নামাযের পূর্বে) উত্তম রূপে ওযু করবে।)

২. মুসল্লী বা নামাযী ব্যক্তি কেবলামুখী হবে

সে যে কোন জায়গায় থাক না কেন, তার সমস্ত শরীর ও মনকে যে ফরয বা নফল নামায আদায়ের ইচ্ছা করছে, অন্তরকে সেনামাযের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে। এবং মুখে নিয়্যত উচ্চারণ করবে না, কারণ মুখে নিয়্যত উচ্চারণ করা শরীয়ত সম্মত নয়; বরং বা তা বিদ’আত। 

কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবাগণ কেউ মুখে নিয়্যত উচ্চারণ করেননি। সুন্নত হলো যে, নামাযী তিনি ইমাম হয়ে নামায আদায় করুন অথবা একা, তার সামনে সুত্রাহ (নামাযের সময় সামনে স্থাপিত সীমাচিহ্ন) রেখে নামায পড়বেন। 

কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের সামনে সুত্রাহ ব্যবহার করে নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিবলামুখী হওয়া নামাযের শর্ত। তবে কোন কোন বিশেষ অবস্থা তার ব্যতিক্রম যা সুবিদিত বা সবার জানা এবং এ বিষয়ে আহে ইলমদের কিতাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

৩. তাকবীরে তাহরীমাহ

আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরীমা দিয়ে নামাযে দাঁড়াবে এবং দৃষ্টিকে সিজদার স্থানে নিবদ্ধ রাখবে।

৪. তাকবীরে তাহরীমায় হাত উত্তোলন

তাকবীরে তাহরীমার সময় উভয় হাতকে কাঁধ অথবা কানের লতি বরাবর উঠাবে।

৫. বুকে হাত বাঁধা

এরপর ডান হাতের তালুকে বাম হাতের উপরের কব্জি অথবা বাহু ধারণ করে উভয় হাতকে বুকের উপর রাখবে। বুকের উপর হাত রাখা সম্পর্কে সাহাবী অয়েল ইবনে হুজর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং কাবীসাহ্ ইবনে হুলব আততায়ী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু, তিনি তার পিতা থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৬. সানা পড়া

দো’আ ইন্তেফ্রাহ (সানা) পাঠ করা সুন্নাত। দো’আ ইস্তেফ্রাহ নিম্নরূপ:

اللَّهُمَّ بَاعِدُ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدتُّ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اللَّهُمَّ نَقِنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرْدِ.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা বা-‘ইদ বাইনী ওয়া বাইনা খাতা- ইয়া-য়া, কামা- বা-‘আস্তা বাইনাল মাশরিক্বী ওাল মাগরিবি, আল্লা-হুম্মা নাক্কিনী- মিন খাতা-ইয়া-য়া কামা- ইউনাক্কাছ ছাওবুল আবইয়াদু মিনাদ্দানাসি, আল্লা-হুম্মাগসিলনী- মিন খাতা-ইয়া-য়া বিল মা-যিড়, ওয়াছালজি, ওয়াল বারদি।

অর্থ : হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে আমার পাপগুলো থেকে এত দূরে রাখ যেমন পূর্ব ও পশ্চিম পরস্পরকে পরস্পর থেকে দূরে রেখেছ। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে আমার পাপ হতে এমন ভাবে পরিষ্কার করে দাও, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে আমার পাপ হতে (পবিত্র করার জন্য) পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধুয়ে পরিষ্কার করে দাও। [বুখারী ও মুসলিম]

অন্য এক হাদীসে আবু হোরায়রাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, যদি কেউ চায় তাহলে পূর্বের দো’আর পরিবর্তে নিম্নের দো’আটিও পাঠ করতে পারে। কারণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তা পাঠ করার প্রমাণ রয়েছে-

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণ : (সোবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাস্সুকা, ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।)

অর্থ: (হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোন মা’বুদ নেই)

পূর্বের দো’আ দু’টি ছাড়াও যদি কেউ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত অন্যান্য যে সমস্ত দো’আয়ে ইস্তেফ্রাহ বা সানা রয়েছে, তা পাঠ করে তবে কোন বাধা নেই। কিন্তু উত্তম হলো যে, কখনও এটি আবার কখনও অন্যটি পড়া। কারণ এর মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের পরিপূর্ণ অনুসরণ প্রতিফলিত হবে। এরপর বলবেঃ (আ’উযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত-নির রাজীম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।)

অর্থ : (আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্ কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)

অতঃপর সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ) لا صَلاةَ

( لِمَنْ لَمْ يَقْرَأُ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ

অর্থ: (যে ব্যক্তি নামাযে সূরা ফতিহা পাঠ করে না তার নামায হয় না।) [বুখারী ও মুসলিম]

সূরা ফতিহা পাঠ শেষে জাহরী নামাযে (যেমনঃ মাগরিব, এশা ও ফজর) উচ্চস্বরে আওয়াজ করে এবং ছিরি নামাযে (যেমন- জোহর ও আসর) মনে মনে আ-মীন বলবে। এরপর পবিত্র কুরআন থেকে যে পরিমাণ সহজসাধ্য হয় পাঠ করবে।

উত্তম হলো যে, জোহর, আসর এবং এশার নামাযে কুরআন মজিদের আওছাতে মুফাচ্ছাল [সূরা নাস থেকে সূরা দোহা পর্যন্ত] এবং ফজরে তেওয়াল [সূরা কাফ থেকে সূরা নাবা পর্যন্ত] • আর মাগরিবে কিসার [সূরা দোহা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত] থেকে পাঠ করা।

মাগরিব নামাযে কখনও তেওয়াল অথবা আওসাত থেকে পাঠ করবে। এভাবে পাঠ করা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত রয়েছে। আসরের কিরআতকে জোহর এর কিরআত থেকে হালকা করা জায়েয আছে।

৭. রুকু

উভয় হাত দু’কাঁধ অথবা কান বরাবর উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে রুকূতে যাবে। মাথাকে পিঠ বরাবর রাখবে এবং উভয় হাতের আঙ্গুলগুলিকে খোলাবস্থায় উভয় হাঁটুর উপরে রাখবে। রুকূতে ইতমিনান বা স্থিরতা অবলম্বন করবে। এরপর বলবেঃ (সুবহানা রাব্বি’আল ‘আজীম)।

অর্থ: (আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।) দো’আটি তিন বা তার অধিক পড়া ভাল এবং এর সাথে নিম্নের দো’আটিও পাঠ করা মুস্তাহাব-জায়েয।

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي.

উচ্চারণ : (সোবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ্ ফিরলি।)

অর্থ: (হে আল্লাহ্! আমাদের প্রতিপালক, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি তোমার প্রশংসা সহকারে। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর।)

৮. রুকু থেকে উঠা

উভয় হাত কাঁধ অথবা কান বরাবর উঠিয়ে (সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ্) বলে রুকু থেকে মাথা উঠাবে। ইমাম বা একাকী উভয়ই দো’আটি পাঠ করবে। রুকু থেকে খাড়া হয়ে বলবে-

وَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ، حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكَ فِيهِ؛ مِلْءَ السَّمَاوَاتِ وَ مِلْءَ الْأَرْضِ وَمِلَءَ مَا بَيْنَهُمَا ؛

وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ.

উচ্চারণ: (রাব্বানা- ওয়া লাকাল হামদ্, হামদান্ কাছী- রান্ তাইয়্যেবাম্ মুবা-রাকান ফি-হ, মিআস্ সামা-ওয়া-তি ওয়া মিআল্ ‘আরদি, ওয়া মিল্কা মা বাইনাহুমা, ওয়া মিল্ক মা শি’তা মিন শাইযিড়ম বা’দু।)

অর্থ: (হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্যই সমস্ত প্রশংসা। তোমার প্রশংসা অসংখ্য, উত্তম ও বরকতময়, যা আকাশ ভর্তি করে দেয়, যা পৃথিবী পূর্ণ করে দেয়, উভয়ের মধ্যবর্তী স্থান পূর্ণ করে এবং এগুলো ছাড়া তুমি অন্য যা. কিছু চাও তাও পূর্ণ করে দেয়।)

পূর্বের দো’আটির পরে যদি নিম্নের দো’আটিও পাঠ করা হয় তাহলে ভাল-

أَهْلُ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ، أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ، وَكُلْنالَكَ عَبْدُ اللَّهُمَّ لأَمَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ

وَلَا يَنْفَعُ ذَالْجَدِّ مِنْكَ الْجَدِّ.

উচ্চারণ : (আহলুস্ সানা-য়ি ওয়াল মাজদি, আহাক্কু মা কা-লাল ‘আবদু, ওয়া কুল্লানা- লাকা ‘আব্দুন। আল্লা-হুম্মা! লা- মা-নি’আ লিমা- আ’তাইতা ওয়ালা- মু’তিয়া লিমা- • মানা’তা, ওয়ালা ইয়ানফা’উ যাল্ জাদ্দি মিনকাল্ জাদ্দু।)

অর্থ: (হে আল্লাহ্! তুমিই প্রশংসা ও মর্যাদার হক্কদার,বান্দাহ যা বলে তার চেয়েও তুমি অধিকতর হকদার। এবং আমরা সকলে তোমারই বান্দাহ্। হে আল্লাহ্! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই। এবং কোন সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না।)

কোন কোন সহীহ্ হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই (পূর্বের) দো’আটি পড়া প্রমাণিত আছে। আর মুকতাদী হলে রুকু থেকে উঠার সময় (রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ…) 

দো’আটি শেষ পর্যন্ত পড়বে। রুকু থেকে মাথা উঠানোর পর ইমাম ও মুকতাদী সকলের জন্য দাড়ানো অবস্থায় যে ভাবে উভয় হাত বুকের উপর ছিল সে ভাবে বুকের উপর উভয় হাত রাখা মুস্তাহাব। এ বিষয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অয়েল ইবনে হুজর এবং সাহল বিন সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা -এর বর্ণিত হাদীস. থেকে প্রমাণিত।

৯. সিজদাহ

(আল্লাহু আকবার) বলে যদি কোন প্রকার কষ্ট না হয় তা হলে দুই হাটু উভয় হাতের আগে (মাটিতে রেখে) সিজদায় যাবে। আর কষ্ট হলে উভয় হাত হাটুর পূর্বে (মাটিতে) রাখা যাবে। হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলি কিবণ্টামুখী থাকবে।

এবং হাতের আঙ্গুলগুলি মিলিত ও প্রসারিত হয়ে থাকবে। সিজদাহ্ হবে সাতটি অঙ্গের উপর। অঙ্গগুলো হলোঃ নাক সহ কপাল, উভয় হাতুলী, উভয় হাঁটু এবং উভয় পায়ের আঙ্গুলের ভিতরের অংশ। 

সিজদায় গিয়ে বলবে- (সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা।) অর্থ: (আমার সর্বোচ্চ প্রতিপালকের [আল্লাহর] প্রশংসা করছি।) তিন বা তার অধিকবার তা পুনরাবৃত্তি করবে। এর সাথে নিম্নের দো’আটি পড়া মুস্তাহাব।

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي.

উচ্চারণ : (সোবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাফিরলি।)

অর্থ: (হে আল্লাহ্! আমাদের প্রতিপালক, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি তোমার প্রশংসা সহকারে। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর।)

সিজদায় বেশি বেশি দো’আ করা মুস্তাহাব। কেননা নবী- কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-

فأما الركوع فعظموا فيه الرب وأما السجود فاجتهدوا في الدعاء فقمن أن يستجاب.

অর্থ: (তোমরা রুকু অবস্থায় মহান প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা কর এবং সিজদারত অবস্থায় অধিক দো’আ পড়ার চেষ্টা কর, কেননা তোমাদের দো’আ’ কবুল হওয়ার উপযোগী।) [মুসলিম]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম আরো এরশাদ করেন-

أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِن رَّبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا

الدُّعَاء .

অর্থ: (বান্দাহ্ সিজদাহ্ অবস্থায় তার প্রতিপালকের অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। অতএব এই অবস্থায় তোমরা বেশি বেশি দো’আ করবে।) [মুসলিম]

ফরয অথবা নফল উভয় নামাযে মুসলিম [নামাযী] সিজদার মধ্যে তার নিজের এবং মুসলমানদের জন্য আল্লাহ্ কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য দো’আ করবে। সিজদার সময় উভয় বাহুকে পার্শ্বদেশ থেকে, পেটকে উভয় উরু এবং উভয় উরু পিন্ডলী থেকে আলাদা রাখবে।

এবং উভয় বাহু [কনুই] মাটি থেকে উপরে রাখবে। (কেননা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম কুনইকে মাটির সাথে লাগাতে নিষেধ করেছেন।)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-

اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ وَلَا يَبسِطُ أَحْدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ إِنْبِسَاطَ الْكَلْبِ . [متفق عليه ]

অর্থ: (তোমরা সিজদায় বরাবর সোজা থাকবে। তোমাদের কেউ যেন তোমাদের উভয় হাতকে কুকুরের ন্যায় বিছিয়ে প্রসারিত না রাখে।) [বুখারী ও মুসলিম]

১০. সিজদা থেকে উঠা

(আল্লাহু আকবার) বলে (সিজদাহ থেকে) মাথা উঠাবে। বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসবে এবং ডান পা খাড়া করে রাখবে। দু’হাত তার উভয় রান (উরু) ও হাঁটুর উপর রাখবে। এবং নিম্নের দো’আটি বলবে।

رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي اللَّهُمَ

اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي وَعَافِنِي وَاجْبُرْنِي.

উচ্চারণ: (রব্বিফিরলী, রব্বিফিরলী, রব্বিফিরলী, আল্লাহুম্মাফিরলী, ওয়ারহামনী-, ওয়াহদিনী, ওয়ারযোকনী-, ওয়া ‘আ-ফিনী-, ওয়াজবুরনী-।)

অর্থ: (হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়াত দান কর, আমাকে রিযিক দান কর, আমাকে সুস্থ্যতা দান কর এবং আমার ক্ষয়ক্ষতি পূরণ কর।) 

এই বৈঠকে ধীর স্থির থাকবে যাতে প্রতিটি হাড়ের জোর তার নিজস্ব স্থানে ফিরে ‘যেতে’ পারে রুকুর পরের ন্যায় স্থির দাঁড়ানোর মতো। কেননা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম রুকুর পরে ও দু’সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে স্থিরতা অবলম্বন করতেন।

১১. দ্বিতীয় সিজদাহ

(আল্লাহু আকবার) বলে দ্বিতীয় সিজদাহ করবে। এবং দ্বিতীয় সিজদায় তাই করবে প্রথম সিজদায় যা করেছিল।

১২. আরামের বৈঠক

সিজদাহ থেকে (আল্লাহু আকবার) বলে মাথা উঠাবে। ক্ষণিকের জন্য বসবে, যে ভাবে উভয় সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে বসেছিল। এ ধরনের পদ্ধতিতে বসাকে (জলসায়ে ইসতেরাহা) বা আরামের বৈঠক বলা হয়।

আলেমদের দু’টি মতের মধ্যে অধিক সহীহ্ মতানুসারে এ ধরনের বসা মুস্তাহাব এবং তা ছেড়ে দিলে’ কোন দোষ নেই। (জলসায়ে ইস্তেরাহা) এ পড়ার জন্য (নির্দিষ্ট) কোন দো’আ নেই। অতঃপর দ্বিতীয় রাক’আতের জন্য যদি সহজ হয় তাহলে উভয় হাঁটুতে ভর করে উঠে দাঁড়াবে।

তার প্রতি কষ্ট হলে উভয় হাত মাটিতে ভর করে দাঁড়াবে। এরপর (প্রথমে) সূরা ফাতিহা’ এবং কুরআনের অন্য কোন সহজ সূরা পড়বে। প্রথম রাকআতে যেভাবে করেছে ঠিক সে ভাবেই দ্বিতীয় রাকআতেও করবে। মুকতাদী তার ইমামের পূর্বে কোন কাজ করা জায়েয নেই।

কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে এ রকম করা থেকে সতর্ক করেছেন। ইমামের সাথে সাথে (একই সঙ্গে) করা মাকরূহ। সুন্নাত হলো যে, মুকতাদীর প্রতিটি কাজ কোন শিথিলতা না করে ইমামের আওয়াজ শেষ হওয়ার সাথে হবে। এ সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-

إنما جعل الإمام ليؤتم به فلا تختلفوا عليه؛ فإذا كبر فكبروا؛ وإذا ركع فأركعوا؛ وإذا قال سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فقولوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ؛ وإذا سجد فاسجدوا .

متفق عليه]

অর্থ: (ইমাম এই জন্যই নির্ধারণ করা হয়, যাতে তাকে অনুসরণ করা হয়, তার প্রতি তোমরা ইখতেলাফ করবে না। সুতরাং ইমাম যখন আল্লাহু আকবার বলবে তোমরাও “আল্লাহু আকবার” বলবে এবং যখন তিনি রুকু করবেন তোমরাও রুকু করবে এবং তিনি যখন “সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলবেন তখন তোমরা “রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ” বলবে আর ইমাম যখন সিজদাহ করবেন তোমরাও সিজদাহ করবে।) [বুখারী ও মুসলিম]

১৩. প্রথম বৈঠক

নামায যদি দু’রাআত বিশিষ্ট হয় যেমন- ফজর, জুমআ ও ঈদের নামায, তা’হলে দ্বিতীয় সিজদাহ থেকে মাথা উঠিয়ে ডান পা খাড়া করে বাম পায়ের উপর বসবে। ডান হাত ডান উরুর উপর রেখে শাহাদাত বা তর্জনী আঙ্গুলি ছাড়া সমস্ত আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ করে দো’আ ও আল্লাহর নাম উল্লেখ করার সময় শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা নাড়িয়ে তাওহীদের ইশারাহ্ করবে। 

যদি ডান হাতের কনিষ্ঠা ও অনামিকা বন্ধ রেখে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি মধ্যমাঙ্গুলির সাথে মিলিয়ে গোলাকার করে শাহাদাত বা তর্জনী দ্বারা ইশারা করে তবে তা ভাল। কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু’ধরনের বর্ণনাই প্রমাণিত। উত্তম হলো যে, কখনও এভাবে এবং কখনও ওভাবে করা। এবং বাম হাত বাম উরু ও হাঁটুর উপর রাখবে। অতঃপর এই বৈঠকে তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পড়বে।

তাশাহহুদ বা আত্তাহিয়্যতু

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى

عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ ، أَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنْ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

উচ্চারণ: (আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লাহি ওয়াস্ সালাওয়া-তু ওয়াত্ তাইয়্যিবা-তু আস্ সালা-মু ‘আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকাতুহু, আস্ সালামু ‘আলাইনা- ওয়া আলা- ‘ইবাদিল্লা-হিস্ সা-লেহী-ন। আশহাদু আল লা- ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহু- ওয়া রাসূলুহ্।) 

অর্থ: (যাবতীয় ইবাদত, মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক সমস্তই আল্লাহ জন্য। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্ বান্দাহ ও তাঁর রাসূল।)

অতঃপর [দরূদ] বলবে

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা- মুহাম্মাদিউ ওয়া’আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন, কামা- সল্লাইতা ‘আলা- ইব্রা-হী-মা ওয়া আলা- আ-লি ইব্রা-হী-মা ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ। ওয়া বা- রিক ‘আলা মুহাম্মাদিউঁ ওয়া’আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা আলা- ইব্রা-হী-মা ওয়া’আলা- আ-লি-ইব্রা-হী-মা ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ।

অর্থ : হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবগের উপর রহমত বর্ষণ কর। যেমন তুমি ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবগের উপর রহমত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত।

এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবগের উপর বরকত নাযিল কর, যেমন তুমি ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর নাযিল করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরাবান্বিত।

অতঃপর নিম্নের দো’আটি পড়বেঃ এতে আল্লাহর নিকট চারটি ভয়াবহ বস্তু থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ

الدجال.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী- আ’ঊযুবিকা মিন আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া মিন আযা-বিল ক্বাবি, ওয়া মিন ফিত্নাতিল্ মাহ্ইয়া- ওয়ালমামা-তি ওয়া মিন ফিত্নাতিল মাসী-হিদ্দাজ্জা-ল। অর্থ : আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় কামনা করি জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফেত্না থেকে।

এরপর দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গল কামনা করে নিজের পছন্দমত যে কোন দো’আ করবে। ব্যক্তি যদি তার পিতা-

মাতা ও অন্যান্য মুসলমানের জন্য দো’আ করে তাতে কোন দোষ নেই। দো’আ করার বিষয়ে ফরয অথবা নফল সালাতে কোনই পার্থক্য নেই। কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের কথায় ব্যাপকতা রয়েছে, ইবনে মাসউদের হাদীসে যখন তিনি তাশাহহুদ শিক্ষাদিচ্ছিলেন তখন বলেছিলেন-

ثُمَّ لِيَتَخَيَّرُ مِنَ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فَيُدْعُوا.

অর্থ : (অতঃপর তার কাছে যে দো’আ পছন্দনীয়, তা নির্বাচন করে দো’আ করবে।)

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ) ثُمَّ يَتَخَيْرٌ مِنَ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ )

অর্থ: অতঃপর যা ইচ্ছা চেয়ে দো’আ করতে পারে। এই দো’আগুলি যেন বান্দাহর দুনিয়া ও আখেরাতের সমস্ত বিষয়কে শামিল

করে। অতঃপর (নামাযী) তার ডান দিকে (তাকিয়ে( السلام عليكم 

ورحمة الله আস্সালা-মু ‘আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্।

অর্থ: তোমাদের উপর শান্তি ও আল্লাহ্ রহমত বর্ষিত হোক এবং বাম দিকে (তাকিয়ে) (আস্সালা-মু ‘আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্) বলে ছালাম ফিরাবে বা সালাত সমাপ্ত করবে।

১৪. তিন বা চার রাকা’আত বিশিষ্ট নামাযে

নামায যদি তিন রাকা’আত বিশিষ্ট হয় যেমন, মাগরিবের নামায অথবা চার রাকা’আত বিশিষ্ট যেমন, জোহর, আছর ও এশার নামায, তাহলে পূর্বোল্লেখিত (তাশাহহুদ) পড়বে এবং এর সাথে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদও পাঠ করা যাবে।

অতঃপর (আল্লাহু আকবার) বলে হাঁটুতে ভর করে (সোজা হয়ে) দাঁড়িয়ে উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে পূর্বের ন্যায় বুকের উপর রাখবে এবং শুধু সূরা ফাতিহা পড়বে। যদি কেউ জোহর ও আসরের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকা’আতে কখনও সূরা ফাতিহার পর অতিরিক্ত অন্য কোন সূরা পড়ে ফেলে তবে কোন বাধা নেই।

কেননা, এ বিষয়ে আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণিত আছে। প্রথম তাশাহহুদে যদি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠ করা ছেড়েদেয় এতেও কোন ক্ষতি নেই।

কারণ প্রথম বৈঠকে দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব নয়; বরং মুস্তাহাব। অতঃপর মাগরিবের নামাযের তৃতীয় রাকা’আত এবং জোহর, আসর ও এশার নামাযের চতুর্থ রাকাআতের পর তাশাহহুদ পড়বে এবং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠ করবে আর আল্লাহ্ কাছে জাহান্নামের আযাব, কবরের আযাব, জীবিত ও মৃত্যুর ফেৎনা এবং মাসীহে দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং বেশি বেশি দো’আ করবে।

নামাযের শেষ বৈঠকে এবং এর পরবর্তী সময়ে সুন্নাতী কিছু দো’আ

আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম অধিক সময় নিম্নের দো’আটি পাঠ করতেন।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا

عَذَابَ النَّارِ.

উচ্চারণ : রব্বানা- আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া- হাসানাতান, ওয়া ফিল আখেরাতি হাসানাতান, ওয়াক্বিনা- আযা-বান্না-র।

অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন এবং আখেরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।

যেমন তা দু’রাকা’আত বিশিষ্ট নামাযে উল্লেখ হয়েছে। অতঃপর যখন শেষ বৈঠকের জন্য বসবে তখন এ বৈঠকে তাওয়াররুক করে বসবে অর্থাৎ, ডান পা খাড়া করে এবং বাম পা ডান পায়ের নিম্ন দিয়ে বের করে রাখবে। পাছা যমীনের উপর রাখবে।

এ বিষয়ে আবু হুমাইদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদীস বর্ণিত-হয়েছে। এরপর সব শেষে (আস্সালামু ‘আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্) বলে প্রথমে ডান দিকে এবং পরে বাম দিকে সালাম ফিরাবে। সালামের পর ৩ বার أستغفر الله )আস্তাগফিরুল্লাহ্) পড়বে (অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি) তারপর নিম্নের দো’আগুলো ১ বার করে পড়বে:

اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ السَّلامُ تَبَارَكْتَ

يَاذَا الْجَلالِ وَالْإِكْرَامِ.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতাস্ সালা-মু, ওয়ামিনকাস্ সালা-মু, তাবা-রাকতা ইয়া-যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।

অর্থ : হে আল্লাহ্, তুমি প্রশান্তি দাতা, আর তোমার কাছেই শান্তি, তুমি বরকতময়, হে মর্যাদাবান এবং কল্যাণময়।

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ

الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرُ اللَّهُمَّ لأَمَانِعَ لِمَا

أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ

الْجَدُّ : لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ ؛ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ

إِلَّا إِيَّاهُ؛ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ ؛ لا

উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু- লা-শারী-

إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ. কালাহু, লাহুল মুল্ক, ওয়ালাহুল হাম্দু, ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়িদ্যিন ক্বাদী-র। আল্লা-হুম্মা লা- মা-নি’আ লিমা- আ’তাইতা, ওয়ালা- মু’তিয়া লিমা- মানা’তা, ওয়ালা ইয়ানফা’উ যালজাদ্দি মিনকালজাদ্দু।

লা- হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়ালা- না’বুদু ইল্লা- ইয়্যা-হু, লাহুন্নি’মাতু ওয়ালাহুল ফাদ্বলু, ওয়ালাহুস্ ছানা-উল হাসানু, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিসী-না লাহুদ্দী-না ওয়ালাউ কারিহাল কা-ফিরূন।

অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাশালী। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করেছো, তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা নিষিদ্ধ করেছো তা প্রদানকারীও কেউ নেই। এবং কোন সম্মানী ব্যক্তি তার উচ্চ মর্যাদা দ্বারা তোমার দরবারে উপকৃত হতে পারবে না।

তোমার শক্তি ছাড়া অন্য কোন শক্তি নেই। আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বুদ নেই। আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি, নেয়ামতসমূহ তাঁরই, অনুগ্রহও তাঁর এবং উত্তম প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ্ ছাড়া কোন (সত্য) মা’বূদ নেই। আমরা তাঁর দেয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্যই একনিষ্ঠ ভাবে পালন করি। যদিও কাফেরদের নিকট তা অপছন্দনীয়।)

سبحان الله )সোবহানাল্লাহ্) (আল্লাহ্ মহাপবিত্র) ৩৩ বার, الحمد لله )আল-হামদুলিল্লাহ্) (সকল প্রশংসা আল্লাহর( ৩৩ বার এবং الله أكبر )আল্লাহু আকবার) (আল্লাহ্ সবচেয়ে বড়) ৩৩ বার পড়বে আর একশত পূর্ণ করতে নিম্নের দো’আটি পড়বে।

) لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لِأَشَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ ( وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ : (লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারী- কালাহু, লাহুল মুল্ক ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইইন ক্বাদী-র।)

অর্থ: (আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সব কিছুর উপর ক্ষমতাশালী।)

অতঃপর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে

اللهُ لا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي

يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاء وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَؤُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ

الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ . [سورة البقرة: ]

উচ্চারণ : (আল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা- হুওয়া, আল হাইয়্যুল কাইয়্যু-ম, লা-তা’খুযুহু ছিনাতুউঁ- ওয়ালা- নাউ-ম, লাহু- মা- ফিচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা- ফিল ‘আরদি; মান্ যাল্লাযী- ইয়াশফা’উ ‘ইন্দাহু- ইল্লা- বিইয নিহি, ই’য়ালামু মা- বাইনা আইদী-হিম ওয়ামা- খালফাহুম, ওয়ালা- ইউহী-তৃ-না ‘বিশাইয়িম্ মিন ‘ইলমিহী, ইল্লা- বিমা-শা-আ, ওয়াছি’আ কুরছিয়্যুহুচ্ছামা-ওয়া-তি, ওয়াল ‘আরদা, ওয়ালা- ইয়াউ-দুহু হিফজুহুমা- ওয়াহুয়াল ‘আলিয়্যুল আযী-ম।)

অর্থ: আল্লাহ্; তিনি ছাড়া অন্য কোন (সত্য) মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক, তাঁকে তন্দ্রা এবং নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর। কে আছে এমন যে, তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত আছেন।

যতটুকু তিনি ইচ্ছে করেন, ততটুকু ছাড়া তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসী সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে রক্ষণা-বেক্ষণ করা তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি মহান শ্রেষ্ঠ। [সূরা আল-বাকারাহঃ ২৫৫]

প্রত্যেক নামাযের পর আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাছ পড়বে। মাগরিব ও ফজর নামাযের পরে এই সূরা তিনটি (ইখলাস, ফালাক এবং নাছ) তিনবার করে পুনরাবৃত্তি করা মুস্তাহাব।

কারণ, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ সম্পর্কে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। একই ভাবে পূর্ববর্তী দো’আগুলির সাথে ফজর ও মাগরিবের নামাযের পর নিম্নের দো’আটি বৃদ্ধি করে দশ বার করে পাঠ করা মুস্তাহাব। কারণ, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ সম্পর্কে (হাদীসে) প্রমাণিত আছে!

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لأَشَرِيكَ لَهُ ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ

الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَيْكُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ .

উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াহদাহু- লা-শারী- কালাহু, লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু, ইওহ য়ী- ওয়া ইউমী-তু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শায়্যিদিন ক্বাদী-র।

অর্থ : আল্লাহ্ ছাড়া (সত্য) কোন মা’বুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সকল বাদশাহী ও সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু দান করেন। তিনিই সব কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।

অতঃপর ইমাম হলে তিনবার (আস্তাগফিরুল্লুলাহ) এবং (আল্লা-হুম্মা আন্তাস্ সালা-মু, ওয়ামিনকাস্ সালা-মু, তাবা- রাকতা ইয়া- যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।) বলে মুকতাদীদের দিকে ফিরে মুখোমুখী হয়ে বসবে। অতঃপর পূর্বোল্লেখিত দো’আগুলি পড়বে।

এ বিষয়ে অনেক হাদীস • বর্ণিত হয়েছে, এর মধ্য থেকে সহীহ মুসলিমে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা কর্তৃক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে। এই সমস্ত আযকার বা দো’আ পাঠ করা সুন্নাত; ফরয নয়।

প্রত্যেক মুসলমান নারী এবং পুরুষের জন্যে জোহর নামযের পূর্বে ৪ রাকা’আত এবং পরে ২ রাকা’আত, মাগরিবের নামাযের পর ২ রাকা’আত, এশার নামাযের পর ২ রাকা’আত এবং ফজরের নামযের পূর্বে ২ রাকা’আত। এই মোট ১২ রাকা’আত নামায পড়া মুস্তাহাব। 

এই ১২ রাকা’আত নামাযকে ‘সুনানে রাওয়াতিব’ বলা হয়। কারণ, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত রাকা’আতগুলি মুকীম অবস্থায় নিয়মিত যত্ন সহকারে আদায় করতেন। আর সফরের অবস্থায় ফজরের সুন্নাত ও (এশা পরবর্তী) বিতর ব্যতীত অন্যান্য রাকা’আতগুলি ছেড়ে দিতেন।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম সফর এবং মুকীম অবস্থায় উক্ত ফজরের সুন্নাত ও বিতর নিয়মিত আদায় করতেন। তাই আমাদের জন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামের আমলই হলো উত্তম আদর্শ। আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেন-

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

[الأحزاب:]

অর্থ: নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম) এর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। [সূরা আল- আহযাবঃ ২১]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেনঃ صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي .. [رواه البخاري]

অর্থ: তোমরা সেভাবে নামায আদায় কর, যে ভাবে আমাকে নামায আদায় করতে দেখ। [বুখারী]

এই সমস্ত সুনানে রাওয়াতিব এবং বিতরের নামায নিজ ঘরে পড়াই উত্তম। যদি কেউ তা মসজিদে পড়ে তাতে কোন দোষ নেই। এ সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-

أَفْضَلُ صَلَاةِ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلَّا الْمَكُوبَةُ [متفق

على صحته

অর্থ: ফরয নামায ব্যতীত মানুষের অন্যান্য নামায (নিজ) ঘরে পড়াই উত্তম। [বুখারী ও মুসলিম, হাদীসটি সহীহ]

এই সমস্ত রাকা’আতগুলি (দৈনিক ১২ রাকা’আত নামায) নিয়মিত যত্ন সহকারে আদায় করা হলো জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম। সহীহ মুসলিমে উম্মে হাবীবাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلَّهِ كُلِّ يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشَرَةَ

رَكْعَةً تَطَرُعًا إِلَّا بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ . » [مسلم]

অর্থ: যে কোন মুসলিম ব্যক্তিই আল্লাহ্ জন্য (খালেস নিয়্যতে) দিবা-রাত্রে ১২ রাকা’আত নফল নামায পড়বে, আল্লাহ্ অবশ্যই তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানাবেন।

আমরা যা পূর্বে উল্লেলখ করেছি ইমাম তিরমিযী তার বর্ণনায় অনুরূপ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যদি কেউ আসরের নামাযের পূর্বে ৪ রাকা’আত এবং মাগরিবের নামাযের পূর্বে ২ রাকা’আত এবং এশার নামাযের পূর্বে ২ রাকা’আত পড়ে, তা হলে তা উত্তম হবে। কেননা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

رَحِمَ اللَّهُ امْرَأَ صَلَّى أَرْبَعًا قَبْلَ الْعَصْرِ.

অর্থ : আল্লাহ্ ঐ ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে আসরের (ফরয) নামাযের পূর্বে চার রাকা’আত (নফল) নামায পড়ে থাকে। হাদীসটি ইমাম আহমাদ, আবুদাউদ, তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন এবং ইবনে খুযায়মাহ সহীহ বলেছেন।

রাসূলুলুলাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন –

بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلَاةٌ ؛ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلَاةٌ ؛ ثُمَّ

قَالَ فِي الثَّالِثَةِ لِمَنْ شَاءَ [بخاري]

অর্থ: প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে (নফল) নামায, প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে (নফল) নামায। তৃতীয় বার বলেন (যে ব্যক্তি পড়ার ইচ্ছে করে।) [বুখারী]

যদি কেউ জোহরের পূর্বে ৪ রাকা’আত এবং পরে ৪ রাকা’আত পড়ে তবে তা ভাল। এর প্রমাণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়াসাল্লামে হাদীস; তিনি বলেন-

مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَأَرْبعٍ بَعْدَهَا حَرَّمَهُ

اللهُ تَعَالَى عَلَى النَّارِ [أحمد, صحيح]

অর্থ: যে ব্যক্তি জোহরের পূর্বে ৪ রাকা’আত ও পরে ৪ রাকা’আত (সুন্নাত নামায) এর প্রতি যত্নবান থাকে, আল্লাহ্ তা’আলা তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন। [ইমাম আহমাদ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আহলে সুনান সহীহ সূত্রে উম্মে হাবীবাহ থেকে উল্লেলখ করেছেন]

অর্থাৎ সুনানে রাতেবার নামাযে জোহরের পরে ২ রাকা’আত বৃদ্ধি করে পড়বে। কারণ জোহরের পূর্বে ৪ রাকা’আত এবং পরে ২ রাকা’আত পড়া সুনানে রাতেবাহ। অতএব জোহরের পরে ২ রাকা’আত বৃদ্ধি করলে উম্মে হাবীবাহর হাদীসের প্রতি আমল হবে। আল্লাহই তাওফীকদাতা।

দরূদ ও ছালাম বর্ষিত হোক, আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সাহাবাগণের প্রতি এবং কেয়ামত পর্যন্ত যারা তাঁর ইত্তেবা’ বা অনুসরণ করবেন তাদের প্রতিও।

পবিত্রতার বিবরণ

ইসলামী শরিয়তের হুকুম আহকামগুলি পারনের জন্য পবিত্রতা অর্জন করা অপরিহার্য। পবিত্রতা অর্জনের জন্য তিন রকমের ব্যবস্থা ইসলামে অনুমোদিত। তা হল গোসল, অজু এবং তায়াম্মুম।

গোসল

আরবী শব্দ। এর অর্থ ধৌত করা। আর শরীয়তের পরিভাষায় যে সকল কারনে গোসল ফরজ হয় সেই কারণসমূহ হতে কোন একটি কারণ পাওয়া গেলে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গড়গড়ার সহিত কুলি করে, নাকে পানি দিয়ে, সর্বাঙ্গ ধৌত করাকে গোসল বলা হয়।

গোসল ফরজ হওয়ার কারণ চারটি

১। উত্তেজনা সহকারে বীর্যপাত হলে, তা স্বপ্নদোষের মাধ্যমে হোক বা স্ত্রীসহবাসের দ্বারা হোক।

২। পুরুষের লিঙ্গমুন্ড স্ত্রর যোনীর ভিতর প্রবেশ করলে তার দ্বারা বীর্যপাত হোক বা না হোক।

৩। মহিলাদের হায়েজ অর্থাৎ মাসিক বন্ধ হলে।

৪। নিফাসের রক্ত বন্ধ হলে। অর্থাৎ সন্তান জন্ম গ্রহণের পর যে রক্ত জারী হয় তা বন্ধ হলে।

ফরজ গোসলের ফরজ তিনটি

১। গড়গড়ার সাথে কুলি করা, রোযাদার হলে গড়গড়া করতে হবে না। কারণ, তাতে গলার মধ্যে পানি প্রবেশ করে রোযা ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

২। দু’নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌঁছে দেয়া, এটাও রোযাদার হলে করবে না। এতেও রোযা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৩। সমস্ত শরীর ভালভাবে দৌত করা, যদি পুকুর, খাল কিংবা নদীতে গোসল করে, তবে তাতে সরাসরি নেমে শরীর মর্দন করবে, আর উপরে বালতি বা কলসের পানি দ্বারা গোসল করলে ভালভাবে গায়ে পানি ঢেলে গোসল করবে। মনে রাখতে হবে, এর যে কোন একটি বাদ পড়লে যেমন কুলি করা, নাকে পানি দেয়া এবং সমস্ত শরীরের মধ্যে একটি পশম বা তার সম পরিমাণ স্থান শুকনো থাকলে ফরয গোসল আদায় হবে না; অপবিত্র থেকে যাবে।

ফরজ গোসলের সুন্নত পাঁচটি

১। দু’হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া।

২। গোসল করার পূর্বে নারী হোক অথবা পুরুষ হোক, তাদের লজ্জাস্থান ভালভাবে ধৌত করে ফেলা।

৩। শরীরের অন্যত্র কোন প্রকার নাপাক লেগে থাকলে তা পূর্বেই ধুয়ে নিতে হবে।

৪। পা ধোঁত করা ছাড়া অবিকল নামাযের ওযূর ন্যায় ওযু করে নেয়া।

৫। সমস্ত শরীরে ভালভাবে পানি বইয়ে দেয়া। কলস বা বালতির পানি দ্বারা দাঁড়িয়ে গোসল করলে গায়ে তিনবার পানি দেয়ার পর উক্ত স্থান হতে সরে পা তিনবার ধৌত করতে হবে। আর পুকুর কিংবা নদীতে গোসল করলে গায়ে তিনবার পানি দেয়ার বদলে তিনটি ডুব দিলেই সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।

গোসলের নিয়ত

نَوَيْتُ الْغُسْلَ لِرَفْعِ الْجَنَابَةِ.

উচ্চারণ: নাওয়াইতুল গুছলা লিরাফয়িল জানাবাতি।

অর্থ: আমি নাপাকি দূর করিবার জন্য গোসল করিতিছি।

ওযুর বিবরণ

নামায এবং অন্যান্য ইবাদতের জন্য দেহের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গসমূহ পবিত্র করিবার উদ্দেশ্যে হাত, পা, মুখমন্ডল ধৌত এবং মাথা মাসেহ করাকে অজু বলে। কুরআন পাঠ করা এবং নামায আদায়ের জন্য ওযু করা ফরজ।

ওযুর ফরজ চারটি

১। সমস্ত মুখমন্ডল কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া হইতে থুতনী পর্যন্ত, এক কর্ণের লতি হইতে অন্য কর্ণের লতি পর্যন্ত ধৌত করা।

২। উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।

৩। চারভাগের একভাগ মাথা মাসেহ করা। (ঘন দাঁড়ি থাকিলে আঙ্গুলী দ্বারা খেলাল করা ফরজ)।

৪। উভয় পা টাখনু গিরা সহকারে ধৌত করা।

ওযুর সুন্নাত

১। নিয়ত করা। ২। বিসমিল্লাহ্ বলে ওযু আরম্ভ করা। ৩। হাতের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। ৪। উভয় হাত কবজি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা। ৫। মিসওয়াক করা। ৬। তিনবার কুলি করা। ৭। তিনবার নাকে পানি দেয়া। ৮। সম্পূর্ণ মুখ- মন্ডল তিনবার ধৌত করা। ৯। উভয় হাত কনুইসহ তিনবার • ধৌত করা। ১০। সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা। ১১। উভয় কান একবার মাসেহ করা। ১২। টাখনু সহ উভয় পা তিনবার ধৌত করা। ১৩। পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। ১৪। এক অঙ্গ শুকানোর পূর্বেই অন্য অঙ্গ ধৌত করা। ১৫। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওযূর কাজগুলো সম্পূর্ণ করা।

ওযুর নিয়ত ও ওযূর নিয়ম

উচ্চারণ : নাওয়াতু আন আতাওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদিাসি ওয়া ইন্তিবাহাতা লিছছালাতি ওয়া কাত্বাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা।

অর্থাৎ: আমি ওযুর নিয়ত করছি যে, নাপাকী দূর করার জন্যে বিশুদ্ধ রূপে নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহ তা’য়ালালর নৈকট্য লাভের জন্য।

এভাবে নিয়ত পাঠ করার পর সর্বপথম ডান হাত ও পরবর্তীতে বাম হাতের কবজি পর্যন্ত যথাক্রমে তিনবার ধৌত করবে। অতঃপর সম্পূর্ণ মুখ-মন্ডল অর্থাৎ ললাটের উপরিভাগের চুল উঠার স্থান হতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হতে অপর কানের লতি পর্যন্ত ভালভাবে তিনবার। 

ধৌত করবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন মুখ-মন্ডলের কোন অংশ শুকনো না থাকে। যাদের দাঁড়ি অত্যন্ত ঘন তাদের দাঁড়ি খিলাল করে ভিজিয়ে নিতে হবে। এরপর উভয় হাতের কনিষ্ঠ, অনামিকা ও মধ্যমা-এ তিনটি আঙ্গুলি একত্র করে মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করবে এবং সাথে 

সাথে দু’হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুলিদ্বয় কানে ঢুকিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা কানের পৃষ্ঠদেশ মাসেহ করবে আর উভয় হাতের পিঠ দ্বারা ঘাড় মাসেহ করবে। এরপর ডান পা প্রথমে তিনবার টাখনু অর্থাৎ ছোট গিরাসহ ধৌত করবে এরপর বাম পাও তিনবার ধৌত করবে।

ওযু ভঙ্গের কারণ ৭টি

১। পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়া কোন কিছু বাহির হওয়া (সামান্য হইলেও)।

২। মুখ ভরিয়া বমি হওয়া।

৩। শরীরের ক্ষতস্থান হইতে রক্ত, পুঁজ বা পানি বাহির হইয়া গড়াইয়া পড়া।

৪। থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।

৫। চিৎ বা কাৎ হইয়া হেলান দিয়া ঘুমানো।

৬। পাগল, মাতাল ও অচেতন হওয়া।

৭। নামাযে উচ্চস্বরে হাসা।

তায়াম্মুমের বিবরণ

যে যে কারণে তায়াম্মুম বৈধ: ইসলাম হচ্ছে মানবতার

জন্য সহজ সরল শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে রয়েছে মানবতার মৌলিক শিক্ষা। কেউ বিপদে পড়লে তা থেকে পরিত্রাণের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা রয়েছে এ জীবন ব্যবস্থায়। কারো কোন সমস্যা থাকলে, তার সমাধান রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ও সহজভাবে।

এমন সমাধান এতে দেয়া আছে, যাতে কোন লোকের সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা নেই। তায়াম্মুম ও সে ধরনের একটি সমস্যার সমাধান। যার বিধান স্বয়ং আল্লাহ্ তা’য়ালাই তাঁর বান্দার জন্য প্রবর্তন করেছেন।

“যদি তোমরা অসুস্থ হও অথবা সফরে থাকে, কিংবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ পায়খানা প্রস্রাবের কাজ সেরে আসে, অথবা স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়, এরপর তারা ওযু গোসলের জন্য কোন পানি না পায়, তবে তারা যেন পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নেয়।” (সূরা নিসা)

উপরোক্ত আয়াতের আলোকে যে সমস্ত কারণে তায়াম্মুম বৈধ নিম্নে তা আলোচনা করা হলো-

১। কোথাও পানি পাওয়া না গেলে। ২। পানি ব্যবহারে রোগ বেড়ে যওয়ার সম্ভাবনা থাকলে। ৩। হামলার আশংকা থাকলে। ৪। ওযু করতে গেলে নামাযের ওয়াক্ত ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে। ৫। পানি দ্বারা ওযু করতে গেলে খাওয়ার পানি সংকট দেখা দিলে।

৬। ভয়ানক কোন হিংস্র জন্তু পানির নিকটে থাকায় পানি ব্যবহারে অপারগ হলে। ৭। যদি পানি ক্রয় করতে হয়। কিন্তু ক্রয় মূল্য না থাকে। ৮। মুসাফির অবস্থায় পানির খোঁজ না পেলে। ৯। ইন্দিরা অথবা কূপ হতে পানি উঠানোর ব্যবস্থা না থাকলে। ১০। পানি ব্যবহারে জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকলে। এসকল কারণে তায়াম্মুম করা বৈধ।

তায়াম্মুমের ফরয সমূহ

তায়াম্মুমের মোট তিনটি ফরয। যেমন- ১। নিয়ত করা। ২। সমস্ত মুখ-মন্ডল মাসেহ করা। ৩। উভয় হাত কনুইসহ মাসেহ করা।

তায়াম্মুমের সুন্নতসমূহ

তায়াম্মুমের সাতটি সুন্নত। যেমন- ১। বিসমিল্লাহ বলে তায়াম্মুম শুরু করা। ২। উভয় হাতের তালু পবিত্র মাটিতে মারা। ৩। মাটিতে রাখা অবস্থায় আঙ্গুলগুলো ফাঁকা রাখা। ৪। মাটি হতে হাত উঠানোর পর উভয় হাত ঝেড়ে ফেলা। ৫। প্রথমে মুখমন্ডল ও পরে হাত মাসেহ করা। ৬। দু’অঙ্গ মাসেহ্ করার মধ্যখানে বিলম্ব না করা। ৭। তারতীব বজায় রাখ।

তায়াম্মুম করার নিয়ম

প্রথমে নিয়ত করে মাটি বা মাটি জাতীয় কোন বস্তুতে উভয় হাতমেরে তারপর হাত উঠিয়ে হাত দু’টি ঝেড়ে ফেলে উহা দ্বারা সমস্ত মুখমন্ডল মাসেহ করতে হবে। পুনরায় পূর্বের মত হাত মেরে উভয় হাত কনুইসহ ভালভাবে মাসেহ করতে হবে। তায়াম্মুমের সাধারণ তিনটি ফরয কাজ আদায় করলেই তায়াম্মুম হয়ে যায়।

তায়াম্মুমের নিয়ত

উচ্চারণ : নাওয়াতুআন আতাইয়াম্মামা লিরাইফ’ল হাদাছি ওল জানাবাতি ওয়াছতিবাহাতাল্লিছ ছালাতি ওয়া তাক্বাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা।

অর্থাৎ : আমি এ জন্য তায়াম্মুমের নিয়ত করছি যে, যেন ছোট-বড় সকল ধরনের অপবিত্রতা দূর করে বিশুদ্ধ অবস্থায় নামায আদায় করে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সমর্থ হই।

আজানের বিবরণ

নামায আদায়ের জন্য প্রতি ওয়াক্তে কতকগুলি নির্দিষ্ট কালাম দ্বারা উচ্চস্বরে লোকজনকে আহ্বান করাকে আযান বলে। আযান দাতাকে মুয়াজ্জিন বলে। ওয়াক্তিয়া নামায এবং জুমআর নামাযের জন্য আযান দেওয়া সুন্নত।

আযানের নিয়ম

আযান দাতা মিনারায় কিংবা উঁচু স্থানে দাঁড়াইয়া ক্বেবলারোখ হইয়া হস্তদ্বয়ের শাহাদাত আঙ্গুলী কর্ণের মধ্যে রাখিয়া উচ্চ আওয়াজে আযানের কালামগুলি বলিবে। হাইয়্যা আলাছ ছালাহ বলিবার সময় মুখমন্ডল ডানদিকে এবং হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলিবার সময় বাম দিকে ফিরাইবে কিন্তু ছিনা ফিরাইবে না।

আযানের দোয়া

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ اتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثُهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي

وَعَدْتَهُ إِنَّكَ لا تُخْلِفُ الْمِيْعَادِ.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ্‌ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াচ্ছালাতিল ক্বায়িমাতি আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদ্বীলাতা ওয়াব্‌য়াছহু মাক্বামাম্ মাহমুদানিল্লাযী ওয়া আ’দতাহু ইন্নাকা লা-তুলিফুল মি’আদ।

অর্থ: হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আপনি এই পরিপূর্ণ দাওয়াত ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের প্রতিপালক। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দান করুন প্রকৃত মর্যাদা ও সম্মান এবং তাকে উন্নীত করুন প্রশংসিত স্থানে, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাকে দিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।

আযানের জওয়াব

মুয়াজ্জিন আযানের ভিতরে যেই কালাম বলিবে শ্রোতারা

উহাই বলিবে, কিন্তু “হাইয়্যা আলাছ ছালাহ” এবং “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলিবার পরে “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা-বিল্লাহিল আ’লিয়ি‍্যল আ’যীম” বলিবে। 

অর্থ: আল্লাহর সাহায্য ছাড়া অন্যের সাধ্য-শক্তি নাই। এবং ফজরের আযানে “আচ্ছালাতু খাইরুম মিনান নাওম”

বলিবার পরে শ্রোতারা বলিকে “ছাদ্দাক্কাতা ওয়া বারারতা।”

অর্থ: তুমি সত্য বলিয়াছ এবং উত্তম বলিয়াছ।

ইক্বামতের বিবরণ

প্রত্যহ ফরজ নামায ও জুমআর নামাযের পূর্বে পুরুষের জন্য এক্বামত বলা সুন্নত, জামাআতের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। ইক্বামতে আযানের শব্দগুলিই বলিতে হয়, তবে হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলিবার পরে “ক্বাদক্বামাতিচ্ছালাহ”.. দুইবার বলিতে হইবে।

নামাযের ফরজসমূহ

নামাযের বাহিরে এবং ভিতরে ১৩ ফরজ

নামাজের বাহিরে ৭ ফরজ

১। শরীর পাক। ২। কাপড় পাক। ৩। নামাযের জায়গা পাক। ৪। সতর ঢাকা। ৫। ক্বিবলামুখী হওয়া। ৬। ওয়াক্ত মত নামায পড়া। ৭। নামাযের নিয়ত করা।

নামাযের ভিতরে ৬ ফরজ

১। তাকবীরে তাহরীমাহ্ বলা। ২। দাঁড়াইয়া নামায পড়া। ৩। ক্বিরাআত পড়া। ৪। রুকু করা। ৫। দুই সিজদা করা। ৬। আখিরী বৈঠক।

নামাযের ওয়াজিব ১৪টি

১। আলহামদু শরীফ (সুরায়ে ফাহিতা) পুরা পড়া। ২। সূরা ফাতিহার সঙ্গে সূরা মিলানো। ৩। রুকু-সিজদায় দেরী করা। ৪। রুকু হইতে সোজা হইয়া খাড়া হওয়া। ৫। দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসা। 

৬। দরমিয়ানী বৈঠক (দুই রাকাআতের পর বসা)। ৭। উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া। ৮। ইমামের জন্য ক্বিরআত আস্তে এবং জোরে পড়া। ৯। বিতিরের নামাযে দু’আয়ে কুনূত পড়া। ১০। দুই ঈদের

41

নামাযে ছয় ছয় তাকবীর বলা। ১১। ফরজ নামাযের প্রথম দুই রাক’আতকে কিরাআতের জন্য নির্ধারিত করা। ১২। প্রত্যেক রাক’আতের ফরজগুলির তারতীব ঠিক রাখা। ১৩। প্রত্যেক রাকা’আতের ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা। ১৪। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্ (সালাম) বলিয়া নামায শেষ করা।

মাসআলা

* সূর্যোদ্বয়ের সময়, দুপুর বেলা মাথার উপর সূর্য থাকার সময় এবং সূর্যাস্তের সময়ে কোন প্রকার নামাযই পড়া জায়েয নাই। তবে বিশেষ কারণে ঐ দিনের আসর নামায সূর্যাস্তের সময় পড়া যায় কিন্তু মাকরূহ হইবে।

* নামাযে যদি উক্ত ফরজসমূহের মধ্য হতে কোনটি ছুটে যায় তাহলে ঐ নামায বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় ঐ নামায পড়তে হবে।

* নামাজের ওয়াজিব সমূহের মধ্য হতে ভুলবশতঃ কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে অথবা কোন ওয়াজিব তার নির্ধারিত জায়গা থেকে সরে গেলে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়।

নামাযের সুন্নতসমূহ

নামাযে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ ১২টি: ১। দুই হাত উঠানো। ২। দুই হাত বাঁধা। ৩। ছানা পড়া। ৪। আউজুবিল্লাহ পড়া। ৫। বিসমিল্লাহ্ পড়া। ৬। আলহামদুর শেষে আমীন বলা। ৭। প্রত্যেক উঠা বসায় আল্লাহু আকবর বলা। ৮। রুকুর তাসবীহ্ পড়া। ৯। রুকু হইতে উঠিবার সময় সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ বলা। ১০। সিজদার তাছবীহ্ পড়া। ১১। দুরূদ শরীফ পড়া। ১২। দু’আয়ে মাছুরাহ পড়া।

যে ভুলে নামায হয় না শুদ্ধভাবে নামায আদায়ের জন্য নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো:

১। উভয় হাতের কব্জিসহ ধোয়া

২। নাকে পানি দেওয়া

৩। সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করা

৪। উভয় হাত কনুইসহ ধোয়া 

৫। মাথা মাসেহ করা

৬। উভয় পা টাখনুসহ ধোয়া

নামায আদায় করার সঠিক নিয়ম

ফরজ নামাজগুলি দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ। সর্বপ্রথম সর্বাঙ্গ সোজা রেখে কিবলামুখী হয়ে দন্ডায়মান হওয়া।

দাঁড়ানো অবস্থায় উভয় পা সমান্তরাল অর্থাৎ দু পায়ের মাঝখানে সমান ফাঁকা রাখা কমপক্ষে চার আংগুল, কিন্তু মেয়েলোকের জন্য দুই পা মিশিয়ে দাঁড়ানো।

তারপর উভয় হাতের তালু কিবলার দিকে রেখে কানের লতি বরাবর উঠানো সুন্নত, অতঃপর তাকবীরে তাহারীমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা ফরজ। এবং নাভীর ঠিক নীচে হাত বাধা, হাত বাধার সময় বামহাত নীচে থাকবে আর ডান হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠাংগুল দ্বারা বাম হাতের কব্জি ধরবে আর বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের বাকী তিন আংগুল থাকবে। কিন্তু মেয়েলোকগণ বুকের উপর হাত বাধবে এবং হালকা ভাবে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখবে।

দাঁড়ানো অবস্থায় চোখের দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা। তারপর ছানা পড়া সুন্নত, আউজুবিল্লা পড়া সুন্নত, বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত, সুরা ফাতিহা পুরো পড়া ওয়াজিব। ফাহিতার শেষে আমীন বলা সুন্নত। তারপর সুরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত। সুরা মিলানো ওয়াজিব।

রুকুতে যাওয়ার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা সুন্নত। রুকু করা ফরজ। রুকুতে পিঠ, কোমর ও মাথা এক বরাবর রাখা এবং উভয় হাত দিয়ে উভয় হাটু ধরা সে সময় আঙ্গুলগুলি ফাঁক করে রাখা। মেয়েলোকগণ সামান্য ঝুকে রুকু আদায় করবে।

রুকুতে কমপক্ষে তিন বার তাছবিহ ‘সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ পড়া সুন্নত, রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানো ওয়াজিব। দাড়ানোর সময় ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলা তারপর ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলা সুন্নত। রুকুতে চোখের দৃষ্টি দুই পায়ের মধ্যভাগে রাখা। তারপর দুই সিজদা করা ফরজ।

সিজদাতে যাওয়ার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা সুন্নত। সিজদা করার সময় প্রথমে মাটিতে হাটু লাগবে তারপর হাত, তার পর নাক পরে কপাল। সিজদাতে কপাল, নাক এবং উভয় পা মাটিতে লাগানো জরুরী এবং সিজদায় তিন বার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়া সুন্নত। 

সেজদা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি নাকের দিকে নিবন্ধ রাখা এবং হাতের আংগুল গুলি মিশিয়ে রাখা। পেট রান হইতে আলাদা রাখা ও কুনুই মাটি থেকে আলাদা থাকবে। সেজদা হতে উঠার সময় সর্বপ্রথম কপাল তারপর নাক তারপর হাত উঠবে।

সেজদায় মেয়েলোকগণ শরীর একেবারে মিশিয়ে সেজদা করবে।

প্রথম সিজদার পর সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। তার পর দ্বিতীয় সিজদা করা ফরজ। এইভাবে দুই রাকাত পূর্ণ হলে বসে আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করা ওয়াজিব। যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হয় তবে আত্তাহিয়্যাতুর পর দুরূদ শরীফ তার পর দোয়া মাসুরা পড়া সুন্নত।

বসা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি হাতের উপর রাখা এবং আঙ্গুলগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা ও বাম পায়ের উপর বসে ডান পা খাড়া রেখে আঙ্গুল গুলি ভাজ করে কিবলামুখী করে রাখা।

মেয়েলোকগণ বসা অবস্থায় নিতম্বের উপর বসবে এবং উভয় পা ডান দিকে বের করে দেবে। তিন বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে আত্তাহিয়্যাতুর পর দাড়িয়ে বাকি রাকাতগুলি আদায় করবে। তারপর ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে প্রথম ডান দিকে পরে বাম

দিকে সালাম ফিরাবে। 

সালাম ফিরানোর সময় মুসল্লি এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে। সালাম ফিরানো ওয়াজিব।

তারপর দরূদ শরীফ ও ইস্তেগফার পাঠ করে মুনাজাত করবে। মুনাজাত করা নামাযের অংশ নয়।

১। পুরুষ লোকের সোজা হয়ে উভয় পা সমান্তরাল রেখে দাঁড়ানোর নিয়ম।

২। মেয়ে লোকের সোজা হয়ে উভয় পা মিশিয়ে দাঁড়ানোর নিয়ম।

৩। উভয় হাত কানের লতি পর্যন্ত উঠানো এবং উভয় হাতের তালু কিবলা মুখি রাখা।

৪। উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো।

৫। উভয় হাত নাভির ঠিক নিচে রেখে ডান হাতের বৃদ্ধা এবং কনিষ্ঠাংগুলি দ্বারা বাম হাতের কব্জি ধরে ডান হাতের মধ্যের তিন আঙ্গুল বাম হাতের পিঠের উপরে থাকবে।

৬। মেয়ে লোকগণ বুকের ‘উপর বাম হাত রেখে হালকা ভাবে ডান হাত দ্বারা ধরবে।

৭। রুকুর মধ্যে পিঠ, কোমর ও মাথা সমান রাখা এবং উভয় হাতের আঙ্গুলগুলি ফাঁকা করে উভয় হাটুকে ধরা।

৮। মেয়ে লোকগণ রুকুর মধ্যে সামান্য ঝুকে রুকু আদায় করবে।

৯। সেজাদাতে কপাল, নাক এবং উভয় পা মাটিতে লাগানো থাকবে ও উভয় হাতের আঙ্গুলগুলি পরস্পর মিলিত থাকবে এবং উভয় কুনুই মাটি থেকে আলাদা থাকবে। 

১০। কিন্তু মেয়েদের উভয় কুনুই মাটিতে লাগানো থাকবে।

১১। বসা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি হাতের উপর থাকবে এবং বাম পায়ের উপর বসে ডান পা খাড়া রেখে আঙ্গুল গুলি ভাজ করে কিবলা মুখি করে রাখবে।

১২। মেয়ে লোকগণ নিতম্বের উপর বসবে এবং উভয় পা ডান দিকে বের করে দিবে।

১৩। সালাম ফিরানোর সময় ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ’ বলে চোখের দৃষ্টি ডান হাতের উপর রেখে ঘাড় ফিরানো শুরু করবে এবং কাধের উপর দৃষ্টি রেখে শেষ করবে। ঘাড় সোজা করে বাম দিকেও একই ভাবে সালাম ফিরাবে। মেয়ে লোকগণও একই নিয়মে সালাম ফিরাবে।

নামায ভঙ্গের কারণসমূহ

নামায ভঙ্গের কারণ ১৯টি: ১। নামাযে অশুদ্ধ কিরাত পাঠ করা। ২। নামাযের ভিতর কথা বলা। ৩। কোন লোককে সালাম দেওয়া। ৪। সালামের উত্তর দেওয়া। ৫। উহঃ-আহ্ঃ শব্দ করা। ৬। বিনা ওজরে কাশি দেওয়া। ৭। আমলে কাছীর করা। ৮। বিপদে কি বেদনায় শব্দ করিয়া কাঁদা। ৯। তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় সতর খুলিয়া থাকা। 

১০। মুক্তাদী ব্যতীত অপর ব্যক্তির লোকমা লওয়া। ১১। সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া। ১২। নাপাক জায়গায় সিজদা করা। ১৩। কিবলার দিক হইতে সিনা ঘুরিয়া যাওয়া। ১৪। নামাযে কুরআন শরীফ দেখিয়া পড়া। ১৫। নামাযে শব্দ করিয়া হাসা। 

১৬। নামাযে দুনিয়াবী কোন কিছু প্রার্থনা করা। ১৭। হাঁচির উত্তর দেওয়া। ১৮। নামাযে খাওয়া ও পান করা। ১৯। ইমামের আগে মুক্তাদী খাড়া হওয়া। (ইমাম হইতে মুক্তাদী আগাইয়া দাঁড়ানো।)

জায়নামাযে দাঁড়িয়ে পড়ার দো’আ

إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاتِ وَالْأَرْضَ

حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ )

উচ্চারণ : ইন্নি-ওয়াজ্জাহ-তু ওয়াহিয়া লিল্লাযী-

ফাত্মারাচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বা হানি-ফাঁও ওয়ামা-আনা মিনাল মুশরিকী-ন।

অর্থ: নিশ্চয়ই আমি তার দিকে মুখ ফিরালাম, যিনি আসমান • জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই।

তাকবীরে তাহরীমা

اللهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণ: আল্লা-হু আব্বার।

অর্থ: আল্লাহ্ মহান। এই তাকবীরের মাধ্যমেই নামায শুরু করা হয়।

ছানা- (ছুবহা-নাকাল্লাহুম্মা)

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى

جَدُّكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ .

উচ্চারণ: সুবহা-না-কাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবা- রাকাসমুকা ওয়া তা’আ-লা-জাদ্দুকা ওয়ালা-ইলা-হা গাইরুক।

অর্থ: হে আল্লাহ্! সমস্ত প্রশংসা সহকারে তোমার পবিত্রতা প্রকাশ করছি। তোমার নাম খুবই মহিমান্বিত এবং তোমার মাহাত্ম্য খুবই উচ্চ; আর তুমি ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ বা উপাস্য নেই। সানা পড়া শেষ হলে তা’আওউজ পড়বে।

তা’আওউজ- (আউ’যুবিল্লাহ)

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

উচ্চারণ : আউ-যুবিল্লা-হি মিনাশশাইত্বা-নিররাজী-ম।

অর্থ : আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট বিতাড়িত শয়তান হতে আশ্রয় চাচ্ছি।

তাসমিয়া- (বিস্মিল্লা-হ)

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহী-ম।

অর্থ: পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

রুকুর তাসবীহ্

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمَ .

উচ্চারণ: সুবহা-না রাব্বিয়াল ‘আযী-ম। 

অর্থ: আমার মহান প্রভু পবিত্র।

রুকু হতে দাড়ানোর তাসবীহ্

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ.

উচ্চারণ: সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ্।

অর্থ: আল্লাহ্ তা’আলা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শ্রবণ করেন। (ইমাম বলবে) 

মুক্তাদিগণ শুধু

رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

উচ্চারণ: রাব্বানা-লাকাল হামদ্।

অর্থ : হে প্রভু! তোমারই জন্য সকল প্রশংসা। আর মুনফারিদ অর্থাৎ একাকী নামায আদায় কারীগণ উভয় তাসবীই বলবে।

সিজদার তাসবীহ্

سُبْحَانَ رَبِّي الأَعلى.

উচ্চারণ: সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা।

অর্থ: আমার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভু (আল্লাহ্) পবিত্র।

নামাযের নিয়ত, দোয়া ও সূরাসমূহ

কিভাবে নামাযের নিয়ত করতে হয় নামাযের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়ত, মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব। নিম্নে নামাজের আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও নিয়ত দেয়া হল।

ফজরের নামায

ফজরর নামায মোট চার রাকাত। যথা: দুরাকাত সুন্নত ও দুরাকাত ফরয।

প্রথমে দুরাকাত সুন্নত এবং ‘পরে দুরাকাত ফরয আদায় করতে হয়।

ফজরের দুরাকাত সুন্নতের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكَعَتَيْ صَلوةِ الفَجْرِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ ..

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই সালাতিল ফাজরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

ফজরের দুরাকআত ফরযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكَعَتَيْ صَلُوةٍ الْفَجْرِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ

الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ.

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই সালাতিল ফাজরি ফারযিল্লাহি মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের নামায

যোহরের নামায মোট দশ রাকাত আদায় করতে হয়। যেমন- প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, এরপর চার রাকাত ফরয – এবং এরপর দুরাকাত সুন্নত। নিম্নে উচ্চারণ ও অর্থসহ নিয়্যতসমূহ লেখা হল।

যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الظُّهْرِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিয যুহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে যোহরের ৪ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের চার রাকাত ফরয নামাযের নিয়্যত .

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الظُّهْرِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিয যুহরি ফারযিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে যোহরের ৪ রাকাত ফরজ নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের দু’রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়্যত:

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكَعَتَيْ صَلوةِ الظُّهْرِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى

جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকআতাই সালাতিয যুহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে যোহরের ২ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

আছরের নামায

প্রকাশ থাকে যে, আছরের চার রাকাত ফরয নামাযের পূর্বে চার রাকাত সুন্নতে যাওয়ায়েদ (অতিরিক্ত) নামায আছে। কোন লোক যদি এ চার রাকাত নামায আদায় করে, তাহলে অনেক ছাওয়াব পাবে। আর যদি কোন লোক আদায় না করে তাহলে কোন পাপ হবে না। তবে যেহেতু ছাওয়াব আছে সেহেতু আদায় করা উত্তম।

আছরের চার রাকাত সুন্নাত নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الْعَصْرِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিল আছরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে আছরের ৪ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

আছরের চার রাকাত ফরয নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الْعَصْرِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিল আছরি ফারযিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে আছরের ৪ রাকাত ফরয নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

মাগরিবের নামায

মাগরিবের নামায মোট পাঁচ রাকাত। যেমন- তিন রাকাত ফরয আর দুরাকাত সুন্নত।

মাগরিবের তিন রাকাত ফরয নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى ثَلَثَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الْمَغْرِبِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাক’আতি সালাতিল মাগরিবি ফারযিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলায়: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে মাগরিবে ৩ রাকাত ফরজ নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার। মাগরিবের দু’রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكَعَتَيْ صَلوةِ الْمَغْرِبِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলায়: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে মাগরিবে ২ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার নামায

এশার নামায মোট দশ রাকাত। যেমন- চার রাকাত সুন্নত, চার রাকাত ফরয ও দুরাকাত সুন্নত।

এশার নামাযের পূর্বেও আছরের নামাযের ন্যায় চার রাকাত সুন্নাতে যায়েদাহ নামায আদায় করলে অসংখ্য ছাওয়াব পাওয়া যায়। আর না পড়লে কোন গুনাহ্ হবে না, তবে সময় থাকলে পড়ে নেয়া ভাল।

প্রকাশ থাকে যে, বেতের নামায যদিও পৃথক সময়ের নামায, কিন্তু এ নামায মানুষ সাধারনত এশার নামাযের সাথেই আদায় করে থাকে বলে এ তিন রাকাত বেতের নামাযকে এশার নামাযের পরে উল্লেখ করা হল।

এশার চার রাকাত সুন্নাত নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الْعِشَاءِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا

إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিল ইশায়ি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে এশার ৪ রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার চার রাকাত ফরয নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الْعِشَاءِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى

جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি সালাতিল ইশায়ি ফারযিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে এশার ৪ রাকাত ফরজ নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার দু’রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلوةِ الْعِشَاءِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকআতাই সালাতিল ইশায়ি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে এশার ২ রাকাত সুন্নাত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

বেতের নামাযের সময় ও নিয়ম

বিভিন্ন ইমাম সাহেবগণের মতে বেতেরের নামায এশার নামাযের পর হতে সুবহি সাদিকের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত থাকে। কিন্তু আমাদের ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর মতে এশার বেতের নামাযের একই সময়। (দুররুল মুখতার)

বেতেরের নামায নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আদায় করতে হয়। কিন্তু যারা শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে জাগ্রত থাকার অভ্যাস করেছেন, কেবল ঐ সব লোকেরাই শেষ রাত তাহাজ্জুদের পর বেতেরের নামায আদায় করতে পারেন।

কেননা রাসূলে কারীম (সা.) এ নিয়মেই আদায় করতেন। আর যাদের শেষ রাতে ঘুম হতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস নেই, তারা অবশ্যই এশার নামাযের সাথেই আদায় করবে।

বেতেরের তিন রাকাত নামাযের ন্যিত করে তাকবীরে তাহরীমা বেঁধে যথারীতি দুরাক’আতের পর বসে তাশাহুদ পাঠ করে দাঁড়িয়ে তৃতীয় রাক’আতে সূরা-কিরাআত পাঠ করে পুনরায় তাহরীমা বেঁধে দোয়ায়ে কুনূত পাঠ করে যথারীতি রুকু-সিজদা ও শেষ বেঠকের পর সালাম ফিরিয়ে নামায সমাপ্ত করবে।

বেতের তিন রাকাত বেতের নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى ثَلثَ رَكْعَاتِ صَلوةِ الوِتْرِ وَاجِبُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাক’আতি সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার। 

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিতিরের ৩ রাকাত ওয়াজিব নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

দোয়া মাসূরা

اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي

إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمِ .

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী-জালামতু নাফছী-জুলমান কাছী-রাও ওয়ালা-ইয়াগফিরুয যুনূ-ব্‌, ইল্লা-আন্তা ফাগফিরলী- মাগফিরাতাম মিন ‘ইন্দিকা ওয়ারহামনী-ইন্নাকা আন্তাল গাফু-রুর রাহী-ম।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমি আমার নিজের প্রতি খুব বেশী অত্যাচার করেছি। আমার এহেন গর্হিত কাজের ক্ষমা করার শক্তি তুমি ছাড়া আর কারোই নেই। অতএব তুমি আমার অপরাধ সমূহ মার্জনা করে দাও এবং আমার প্রতি দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি অত্যাধিক মার্জনা কারী ও অসীম অনুগ্রহকারী।

দোয়ায়ে কুনুত

বিতর নামাযে তৃতীয় রাকা’আতে রুকূর আগে এ দোআ পড়া ওয়াজিব।

اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلْ عَلَيْكَ وَنُثْنِي عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكُ وَلا تَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّي وَنَسْجُدُ وَإِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوا رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقُ .

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্না-নাস্তাঈ-নুকা ওয়া নাস্তাগফিরুকা ওয়া নু’মিনু বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা-নাকফুরুকা ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু মাইয়াফজুরুকা আল্লা-হুম্মা ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লী-ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ-ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু- রাহমাতাকা ওয়া নাখশা- আযা-বাকা ইন্না আযাবাকা বিল্ কুফফা-রি মুলহিক্ব।

অর্থ : হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমরা তোমারই নিকট সাহায্য • চাই, তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই উপর বিশ্বাস রাখি, তোমারই উপর ভরসা করি। আর তোমারই গুণগান গাই। আমরা তোমারই শোকর করি আর তোমার নিয়ামত অস্বীকার করি না। যে তোমার অবাধ্য, তার নিকট থেকে দূরে থাকি, তাকে বর্জন করি।

হে আল্লাহ্! আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি। তোমারই জন্য নামায পড়ি। তোমারই উদ্দেশ্যে সিজদা করি। আমরা তোমারই দিকে ছুটে চলি। তোমারই আদেশের অপেক্ষায় দাড়াই। তোমারই রহমতের আশা করি। তোমারই শাস্তিকে ভয় পাই। নিশ্চয়ই তোমার শাস্তি কাফিরদের উপর নেমে আসবে।

মুনাজাত

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا

عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : রাব্বানা আ-তিনা ফিদদুনইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযা-বাননার।

অর্থ : হে আমাদের রব! তুমি দুনিয়াতেও আমাদেরকে কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও। আর জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদেরকে রক্ষা কর। (সূরা বাকারা- ২০১)

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا

لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ )

উচ্চারণ : রাব্বানা যলাম না আন ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়াতার হামনা লানাকুনান্না মিনাল খা-ছিরীন।

অর্থ : হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর এবং আমাদের প্রতি রহম না কর, তাহলে অবশ্যই আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। (সূরা আ’রাফ- ২৩)

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ )

উচ্চারণ: রাব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলীম।

অর্থ: হে আমাদের রব! আমদের এ কাজ তুমি কবুল কর, নিশ্চয় তুমি সবকিছুর শুনতে পাও এবং সবকিছু জান। (সূরা বাকারা- ১২৭)

رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي.

উচ্চারণ: রাব্বি ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলী।

অর্থ: হে আমার প্রতিপালক। আমি আমার নিজের উপর জুলুম করেছি। সুতরাং আমাকে ক্ষমা কর। (সূরা কাসাস- ১৬)

رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا

উচ্চারণ: রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগিরা।

অর্থ : হে আমার রব! তাদের (মাতা-পিতা) প্রতি রহম কর, যেমন করে তারা বাল্যকালে আমাকে লালন-পালন করেছেন। (সূরা বনী ইসরাঈল: ২৪)

২০ লক্ষ নেকীর দুআ

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ أَحَدًا ضَمَدًا لَمْ يَلِدْ

وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوا أَحَدٌ.

উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারী- কালাহু-আহাদান্ সমাদান্ লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম্ ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু-কুফুওয়ান আহাদ।

মাসনূন দু’আ

* মসজিদে প্রবেশ করার সময়:

اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ .

‘আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওযাবা রাহমাতিকা’।

* মসজিদ থেকে বের হবার সময়:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ . 

‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিকা’।

* ঘুমানোর সময় :

اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيِي .

‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া’।

* পেশাব পায়খানায় যাবার সময়:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ .

‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িসি’।

* পেশাব পায়খানা থেকে বের হয়ে:

غُفْرَانَكَ الْحَمْدُ اللَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنِّي الْأَذَى وَعَفَانِي

‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আযহাবা আন্নিল আযা ওয়া আফানী’।

* খাওয়ার শুরুতে:

بِسْمِ اللهِ وَعَلَى بَرَكَةِ اللهِ .

‘বিসমিল্লাহি ওয়া আলা বারাকাতিল্লাহ’।

* মৃত্যুর সময় :

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ .

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’।

* রোগ মুক্তির দু’আ :

اسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا .

‘আস্তাগ ফিরুল্লাহা ইন্নাহু কানা গাফফারা’।

* মৃত্যু সংবাদ শুনে :

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ.

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’।

* বিপদাপদের সময়:

لا إِلَهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ .

‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন’।

* যেকোন যানবাহনের আরোহণের দু’আ:

بِسْمِ اللَّهَ مَجْرِهَا وَمُرْسُهَا إِنَّ رَبِّي لَغَفُورُ الرَّحِيمُ –

‘বিসমিল্লাহি মাজারেহা ওয়ামুরসাহা ইন্না রাব্বি লাগাফুরুর রাহীম’।

কবরে লাশ নামানোর সময় সকলেই পাঠ করবে-

بِسْمِ اللَّهِ وَعَلَى مِلَّةِ رِسُولِ اللَّهِ .

বিসমিল্লাহি ওয়া আ’লা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ্।

অর্থ : আল্লাহ তায়ালার নামে এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রচারিত ধর্মের উপর।

নামাজে পঠিত কয়েকটি সূরা

নামাজ আদায়ের জন্য কিরাত পাঠ করা ফরজ। নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহের মধ্যে প্রথম কারণ হল অশুদ্ধ কিরাত পড়া। নামাজে সূরা ফাতিহার পর কমপক্ষে বড় একটি আয়াত অথবা ছোট তিন আয়াত বা এর সমপরিমান সূরা পাঠ করতে হয়।

চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে এবং চার রাকাত বিশিষ্ট সুন্নত নামাজের চার রাকাতে সূরা মিলাতে হয়। তাই কমপক্ষে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরী হল ৫টি সূরা বিশুদ্ধভাবে শিক্ষা করা।

সূরা ফাতিহা

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1) الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (۲) الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ (۳) مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (4) إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (٥) اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (6) صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ

عَلَيْهِمْ (۷) غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ )

উচ্চারণ : ১। আল্লহামদু লিল্লা-হি রব্বিল আ’-লামীন। ২। আর রাহমা-নির রাহী-ম। ৩। মা-লিকি ইয়াওমি দ্দীন। ৪। ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়াইয়্যা-কা নাস তাঈ’-ন। ৫। ইহদিনাছ ছিরা-ত্বোয়াল মুসতাক্বী-ম। ৬। ছিরা-ত্বোয়াল্লাযীনা আন আ’মতা আ’লাইহিম। ৭। গইরিল মাঞ্জু-বি আ’লাইহিম ওয়ালাদ্বদ্বোয়া-ল্লীন। (আ-মীন)

অর্থ: (১) পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। (২) যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। (৩) যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। (৪) যিনি বিচার দিনের মালিক।

(৫) আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি। (৬) আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, (৭) সে সমস্ত লোকের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল • হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

সূরা ইনশিরাহ্

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (۱) أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ (۲) وَوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ (۳) الَّذِي أَنْقَضَ ظَهْرَكَ (٤) وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ (٥) فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا (٦) إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا (٧) فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ (۸) وَإِلَى رَبِّكَ فَأَرْغَبُ )

উচ্চারণ: ১। আলাম্ নাম্রাহ্ লাকা ছোয়াদ্রাকা। ২। অওয়াদ্বোয়া’না- ‘আন্কা য়িফ্রাকা। ৩। ল্লাযী- আক্বাদ্বোয়া জোয়াকা। ৪। অরাফা’না-লাকা যিক্রক্। ৫। ফাইন্না মা’আল্ উ’স্ট্রি ইয়ুস্রান্। ৬। ইন্না মা’আল্ উ’স্ট্রি ইয়ুস্র-। ৭। ফাইযা-ফারাস্তা ফান্‌ছোয়া। ৮। অইলা-রব্বিকা ফার্।

অর্থ: (১) আমি কি আপনার বক্ষ উন্মুক্ত করে দেইনি? (২) আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা, (৩) যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ, (৪) আমি আপনার আলোচনা সমুচ্চ করেছি। (৫) নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে, (৬) নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। (৭) অতএব, যখন অবসর পান পরিশ্রম করুন, (৮) এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন।

সূরা তীন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(۱) وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ (۲) وَطُورِ سِينِينَ (۳) وَهَذَا الْبَلَدِ الْأَمِينِ ( لَقَدْ خَلَقْنَا الا إِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ (٥) ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ (٦) إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ (۷) فَمَا يُكَذِّبُكَ بَعْدُ بِالدِّينِ (۸) أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ )

অর্থ : ১। অত্তীনি অয্যাইতুনি। ২। অত্মরি সীনীনা। ৩। অহা-যাল্ বালাদিল্ আমীন। ৪। লাকুদ্‌ খলাকু নাল্ ইন্সা-না ফী আহসানি তাক্বওয়ীম্। ৫। ছুম্মা রদান্না-হু আস্ফালা সা- ফিলীন। ৬। ইল্লাল্লাযীনা আ-মানু অ’আমিলুছ ছোয়া-লিহা-তি ফালাহুম্ আজ্বরুন্ গইরু মানূন্। ৭। ফামা- ইয়ুকাযয্যিবুকা বা’দু বিদ্দীন। ৮। আলাইসাল্লা-হু বিআত্কামিল্ হা-কিমীন্।

অর্থ: (১) আর কসম আঞ্জীর ও যাইতুনের, (২) আর শপথ সিনাইয়ে অবস্থিত তূরের (৩) আর এ নিরাপদ শহরের শপথ (৪) নিশ্চয়ই আমি মানুষকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছি। (৫) অতঃপর আমি তাকে ফিরিয়ে দেই হীন থেকে হীনতম অবস্থায় ।

(৬) যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তারা ব্যতীত, তাদের জন্য রয়েছে এমন শুভফল যা কখনও নিঃশেষ হবার নয়। (৭) এরপর কোন বস্তু কর্মফল দিবস সম্পর্কে তোমাকে অবিশ্বাসী করছে? (৮) আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?

সূরা ক্বাদর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1) إِنَّا أَنْزَلْتُهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ (۲) وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ (۳) لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ (٤) تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّنْ كُلِّ أَمْرٍ (٥)

سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ .

উচ্চারণ: ১। ইন্না- আন্যান্না-হু ফী লাইলাতিল্ কুদ্র। ২। অমা- আদ্র-কা মা-লাইলাতুল্ কুদ্র। ৩। লাইলাতুল্ কুদ্রি খাইরুম্ মিন্ আল্ফি শাহ্। ৪। তানায্যালুল্ মালা- য়িকাতু অরূহু ফীহা- বিইনি রব্বিহিম্ মিন্ কুল্লি আম্। ৫। সালা-মুন্ হিয়া হাত্তা- মাতুলাই’ল্ ফাজ্ব র্।

অর্থ: (১) আমি একে নাযিল করেছি শবে কদরে, (২) শবে কদর সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? (৩) শবে কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। (৪) এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে, (৫) এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

সূরা তাকা-সুর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1) الْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ (۲) حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ (۳) كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ (٤) ثُمَّ ) كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ (٥) كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِينِ (1) لَتَرَوُنَّ الْجَحِيمَ (۷) ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِينِ (۸) ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ

النَّعِيمِ

উচ্চারণ: ১। আল্হা-কুমু ত্তাকা-ছুরু ২। হাত্তা-যুমুল্ মাক্বা-বির্। ৩। কাল্লা-সাওফা তা’লামূনা ৪। ছুম্মা কাল্লা- সাওফা তা’লামূন্। ৫। কাল্লা-লাও তা’লামূনা ই’ল্ল্লাল্ ইয়াক্বীন। ৬। লাতারায়ুন্নাল্ জ্বাহীমা ৭। ছুম্মা লাতারায়ুন্নাহা- ‘আইনাল্ ইয়াক্বীন। ৮। ছুম্মা লাতুয়ালুন্না ইয়াওমায়িযিন্ ‘আনিন্নাঈ’ম্।

অর্থ: (১) প্রাচুর্যের লালসা তোমাদের গাফেল রাখে, (২) এমনকি তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও। (৩) এটা কখনও উচিত নয়, তোমরা সত্বরই জেনে নেবে, (৪) অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়, তোমরা সত্বরই জেনে নেবে;

(৫) কখনই নয়, যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে; (৬) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে, (৭) অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য-প্রত্যয়ে, (৮) এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

সূরা আছর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (۱) وَالْعَصْرِ (۲) إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ (۳) إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا

بِالصَّبْرِه

উচ্চারণ : ১। অল্ ‘আছরি ২। ইন্নাল্ ইন্সা-না লাফী খুস্ক্রিন্ ৩। ইল্লাল্লাযীনা আ-মানু ওয়া ‘আমিলুছ ছোয়া -লিহা- তি অতাওয়া- ছোয়াও বিল্ হাক্ব কি অতাওয়া-ছোয়াওবিছ ছোয়ারি।

অর্থ: (১) কসম যুগের, (২) নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, (৩) কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকিদ করে সত্যের এবং তাকিদ করে সবরের।

সূরা ফীল

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(۱) أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ (۲) أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ (۳) وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ (٤) تَرْمِيهِمْ بِحِجَارَةٍ مِّنْ سِجِيلٍ (٥) فَجَعَلَهُمْ

كَعَصْفٍ مَّا كُولٍ .

উচ্চারণ : ১। আলাম্ তারা কাইফা ফা’আলা রব্বুকা বিআহা-বিল্ ফীল্। ২। আলাম্ ইয়াজ্ব ‘আল্ কাইদাহুম্ ফী তাল্লীলিও ৩। ওয়া আসালা ‘আলাইহিম্ ত্বোয়াইরন্ আবা- বীলা- ৪। তারমীহিম্ বিহিজ্বা-রতিম্ মিন্ সিজ্জীলিন্ ৫। ফাজ্বা’আলাহুম্ কা’আফিম্ মা’কূল্।

অর্থ : (১) আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? (২) তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? (৩) তিনি তাদের ওপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি, (৪) যারা তাদের ওপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল; (৫) অতঃপর তিনি তাদের ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।

সূরা কুরাইশ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ (۱) لِإِيلافِ قُرَيْشٍ (۲) ايلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشَّتَاءِ وَالصَّيْفِ (۳) فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ (٤) الَّذِي

أَطْعَمَهُمْ مِّنْ جُمْعٍ وَآمَنَهُمْ مِّنْ خَوْفٍ )

উচ্চারণ : ১। লিঈলা-ফি কুরইশিন। ২। ঈলা-ফিহিম্ রিহ্লাতাশ্ শিতা- য়ি অছছোয়াইফ্। ৩। ফাইয়া’বুদূ রব্বাহা-যাল্ বাইতি ৪। ল্লাযী আত্ব’আমাহুম্ মিন্ জ্ব ইঁও ওয়া আ-মানাহুম্ মিন্ খাওফ্।

অর্থ: (১) কোরায়শের আসক্তির কারণে, (২) আসক্তির কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের, (৩) অতএব

তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার, (৪) যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং যুদ্ধভীতি থেকে তাদের নিরাপদ করেছেন।

সূরা মাউন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ (۱) أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ (۲) فَذَلِكَ الَّذِي يَدُلُّ الْيَتِيمَ (۳) وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ (٤) فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ (٥) الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (٦) الَّذِينَ هُمْ يُرَاؤُونَ (۷) وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ )

উচ্চারণ : ১। আরয়াইতাল্লাযী- ইয়ুকাযয্যিবু বিদ্দীন। ২। ফাযা-লিকাল্লাযী ইয়াদু’উ’ল্ ইয়াতীমা ৩। অলা- ইয়াহুদ্বু ‘আলা-তোয়া’আ- মিল্ মিসকীন্। ৪। ফাওয়াইলুল্লিল্ মুছোয়াল্লীনা। ৫। ল্লাযীনাহুম্ ‘আন্ ছলা-তিহিম্ সা-হুন্। ৬। আল্লাযীনা হুম্ ইয়ুরা- য়ূনা ৭। অইয়াম্ না’ঊনাল্ মা-‘ঊন্‌।

অর্থ: (১) আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচার দিবসকে মিথ্যা বলে? (২) সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলাধাক্কা দেয়, (৩) এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না; (৪) অতএব, দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, (৫) যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর, (৬) তারা তা লোক দেখানোর জন্য করে, (৭) এবং নিত্যব্যবহার্য বস্তু অন্যকে দেয় না।

সূরা কাওসার

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1) إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ (۲) فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرُ

(۳) إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ

উচ্চারণ : ১। ইন্না- আ’ত্বোয়াইনা-কাল্ কাওছার্। ২। ফাছোয়াল্লি লিরব্বিকা ওয়ানহার্। ৩। ইন্না শা- নিয়াকা হুওয়াল্ আন্তার্।

অর্থ: (১) নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি। (২) অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন। (৩) যে আপনার শত্রু, সে-ই তো লেজকাটা, নির্বংশ।

সূরা কাফিরুন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (۱) قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ (۲) لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ (۳) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (٤) وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُمْ (٥) وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (٦) لَكُمْ

دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ .

উচ্চারণ: ১। কুল্ ইয়া- আইয়ুহাল্ কা-ফিরূনা। ২। লা- আ’বুদু মা তা’বুদূনা। ৩। অলা- আনুম্ ‘আ-বিদূনা মা

য় আ’বুদ্। ৪। অলা- আনা ‘আ-বিদুম্ মা-‘আবাততুম্। ৫। অলা- আনুম্ ‘আ-বিদূনা মা- আ’বুদ্। ৬। লাকুম্ দীনুকুম্ অলিয়াদীন।

অর্থ: (১) বলুন, হে কাফেরকুল, (২) আমি এবাদত করি না তোমরা যার এবাদত কর,

(৩) এবং তোমরাও এবাদতকারী নও যার এবাদত আমি করি, (৪) এবং আমি এবাদতকারী নই যার এবাদত তোমরা কর, (৫) তোমরা এবাদতকারী নও যার এবাদত আমি করি; (৬) তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

সূরা নাসর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (۱) إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ (۲) وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا (۳) فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ

وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا .

উচ্চারণ: ১। ইযা-জ্বা- য়া নারুল্লা-হি অল্‌ল্ফাহু ২। অরয়াইতান্না-সা ইয়াদুলূনা ফী দীনিল্ লা-হি আওয়া-জ্বা- । ৩। ফাসাব্বিহ্ বিহাম্মদ রব্বিকা অস্তাফি; ইন্নাহ্ কা- না তাওয়্যা-বা-।

অর্থ: (১) যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়, (২) এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন, (৩) তখন আপনি আপনার পালনকর্তার প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ তওবা কবুলকারী।

সূরা লাহাব

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(۱) تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ (۲) مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ (3) سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ (٤) وَامْرَأَتُه * حَمَّالَةَ الْحَطَبِ (٥) فِي جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّن مَّسَدٍ )

উচ্চারণ : ১। তাব্বাত্ ইয়াদা- আবী লাহাবিও অতাব্। ২। মা- আগ্‌গ্না-‘আন্‌হু মা-লুহু অমা-কাসাব্ ৩। সাইয়ালা- না-রন্ যা-তা লাহাবিও। ৪। অম্রয়াতুহ্; হাম্মা-লাতাল্ হাত্বোয়ার্। ৫। ফী জ্বীদিহা-হালুম্ মিম্ মাসাদ।

অর্থ : ১. আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও, ২. কোনো কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে; ৩. সত্বরই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে, ৪. এবং তার স্ত্রীও যে ইন্ধন বহন করে, ৫. তার গলদেশে খেজুরের রশি নিয়ে।

সূরা এখলাছ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (۱) قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (۲) اللَّهُ الصَّمَدُ (۳) لَمْ يَلِدُ وَلَمْ يُولَدْ (٤) وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ )

উচ্চারণ : ১। কুল্ হুওয়াল্লা-হু আহাদ। ২। আল্লা- হুচ্ছমাদ্। ৩। লাম্ ইয়ালিদ্ অলাম্ ইয়ূলা। ৪। অলাম্ ইয়া কুল্লাহ্ কুফুওয়ান আহাদ্।

অর্থ: (১) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, (২) আল্লাহ্ অমুখাপেক্ষী, (৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি, (৪) এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।

সূরা ফলাক

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ (۱) قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (۲) مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ (۳) وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ (٤) وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ (٥) وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ )

উচ্চারণ: ১। কুল্ আ’উযু বিরব্বিল্ ফালাক্বি। ২। মিন্ শারি মা-খলাক্ব। ৩। অমিন্ শারির গ-সিক্বিন্ ইযা- অক্বব্‌। ৪। অমিন্ শারি ন্নাফফা-ছা-তি ফিল্ ‘উদ্বুদ্। ৫। অমিন্ শাররি হা-সিদিন ইযা-হাসাদ।

অর্থ: ১. বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, ২. তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, ৩. অন্ধকার রাতের অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, ৪. গ্রন্থিতে ফুৎকার দিয়ে জাদুকারিণীদের অনিষ্ট থেকে, ৫. এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।

সূরা না-স

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(۱) قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ (۲) مَلِكِ النَّاسِ (۳) إِلَهِ النَّاسِ (٤) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (٥) الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ (٦) مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ )

উচ্চারণ: ১। কুল্ আ’উযু বিরব্বিন্না-স্। ২। মালিকিন্না- স্। ৩। ইলা-হি ন্না-স্ ৪। মিন্ শারিল ওয়াস্ ওয়া-সিল্ খান্না-সি ৫। ল্লাযী ইউওয়াস্তয়িসু ফী ছুদূরিন্না-স্। ৬। মিনাল জ্বিন্নাতি অন্না-স্।

অর্থ: (১) বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার, (২) মানুষের অধিপতির, (৩) মানুষের মা’বুদের, (৪) তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে, (৫) যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, (৬) জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

জুমার নামাযের বিবরণ

জুমার দিন যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুমআর নামায আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। ইহার ওয়াক্ত যোহরের ওয়াক্তের সময়। জুমআর দিন দুপুরে গোসল করিয়া পরিষ্কার পোষাক পরিধান করিয়া আযানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত হইয়া জুমআর নামায আদায় করিতে হয়।

জুমআর নামাযের রাকাআত সংখ্যা

চার রাকাত কাবলাল জুমআ, তারপর দুই খুতবা পাঠের পর দুই রাকাত ফরজ নামাজ তারপর চার রাকাত বা’দাল জুমআ আদায় করতে হয়। জুমআর দিন সময় থাকলে তাহিয়্যাতুল অজু, দুখলুল মসজিদ, সুন্নতুল ওয়াক্ত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। কিন্তু ঐ নামাজগুলি জুমআর নামাজের সাথে সম্পৃক্ত নয়।

চার রাকাত ক্বাবলাল জুমআর নিয়্যত

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকআতি ছালাতিল ক্বাবলাল জুমুআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ : আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া চার রাকআত ক্বাবলাল জুমআ সুন্নাত নামায আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

জুমার দুই রাকাত ফরজের নিয়ত

نَوَيْتُ أَنْ أُسْقِطَ عَنْ ذِمَّتِي فَرْضُ الظُّهْرِ بِأَدَاءِ رَكْعَتَى صَلَواةِ الْجُمُعَةِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى اقْتَدَيْتُ بِهَذَا الْإِمَامِ مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ

الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন উসক্বিতান আন যিম্মাতি ফারযায যুহরি বি আদাই রাকআতাই ছালাতিল জুমুআতি ফারযুল্লাহি তা’আলা (ইক্তা দাইতু বি হাজাল ইমাম) মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

*.অর্থ: সুন্নাতের সময় আরবা রাকআতি বাদাল জুমা ও ` কাবলাল জুমা যোগ করে নামায পড়বেন।

চার রাকআত বা’দাল জুমআর নিয়্যত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া তাআলা আরবায়া’ রাকাআতি ছালাতিল বা’দাল জুমআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেলামুখী হইয়া চার রাকাত – বা’দাল জুমআর সুন্নত নামায আরম্ভ করিলাম, আল্লাহু আকবার।

শবে বরাতের বিবরণ

রাসুলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন, যখন শাবানের পনেরতম রাত্রি আগমন করে তখন রাতে ইবাদত কর এবং পরের দিন রোযা রাখ। এই রাতে এই বৎসর যতগুলি সন্তান জন্মগ্রহণ করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়, আর এই বৎসর যত লোক মৃত্যু বরণ করবে তাও লিপিবদ্ধ করা হয়। এই রাতে বান্দাদের আমল আসমানে উঠানো হয় আর এই রাতেই মানুষের নির্ধারিত রিযিক অবতীর্ণ হয়।

এ রজনীর অসংখ্য ফজীলত বর্ণিত আছে, তাই এই রজনী, ইবাদত ও আমলের মধ্যে কাটানো উচিত, এই রজনীতে নিম্নোক্ত আমলগুলি করা সুন্নত। যথা: (ক) রাত জেগে নামাজ আদায় করা। (খ) • যিকির ও তেলাওয়াত করা। (গ) ইস্তেগফার করা। (ঘ) দোয়া করা। (ঙ) কবর জিয়ারত করা ইত্যাদি।

শবে বরাতে বিশেষ ধরনের নামাজের কোন শর্ত নাই। ইবাদতকারীর নিকট যেভাবে সহজ সেভাবে ইবাদত করবে। অর্থাৎ শুধু লাইলাতুল বরাতের নিয়ত করে অন্যান্য নফল নামাজের মতই এই নামাজ আদায় করবে।

লাইলাতুল বরাতের নামাজের নিয়্যত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া তাআলা আরবায়া’ রাকাআতি ছালাতিল লাইলাতিল বারাআতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

রোজার বিবরণ

আরবী বৎসরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত মাস রমজানুল মুবারক। এই মাসে দিনের বেলায় রোজা রাখা ফরজ। আর রাতের বেলায় তারাবীহ আদায় করা সুন্নত। এই মাসে নফল ফরজের সমান এবং প্রতিটি ফরজ ৭০টি ফরজের সমান। এই মাসে গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় এবং মুমিনের রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হয়।

রোজাদারের জন্য সমুদ্রের মৎস পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। রোযাদারের দোয়ার প্রতি ফেরেস্তারা আমীন, আমীন বলতে থাকে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও যৌন সম্ভোগ হইতে বিরত থাকাকে রোজা বলে।

রোযা তিন রকমের

১। ফরজ রোযা, ২। ওয়াজিব রোযা ও ৩। নফল রোযা। ফরজ রোযা হইতেছে, রমযানের রোযা এবং ক্বাজা ও কাফফারার রোযা, ওয়াজিব রোযা হইতেছে মানত রোযা, আর নফল রোযা হইতেছে ফরজ ওয়াজিব ব্যতীত সমস্ত রোযা। বৎসরের পাঁচ দিন রোযা হারাম। দুই ঈদের দুই দিন এবং কোরবানীর পরের তিনদিন।

রোযার নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أَصُومَ غَدَا مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضًا لَّكَ يَا اللَّهُ فَتَقَبَّلْ مِنِّي إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আসূমা গাদান মিন শাহরি • রামাদানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলিম।

অর্থ: রোজার জন্য মুখে নিয়ত বলা জরুরী নয়। বরং শুধু মনে মনে এ খেয়াল করে সংকল্প করবে যে, ‘আমি আজকে আল্লাহর নামে রোযা রাখার এবং কোন কিছু পানাহার থেকে বিরত থাকব। তাহলেই রোযা হয়ে যাবে।

ইফতারের দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ও’আলা রিযক্তিকা আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমীন।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমি তোমার জন্য রোযা রাখিয়াছি এবং তোমার দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করতেছি, তোমার কৃপায়, হে কৃপাময় ও করণাময়।

তারাবীহ নামাযের বিবরণ

রজমান মাসের প্রথম তারিখে চাঁদ দেখা হইতে শাওয়াল ‘মাসের চাঁদ দেখার পূর্ব রাত্রি পর্যন্ত প্রতিদিন এশার নামাজের পরে বিতর নামাজের পূর্বে দুই রাকাত করে মোট বিশ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। তারাবীহর নামাজা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

তারাবিহ নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلوةِ التَّرَاوِيحِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللهِ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ: নাওয়াইত আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই সালাতিত তারাবীহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’ বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ : আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া তারাবীহর দুই রাকাত সুন্নত নামায আরম্ভ করিতেছি, আল্লাহু আকবার। দুই রাকাতের পরে একবার দরূদ শরীফ পড়িতে হয়।

চার রাকাতের পরে এই দোয়া পড়িতে হয়

سُبْحَانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ ، سُبْحَانَ ذِي الْعِزَّةِ

وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوتِ )

سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِي لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوتُ أَبَدًا أَبَدًا .

سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّنَا وَرَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحُ .

উচ্চারণ : সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি. সুবহা না যিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ে ওয়াল জাবারুতি সুবহানাল মালিকিল হাইয়াল্লাযি লা-ইয়ানামু ওয়াল ইয়ামৃতু আবাদান্ আবাদান্ সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়াররূহ।

অর্থ: আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি, যিনি বাদশাহ্ ও ফিরিশতাদের প্রভু ও আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি। যিনি মান-ইজ্জতের মালিক এবং যিনি ভয়, ক্ষমতা, গৌরবের মালিক। আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি, যিনি চিরঞ্জিব, যাঁহার ঘুম নাই, নির্দোষ ও পবিত্র, আমি তাঁহারই গুণগান করিতেছি, যে আমাদের ও ফিরিশতাগণের এবং সকল আত্মাদের প্রভু।

তারাবীহ নামাযের মুনাজাত

اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَلْكَ الْجَنَّةَ وَنَعُوذُبِكَ مِنَ النَّارِ . يَا خَالِقَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ بِرَحْمَتِكَ يَا عَزِيزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيمُ يَا سَتَارُ يَارَحِيمُ يَا جَبَّارُ يَا خَالِقُ يَابَارُ اللَّهُمَّ أَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيرُ يَا مُجِيرُ يَا مُجِيرُ بِرَحْمَتِكَ يَا

أَرْحَمَ الرَّحِمِينَ )

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকুল জান্নাতি ওয়ান্নারি, বিরাহমাতিকা ইয়া আযিযু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহিমু ইয়া জব্বারু, ইয়া খালিকু, ইয়া বাররু, আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নার, ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু, ইয়া মুজুরু বি-রাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে জান্নাত চাই, তোমারই কৃপায় হে জান্নাত-জাহান্নাম পয়দাকারী, হে ক্ষমতাবান, হে ক্ষমাশীল। হে সর্ব সম্মানিত, হে দোষ গোপনকারী, হে মহব্বতকারী, হে শক্তিধর, হে সৃজনকারী, হে দয়াবান, হে আল্লাহ! আমাদের জাহান্নামের আগুন হইতে রক্ষা করুন। হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী। হে দয়াময়! তোমার দয়ায় কবুল কর।

লাইলাতুল কদরের বিবরণ

রমজানের প্রতিটি রাতই ইবাদাতের জন্য সুবর্ণ সময়। তারপরও আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহ করে এই মাসে শবে কদর নামে একটি মর্যাদাপূর্ণ বরকতময় রজনী দান করেছেন। এই রজনীতে কুরআন মজিদ অবতীর্ণ হয়। কুরআন মজিদে এই রাত্রিকে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে।

যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের নিয়তে ইবাদতে দন্ডায়মান হয় তার পিছনের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। শবে কদরের তারিখ অনির্দিষ্ট। তবে শেষ দশকের যে কোন বেজোড় রাত্রিতে শবে কদরকে তালাশ করার কথা হাদীসে বলা হয়েছে।

শবে বরাতের মত শবে কদরেও ইবাদতের কোন বিশেষ পদ্ধতি নেই। নফল ইবাদত অর্থাৎ নামাজ, জিকির, তেলাওয়াত, ইস্তেগফার, দরূদশরীফ ও দোয়ার আমল করবে।

শবে ক্বদর নামাযের নিয়্যত

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআ’লা রাকআ’তাই ছালাতিল লাইলাতিল ক্বাদরি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেলামুখী হইয়া শবে ক্বদরের দুই রাকআত নামায পড়িতেছি, আল্লাহু আকবার।

ঈদুল ফিতরের নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلوةِ الْعِيدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتَّةِ تَكْبِيرَاتِ وَاجِبُ الله تعَالَى اقْتَدَيْتُ بِهَذَا الْإِمَامِ مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللهِ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতি ঈদিল ফিতরি মা’আ সিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্ জিহান’ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহ আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেলামুখী হইয়া ছয় তাকবীরের সহিত দুই রাকাত ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব নামাজ এই ইমামের পিছনে আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

ঈদুল আযহার নামাযের নিয়ত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلوةِ الْعِيدِ الْأَضْحَى مَعَ سِتَّةِ تَكْبِيرَاتٍ وَاجِبِ اللَّهِ تَعَالَى اقْتَدَيْتُ بِهَذَا الْإِمَامِ مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতাই সালাতিল ঈদুল আযহা মাআ’সিত্তাতি তাকবিরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’আলা ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমামি, মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেলামুখী হইয়া ছয় তকবীরের সহিত ঈদুল আদ্বহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

কুরবানীর দু’আ

উচ্চারণ: ইন্না ছালাতি ও নুসুকি ও মাহইয়াইয়া ও মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকালাহু অবি যালিকা। উমিরতু ও আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।

ঈদের নামায আদায় করার পদ্ধতি

বৎসরে দুইবার ঈদের নামাজ আদায় করা হয় বিধায় এই নামাজ আদায়ে অনেকে অতিরিক্ত তাকবির গুলিতে ভুল করে বসে তাই এর নিযম পদ্ধতি উল্লেখ করা হল।

নিয়ত করার পরে উভয় হাত কান বরাবর উঠিয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে উভয় হাত নাভীর নীচে বাঁধবে। অতঃপর ইমাম ও -মুক্তাদী উভয়ে ছানা পড়বে। অতঃপর ইমাম সাহেব অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলবেন। প্রত্যেক তাকবীর বলার সময় ইমাম এবং মুক্তাদী উভয়ে হাত কান পর্যন্ত উঠিযে ছেড়ে দেবেন। তৃতীয় তাকবীরের পর হাত না ছেড়ে বেঁধে নিতে হবে।

প্রত্যেক তাকবীর বলার পরে তিন তাকবীর পরিমাণ সময় দেরী করতে হবে। অতঃপর ইমাম আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ বলে কিরাআত শুরু করবেন। ঈদের নামাযে সুন্নত হল, প্রথম রাকাআতে সুরায়ে ফাতেহার পর সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা সুরা পড়া এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা গাশিয়া পড়া। প্রথম রাকাতে সূরা শেষ হয়ে যাওয়ার

86

৯২

আখিরাতের পাসপোর্ট রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামাজ

পর অন্য নামাযের মতই রুকু সিজদা করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে প্রথমেই সূরা পড়ে নিবে। অতঃপর ইমাম সাহেব চারবার তাকবীর বলবেন, প্রথম তিন তাকবীরের সময় ইমাম মুক্তাদী উভয়ে হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দেবে এবং চতুর্থ তাকবীরের সময় হাত না তুলে সরাসরি রুকুতে চলে যাবে। অতঃপর অন্য নামাযের মতই এই নামায শেষ করবে।

জানাযার নামাজের বিবরণ

মুর্দাদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দাফনের আগে যেই নামাজ পড়া হয়, উহাকে জানাযার নামাজ বলে, এই নামাজ ফরজে “কেফায়াহ”। এলাকার কিছু লোকে আদায় করিলে সকলের পক্ষ হইতে আদায় হইয়া যায়। মুর্দারের মাথা উত্তর দিকে রাখিয়া ছিনা বরাবর ইমাম দাড়াইয়া এবং তাহার পিছনে ৩/৫/৭ কাতারে মুক্তাদী দাড়াইবে। ইমামের তাকবীরের পরে মুক্তাদীরা নিয়ত করতঃ হাত বাঁধিয়া নামায শুরু করিবে।

এই নামাযের চার তাকবীর বলা ও দাড়ানো ফরজ এবং মুর্দার জন্য দোয়া করা ওয়াজিব। আর ছানা, দরূদ পড়া সুন্নাত নামায অক্ষম্ভের পূর্বে মুর্দা পুরুষ না মহিলা বয়স্কা না নাবালেগ তাহা মুসল্লীগণকে জানাইয়া দিতে হইবে। অতঃপর ইমাম চুপে চুপে নিয়ত পড়িয়া প্রথম তাকবীর বলিয়া নামায শুরু করিবে, পরে মুক্তাদীরাও নামায শুরু করিবে।

জানাযার নামাযের নিয়্যত

উচ্চারণ : নাইয়াইতু আন উআদ্দিয়া লিল্লাহি তাআলা’ আরবায়া কাকবীরাতি ছালাতিল জানাজাতি ফারদ্বিল কিফায়াতি, আচ্ছানাউ লিল্লাহি তাআলা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবিয়্যি ওয়াদ্দুআ’উ লিহাযাল মাইয়্যিতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’আবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ : আমি আল্লাহর জন্য কেবলামুখী হইয়া ফরজে কিফায়া জানাযার নামায চার তাকবীরের সহিত এই ইমামের পিছনে আরম্ভ করিলাম, আল্লাহু আকবার।

নিয়তের ভিতরে ওয়াদ্দুআ’উ লিহাযাল মাইয়্যেতির পরে ইমামকে বলিতে হইবে “আনা ইমামূল্ লিমান্ হাদ্বারা ওয়া মাইয়্যাহদুরু” আর মুক্তাদীগণকে বলিতে হইবে “ইকুতাদাইতু বিহাযাল ইমামী” অর্থ আমি এই ঈমামের ইকতিদা করিলাম। মুর্দা মহিলা হইলে, “লিহাযাল মাইয়্যিতি” স্থানে “লিহাযিহিল মাইয়্যিতি” বলিতে হইবে। অতঃপর চুপে চুপে এই ছানা পড়িতে হইবে। ছানাটি-

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى

جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ .

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তায়া’লা জাদ্দুকা ওজাল্লা সানাউকা ওয়া লা-ইলাহা গায়রুক।

তারপর দ্বিতীয় কাতবীর বলিয়া হাত না উঠাইয়া সকলে চুপে চুপে দুরুদ শরীফ পাঠ করিবেন। (নামাযের দরূদ শরীফ) অতঃপর হাত না উঠাইয়া তৃতীয় কাকবীর বলিয়া সকলে নিম্নের দোয়া পাঠ করিবেন।

জানাযার নামাযের দোয়া

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيْنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيرِنَا وَذَكَرِنَا وَانْتُنَا اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ

مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِسْلَامَ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّه عَلَى

الإِيمَانَ.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগ্‌ ফির লিহাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদীনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সাগীরিনা ওয়া কাবীরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহী আলাল ইসলামি ওয়ামান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওফফাহু আলাল ঈমান।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমাদের ভিতরে জীবিত, মৃত, উপস্থিত, অনুপস্থিত, বালক, বৃদ্ধ, পুরুষ-স্ত্রী সকলকে মাফ করিয়া দিন। হে আল্লাহ! আমাদের ভিতরে যাহাদেকে জীবিত রাখ, ইসলামের উপর জীবিত রাখিও এবং যাহাদের মৃত্যু ঘটাও তাহাদেরকে ঈমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করিও।

নাবালেগ বালকের জানাযার দোয়া

اللَّهُمَّ اجْعَلُهُ لَنَا فَرَطًا وَاجْعَلْهُ لَنَا أَجْرًا وَذُخْرًا

وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعٌ وَمُشَفَعًا.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাজ্ ‘আলহু লানা-ফার ত্বাও ওয়াজ্ আলহু লানা-আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ্জ আলহু লানা-শা-ফি ‘আও মুশাফফা আ’।

অর্থ: হে আল্লাহ্ এই বাচ্চাকে আমাদের জন্য পথপ্রদর্শক বানান। তাকে আমাদের জন্য প্রতিদান ও সঞ্চয়ের বানান এবং তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী ও সুপারিশকৃত বানান।

কবর যিয়ারাতের দোয়া

উচ্চারণ : আস্সালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুরি মিনাল মুসলিমীনা ওয়াল মু’মিনীনা আনতুম লানা সালাফু ওয়া নাহনু লাকুম তাবাউওঁ ওয়া ইন্না ইন শাআল্লাহু বিকুম লাহিক্কুন।

অতঃপর সূরা ফালাক, ইখলাস, কাফিরুন তিবার করিয়া, সূরা ফাতিহা একবারও দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করিয়া মুর্দার গুনাহমাফী ও বেহেশত নসীবের জন্য মোনাজাত করিবে।

কাযা নামাজের বিবরণ

প্রত্যেক সুস্থ, সবল, স্বজ্ঞান ও বালেগ মুসলিম নর-নারীর উপর যথাসময়ে নামায আদায় করা ফরয। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন- “নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য।” বিশেষ ওজর ছাড়া নামায তরক করা কবিরা গুনাহ।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে বিনা ওজরে এক ওয়াক্ত নামায কাযা করিলে এক হোকবা পরিমান জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করিতে হইবে। এক হোকবার পরিমান দুই কাটি অষ্টাশি লক্ষ বছর।

অনেকে ছোটবেলা থেকে নামায আদায় করে না, তারা যখন নিয়মিত নামায আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন পূর্বের নামায কাযা আদায়ের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে।

যেহেতু বালেগ হওয়া থেকেই ব্যবহারিক জীবনের ইবাদতের হিসাব শুরু হবে, তাই কতদিন, কত ওয়াক্ত নামায আদায় করেনি তার একটি আনুমানিক হিসাব করে তার চেয়ে কিছু বেশি হয় এমনভাবে উমরী কাযা আদায় করতে হবে।

ফরজ এবং ওয়াজিব নামাজের কাজা আদায় করিতে হয়, অন্য কোন নামাযের কাজা আদায় করিতে হয় না। যদি ফজরের নামায কাজা হয় এবং উহা ঐদিন যোহরের পূর্বে আদায় করিলে সুন্নত সহ কাজা আদায় করিবে।

যদি কোন ওয়াক্তের নামায কাজা হয় তবে উহা পরবর্তী ওয়াক্তের প্রথমে কাজা আদায় করিয়া ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করিবে। যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামায কাজা হয় তবে উহার তরতিব রক্ষা করিতে হইবে। ইহার বেশি ওয়াক্ত কাজা হইলে, যখন সময় পাইবে তখনই কাজা আদায় করিবে, তবে দেরি করিবে না।

কাজা নামাযের জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নাই, স্মরণ হওয়া মাত্রই আদায় করিবে। আর মাকরূহ ওয়াক্তে আদায় করিবে না। কারণ দূর হইলেই কাজা আদায় করিবে। সফর অবস্থায নামায কাজা হইরে গৃহে প্রত্যাবর্তন করিয়া কছর কাজা আদায় করিবে।

কাজা নামাযের নিয়্যত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন্ আক্কাদিয়া লিল্লাহি তাআ’লা রাকআতাই সালাতিল ফাজরিল ফায়িতাতি ফারদুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাশি শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া ফজরের দুই রাকআত ফরজ নামাযের কাজা আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

অন্যান্য ওয়াক্তের কাজা নামাযে “উছাল্লিয়া” স্থানে “আক্বদিয়া” পড়িবে এবং ওয়াক্তের নামাযের পরে “ফায়িতাতি” বলিবে।

কছর নামাযের হুকুম

নিজ এলাকা থেকে ৪৮ মাইল আর কিলোমিটার হিসাবে ৭৭ কি. মি. কেউ বলেন ৮০ কি. মি. দূরত্ব অতিক্রম করে ১৫

দিনের কম সময় সেই স্থানে অবস্থানের ইচ্ছা করলে সেই ব্যক্তি মুছাফির বলে গণ্য হবে এবং তাকে ৪ রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাযগুলো ২ রাকাত পড়তে হবে।

২/৩ রাকাত বিশিষ্ট নামাযের কছর নেই। সুন্নত ও নফলের কোন কছর নেই। মুসাফির ব্যক্তি যদি মুক্তাদি হয়ে জামাতে নামাজ পড়েন তবে তাকে পুরো নামাজ আদায় করতে হবে। আর যদি মুসাফির ব্যক্তি ইমাম হন তবে মুক্তাদিগণকে তার কছর নামাজের ব্যাপারে জ্ঞাত করানো এবং মুক্তাদিগণকে বাকী নামাজ আদায় করে নিতে বলতে হবে।

বাকী নামাজ আদায় করার সময় মুক্তাদিগণকে বাকী নামাজ, আদায় করে নিতে বলতে হবে। বাকী নামাজ আদায় করার সময় মুক্তাদিগণকে সূরা-কেরাত পাঠ করতে হবে না। শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ পরিমাণ সময় দাঁড়িয়ে তারপর রুকু করতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে মুসাফির ব্যক্তি যদি কছর নামাজ আদায় না করে তবে গোনাহগার হবে।

কছর নামাজের নিয়ত-

নাওয়াইতুআন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই ছালাতিল কাছরি জুহরি/আছরি/ইশা ফারদুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বিভিন্ন প্রকার নফল নামাযের বিবরণ

নফল নামাজ চার প্রকার।

১ম প্রকার নফল নামাজগুলি হলো- সময় নির্দিষ্ট এবং রাকাত ও নির্দিষ্ট।

২য় প্রকার নফল নামাজগুলি হলো- সময় নির্দিষ্ট কিন্তু রাকাত অনির্দিষ্ট।

৩য় প্রকার নফল নামাজগুলি হলো- রাকাত নির্দিষ্ট কিন্তু সময় অনির্দিষ্ট।

৪র্থ প্রকার নফল নামাজগুলি হলো- সময় অনির্দিষ্ট এবং রাকাতও অনির্দিষ্ট।

১ম প্রকার নফল নামাজগুলি হলো- এশরাক, চাশত, আউয়াবিন, কুছুফ, খুসুফের এবং ইস্তেখারার নামাজ।

এশরাক নামাজের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلُوةِ إِشْرَاقِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ

اللَّهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকআতিল ইশরাকি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

চাশত এর নামায

হযরত আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি (চাশতের সময়) চাশতের বার রাকাআত নামায পড়ে আল্লাহ পাক তার জন্য জান্নাতে স্বর্ণের একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।

. মোল্লা আলী কারী (রহ.) হযরত আবু যর (রাযিঃ) থেকে এক মারফু হাদীস নকল করেন যে, তুমি যদি চাশতের দুই রাকাআত নামায পড় তাহলে তোমাকে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

আর যদি চার রাকাআত পড় তাহলে তুমি মুহসিনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর ছয় রাকাআত পড়লে অল্পে তুষ্টদের মধ্যে গণ্য হবে। আট রাকআত পড়লে সফলকামদের মধ্যে শামিল হবে। দশ রাকাআত পড়লে ঐ দিনের কৃত গোনাহ তোমার আমল নামায লেখা হবে না।

আর যদি বার রাকাআত পড় তাহলে আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য বেহেশতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।

সূর্য আকাশের এক চতুর্থাংশ উপরে উঠিলে এবং বৌদ্রের তাপ বৃদ্ধি পাইলে চাশত্ নামাযের ওয়াক্ত শুরু হইয়া বেলা দুপুর পর্যন্ত থাকে। এই নামায দুই, চার, আট কিংবা বার রাকআত পর্যন্ত পড়া যায়।

চাশত নামাযের নিয়ত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوةِ الضُّحَى سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ

أَكْبَرُ .

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতি যুহা সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি দুই রাকাত চাশতের নিয়ত করছি।

আউয়াবিন নামাজ

মাগরিবের ফরজ এবং সুন্নত পড়ার পর কমপক্ষে ছয় রাকাত এবং ঊর্ধে বিশ রাকাত নফল পড়লে অনেক সাওয়াব পাওয়া যায়। একে আউয়াবীন নামায বলে। হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি আওবানীনের ছয় রাকাত নামায আদায় করবে, তার ১২ বছর ইবাদত করার সওয়াব অর্জিত হবে।

অন্য হাদীসে এসেছে ২০ রাকাত পড়লে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী হবে।

আউয়াবিন নামাযের নিয়ত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّي لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْ صَلوةِ الْأَوَّابِينَ سُنَّةُ رَسُولِ اللهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ

أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই সালাতিল আওয়াবীন সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি দুই রাকাত আউয়াবীনের নিয়ত করছি।

ইস্তিখারার নামায

কোন মানুষ যখন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজের সম্মুখীন হয় যথা বিবাহ-শাদী, সফর, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি। আর সে জানতে চায় যে, উক্ত কাজটি তার জন্য সমীচীন কি না?

তাহলে তার জন্য উচিত সে যেন রাতে ঘুমানোর পূর্বে দুই রাকাআত নফল আমায পড়ে ওযুর সাথে পাক-সাফ বিছানায় কিবলামুখি হয়ে ইস্তিখারার দু’আ পড়ে শুয়ে পড়বে। [ইস্তিখারার দোয়া অন্য কিতাব থেকে দেখে নিবেন।

অতঃপর . ঘুম থেকে উঠার সময় দৃঢ়ভাবে যে বিষয় অন্তরে আসবে সেটাই করা উত্তম এবং সেটাই তার জন্য কল্যাণকর।

যদি একদিনে কোন কিছু অবগত না হওয়া যায় এবং মনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও দূর না হয়, তাহলে দ্বিতীয় দিনও পুনরায় একই আমল করবে।

এ ভাবে সাত দিন পর্যন্ত করবে। ইনশাআল্লাহ অবশ্যই ঐ কাজের ভাল মন্দ সম্পর্কে জানা যাবে। অনেকে মনে করে থাকেন ইস্তিখারা করলে স্বপ্নের মাধ্যমে কিছু না কিছু অবশ্যই জানা যাবে। এটা ভুল ধারণা, স্বপ্নে কিছু নজরে আসা এবং দিক নির্দেশনা পাওয়া জরুরী নয়। 

বরং কখনো এমনও হয় যে, নিজে নিজেই অন্তরে ঐ কাজ করার প্রেরণা ও স্পৃহা বেড়ে যায়। আবার কখনো এর বিপরীত ঐ কাজ থেকে মন একদম নিস্পৃহ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় দিলের এই উভয় ধরনের অবস্থা আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং দু’আর প্রতিফল মনে করতে হবে।

হাদীস: হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কে যেমন ভাবে কুরআন শরীফের সূরা সমূহ শিক্ষা দিতেন তেমনিভাবে সমস্ত কাজকর্মে ইস্তিখারা করার নিয়মও শিক্ষা দিতেন।

তিনি বলেন- তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি কোন কাজ করতে চায় তাহলে দুই রাকাআত নামায পড়ে দু’আ পাঠ করবে এবং নিজের প্রয়োজনের কথা বলবে।

২য় প্রকারের নফল নামাজের বিবরণ

ছালাতুত তাহাজ্জুদ: হুযুর (সা.) বলেন ফরজ নামাজসমূহের পর সর্বোত্তম নামাজ হলো ঐ নামাজ যা গভীর রাতে পড়া হয়। অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ। হুযুর (সা.) আরো বলেন, তাহাজ্জুদ পড়া তোমাদের জন্য জরুরী এটা হচ্ছে তোমাদের পূর্ববর্তী নেক লোকদের অভ্যাস। 

আর তোমাদের প্রভুর নৈকট্য লাভের পন্থা, অন্যায়, অশণ্টীলতা থেকে বাধা দান কারী, গোনাহ মাফের উপায় এবং শরীর হতে রোগ

দূরকারী।

তাহাজ্জুদ কত রাকাত পড়তে হবে?- বোখারী ও মুসলিম

শরীফে আম্মাজান আয়মা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, হুযুর (সা.) রমজান ও গায়ের রমজানে ১১ রাকাতের বেশি পড়তেন না। উক্ত ১১ রাকাতের মধ্যে হানাফী মাযহাব মতে তিন রাকাত হতো বিতর আর বাকী আট রাকাত তাহাজ্জুদ।

হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক রেওয়ায়েতে দেখা যায় যে এই সংখ্যা কখনো কখনো চার বা ছয় রাকাতে এসে দাঁড়াত। সুতরাং যার যার সুবিধামত দুই রাকাত থেকে নিয়ে আট রাকাত পর্যন্ত পড়া যেতে পারে। কেউ বেশি পড়তে চাইলে তারও অবকাশ আছে।

তাহাজ্জুদের নামাযের নিয়্যত

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ التَّسْبِيحِ سُنَّةُ رَسُولِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উসালিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতি সালাতিত তাহাজ্জুদি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া তাহাজ্জুদের দুই রাকআত নামায আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

তৃতীয় প্রকার নফল নামায :

কালাম হাত দা সালাতুত তাসবীহ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন

স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব কে বললেন, হে আব্বাস! হে আমার সম্মানিত চাচা। আমি আপনার খেদমতে একটি মূল্যবান উপঢৌকন ও দামী হাদিয়া কি পেশ করব? আমি কি আপনাকে একটি বিশেষ কাজের কথা বলে দিব?

এবং আপনার দশটি কাজ ও দশটি খেদমত করে দিব? অর্থাৎ আপনাকে এমন একটি কাজ বলে দিব যা দ্বারা দশটি উপকার হবে? এটি এমন একটি আমল যখন আপনি তা করবেন তখন আল্লাহ তাআলা আপনার যাবতীয় গোনাহ ক্ষমা করে দিবেন।

অর্থাৎ অতীত ও ভবিষ্যতের, নতুন পুরাতন, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, জানা অজানা, সগীরা-কবিরা যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিবেন। উক্ত আমলটি হল সালাতুত তাসবীহ। এর নিয়ম হল আপনি চার রাকাতআ নফল আমায পড়বেন। প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়বেন।

অতঃপর ১৫ বার বলবেন, “সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ অ লাইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার।” তারপর রুকু করবেন। রুকুর মধ্যে অনুরূপভাবে এই বাক্যটি ১০ বার পড়বেন, রুকু থেকে উটে দাঁড়ানো অবস্থায় ১০ বার, এমনিভাবে সিজদায় ১০ বার এবং সিজদা থেকে উঠে বসাবস্থায় ১০ বার।

এমনি ভাবে চার রাকাত নামায পড়বেন, এবং প্রত্যেক রাকাতে উল্লেখিত নিয়মে ৭৫ বার উক্ত বাক্যটি পড়বেন।

হে চাচা! যদি সম্ভব হয় তাহলে এই নামায প্রতিদিন একবার পড়বেন তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে প্রতি শুক্রবার পড়বেন। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে প্রতিবৎসর একবার, আর যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে জীবনে একবার কমপক্ষে পড়বেন।

সালাতুত্তাছবিহ নামাযের নিয়্যত

উচ্চারণ : নাওয়াইতুয়ান উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকাআতি ছালাতি ত্তাছবিহি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া চার রাকাত ছালাতুত্তাছবিহ নামাযের নিয়ত করিতেছি আল্লাহু আকবার।

জরুরী মাসআলা-মাছায়েল

মাসআলা : সালাতুত তাসবীহ পড়ার দুটি নিয়ম আছে। একটি উপরে উল্লেখ করা হল, দ্বিতীয় নিয়ম হল, ছানা পড়ার পর সূরা ফাতিহার পূবে ১৫ বার এই বাক্য পড়বে অতঃপর সূলা ফাতিহা ও কিরাআত শেষ করে রুকুর আগে ১০ বার, অনুরূপভাবে রুকুতে ১০ বার,

রুকু থেকে সোজা দাঁড়িয়ে ১০ বার, প্রথম সিজদায় ১০ বার, সিজদা থেকে উঠে ১০ বার,দ্বিতীয় সিজদায় ১০ বার। অতঃপর সরাসরি দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাবে এবং বাকি তিন রাকাত প্রথম রাকাতের মত আদায় করবে। এভাবে প্রত্যেক রাকাতে ৭৫ বার হবে।

এই নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় সিজদার পর বসে তাসবীহ পড়তে হবে না।

মাসআলা : উক্ত নামাযের জন্য নির্ধারিত কোন সূরা নেই, যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়া যায়।

মাসআলা : উক্ত তাসবীহের সংখ্যা কখনো মুখে গণনা করা যাবে না। নতুবা নামায ভেঙ্গে যাবে। হাতে তাসবীহ নিয়ে কিংবা আংগুল বন্ধ করে গণনা করা জায়েয কিন্তু মাকরুহ। উত্তম পদ্ধতি হল হাতের আংগুলগুলি যখন যেভাবে থাকে সেভাবে রেখে দেওয়া এবং এক তাসবীহ পড়া হলে এক আংগুলে চাপ দেয়া।

মাসআলা: কোন ক্ষেত্রে যদি তাসবীহ পড়তে ভুলে যায় তাহলে সেটা অন্য রোকনে পড়ে নিতে হবে। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে তা যেন রুকু থেকে উঠে এবং দুই সিজদার মাঝখানে না হয়।

মাসআলা: যদি কোন কারণে সিজদায়ে সাহো করতে হয় তাহলে উক্ত সিজদায় তাসবীহ পড়তে হবে না।

মাসাআলা : সালাতুত তাসবীহ একাকী পড়া উচিত। এটা যেহেতু নফল নামায তাই জামাআত সহ পড়া মাকরুহে তাহরীমী।

সালাতুত তাসবীহর জামাআত যদি সঠিক হতো তাহলে স্বয়ং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহ সাহাবা ও তাবেঈনদের থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যেত। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ এই নামায জামাআত সহ পড়েছেন তার কোন প্রমাণ নেই।

অতএব যারা বলে থাকেন যে, আমরা শেখানোর জন্য জামাআতে পড়াই তাদের এই উক্তি ঠিক নয়। বরং মানুষকে একত্রিত করে জামাআতে নামায পড়ানো ব্যতিত নিয়মনীতি বলে দেয়াই যথেষ্ট। পরে তারা একা একা পড়ে নিবে। অন্যথায় সাওয়াবের পরিবর্তে গোনাহ হবে।

চতুর্থ প্রকার নফল নামায

সালাতুত তওবা, সালাতুল হাযত, সালাতুস শোকর, তাহিয়্যাতুল ওযু, দুখলুল মাসজিদ তাহিয়‍্যাতুল উযু হল, যখনই উযু করবে তখন দু রাকাআত নামায পড়া, যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়ে থাকে।

রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে মুসলমান ভালভাবে উযু করবে এবং উযুর পরে একাগ্রতার সাথে দুই রাকাআত নফল নামায আদায় করবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।

হাদীস : হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর নামাযের পরে হযরত বেলাল (রাযিঃ) কে বললেন, তুমি ইসলামের যে আমলটির ফলে সবচেয়ে বেশি সাওয়াবের আশা কর তা আমার নিকট বর্ণনা কর। 

কেননা, আমি জান্নাতে তোমার জুতার আওয়ায শুনতে পেয়েছি। (স্বপ্নের মধ্যে অথবা কাশফ ইত্যাদিতে।) হযরত বেলাল (রাযিঃ) আরয করলেন দিবা-রাত্রি যে কোন সময় আমার ওজু নষ্ট হয় তখনি ওজু করি এবং সাধ্যমত দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল ওজুর নামায আদায় করি।

তাহিয়‍্যাতুল মসজিদ/দুখুলুল মসজিদ

তাহিয়‍্যাতুল মসজিদ হল যখনই মসজিদে গমন করবে তখনই বসার আগে দুই রাকআত নফল নামায পড়ে নেয়া।

হাদীস : হযরত আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে থেকে কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন তার উচিত বসার পূর্বেই দুই রাকাআত নামায পড়ে নেয়া।

তাওবার নামায

কোন ব্যক্তি থেকে যদি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোন গোনাহ * হয়ে যায় তাহলে তার জন্য উচিত ভাল ভাবে উযু করে দুই রাকাআত নামায পড়ে আল্লাহ তাআলার নিকট নিজ কৃত গোনাহর জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতের জন্য এই কাজ থেকে খাঁটি মনে তওবা করা।

একেই সালাতুত তাওবা বা তাওবার নামায বলা হয়। উকমাভাগত পালাবার কি কর হযরত আবু বকর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন গুনাহ করে সেখান থেকে উঠে ভালভাবে পাক পবিত্র হয়, অতঃপর নামায পড়ে আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে আল্লাহ পাক নিশ্চয় তাকে ক্ষমা করে দেন।

অতঃপর এর সমর্থনে একটি আয়াত তেলাওয়াত করলেন, যার অর্থ হচ্ছে, (মুত্তাকীগণ তো) ঐ সকল লোক যখন তারা কোন অন্যায় করে ফেলে কিংবা নিজেদের উপর অত্যাচার করে তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এরপর নিজেদের পাপরাশির ক্ষমা চায়। কে আছে আল্লাহ ব্যতীত পাপরাশি ক্ষমা করার? আর তারা একবার যা করে ফেলেছে তা জেনে শুনে বার বার করেনা।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গুনাহ থেকে তাওবাকারী ঐ ব্যক্তির ন্যায় যার কোনই গুনাহ নেই।

হাযতের নামায

যে কোন ব্যক্তির যখনই কোন সমস্যা আসে তখন তার কর্তব্য হচ্ছে ভাল ভাবে উযু করে দুই রাকাআত নফল নামায আদায় পূর্বক আল্লাহ তাআলার প্রশংসা এবং প্রিয়নবী রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করে হাদীসে বর্ণিত দু’আ পড়া। তাহলে ইনশাআল্লাহ তার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রাযিঃ) বলেন, রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যেই ব্যক্তির সামনে আল্লাহর কিংবা কোন ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত কোন সমস্যা বা প্রয়োজন দেখা দেয়, তার উচিত ভালভাবে উযু করা,

অতঃপর দুই রাকাআত নামায পড়ে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করা, প্রিয় নবী রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরূদ পড়া তাপর দু’আ পাঠ করা। [দু’আ অন্য কিতাব থেকে দেখে নিবেন।]

সালাতুল হাযতের নিয়ত

উচ্চারণ : নাওয়াইতুয়ান উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই ছালাতিল হাযাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

দৈনন্দিনের প্রয়োজনীয় দো’আ

সামনে বা ভবিষ্যতে কোন কাজ করতে চাইলে বলতে হয় إِنْشَاءَ اللهُ ইন্‌শা-আল্লা-হ্” (আল্লাহ চাহে তো)। অতীতের কোন কাজে বলতে হয় اَلْحَمْدُ لِلَّهِ আলহাদুলিল্লা-হ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

কোন ভাল কাজ করতে দেখলে বা কেউ করলে বলতে مَاشَاءَ اللهُ মা-শা-আল্লা-হ (আল্লাহ যা চান)। কেউ কোন উপকার করলে বলতে হয় جَزَاكَ اللهُজাঝা- কাল্লা-হ (আল্লাহ তোমায় প্রতিদান দিবেন)। 

কাউকে বিদায় দিতে বা কারো জন্য দো’আ করলে বলতে হয় فِي آمَانِ اللهِ ফি-আমানিল্লা-হ (আল্লাহর হাতে সুপর্দ করলাম)।

সালাম

السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ.

উচ্চারণ : “আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।” আপনার উপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।

সালামের উত্তর

وَعَلَيْكُمُ السَّلامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُه.

উচ্চারণ : “অয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।”

অর্থ: আপনার উপর আল্লাহর শান্তি রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

মুসাফাহার দো’আ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ .

উচ্চারণ: “খইয়া গফিরুল্লাহু লানা অলাকুম।”

অর্থ : আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে এবং আমাদেরকে ক্ষমা করে দিক।

কারো মাধ্যমে সালাম পেলে তার উত্তর عَلَيْكَ وَعَلَيْهِ السَّلام .

উচ্চারণ: “আলাইকা ওয়ালাই হিস সালাম।”

অর্থ: আপনার উপর এবং তার উপরে শান্তি বর্ষিত হোক।

হাঁচি দেয়ার পর দো’আ الْحَمْدُ لِلَّهِ.

উচ্চারণ : “আল হামদুল্লিলাহ।”

অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলার জন্য।

হাঁচির উত্তরে এ দো’আ يَرْحَمُكَ اللهُ .

উচ্চারণ : “ইয়ার হামু কাল্লাহ্”

অর্থ : আল্লাহ্ আপনার উপর রহমত বর্ষণ করুন।

হাঁচিদাতা প্রতি উত্তরে বলবে

يَهْدِيكُمُ اللَّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ .

উচ্চারণ : “ইয়াহদি কুমুললাহু ওয়া ইউসলিহু বা লাকুম।”

অর্থ : আল্লাহ্ আপনাদের সুপথ প্রদর্শন করুন- এবং আপনাদের অবস্থা সুধরে দিন।

হাই উঠলে দো’আ

لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ.

উচ্চারণ : “লা হাওলা ওয়ালা কুওতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইল আজীম” অর্থ: আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহ ব্যতিত কারো গুনাহ থেকে বেচে থাকার শক্তি ও নেক কাজ করার ক্ষমতা নেই। তিনি মহান।

ঘরে প্রবেশের দু’আ

যখন ঘরে প্রবেশ করবে তখন নিম্নের দু’আ পড়ে সালাম দিবে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَج. بِسْمِ اللَّهِ وَالْجْنَا وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا. وَعَلَى اللَّهِ رَبَّنَا

تَوَكَّلْنَا .

উচ্চারণ : “আল্লা-হুম্মা ইন্নী-আসআলুকা খায়রাল মাওলাজি ওয়া খায়রাল মাখরাজি, বিসমিল্লা-হি ওয়ালাজনা ওয়া বিসমিল্লা-হি খারাজনা ওয়া আলাল্লাহি রাব্বানা- তাওয়াক্কালনা।”

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট ভিতরে প্রবেশ করার এবং বের হবার মঙ্গল কামনা করছি। আমি আল্লাহর নামে প্রবেশ করলাম এবং তার নামেই বের হওয়া এবং আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। (হিসনে হাসিন)

ঘর থেকে বের হওয়ার দু’আ

بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ –

উচ্চারণ : “বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু আলাল্লা-হি লা- হাওলা ওয়া-কুও ওয়াতা ইল্লা-বিল্লা-হ্।”

অর্থ: আল্লাহর নামে বের হচ্ছি, আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহ্ ব্যতীত কোন শক্তি ও সামর্থ নেই। (আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ী)

যানবাহনে উঠার দো’আ

بِسْمِ اللَّهِ سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هُذَا وَمَا كُنَّا لَه

مُقْرِنِينَ ، وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ )

উচ্চারণ : বিসমিল্লা-হি সুবহা-নাল্লাজি-সাখখারালানা-হা- জা-ওয়ামা-কুন্না-লাহু-মুকুরিনি-ন ওয়া ইন্না-ইলা-রব্বিনা-লামুন কুলিবু-ন।

যানবাহন হতে নামার দো’আ

رَبِّ أَنْزِلْنِي مُنْزَلاً مُبَارَكًا وَأَنتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِينَ )

উচ্চারণ : রাব্বী আনলিনী-মুনযালাম মুবা-রাকাও ওয়া আনতা খাইরুল মুনযিলী-ন।

অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে বরকতময় স্থানে অবতরণ করাও! তুমিই একমাত্র উত্তম অবতরণকারী। (সূরা: মু’মিনুন,

আয়াত: ২৯)। পণ্টাবন শান্ত হলে হযরত নূহ (আ.) এর জাহাজ পাহাড়ের গাত্রে এসে ভিড়ল। তখন হযরত নূহ (আ.) এর অনুসারীরা জাহাজ হতে নামার সময় উপরোক্ত দো’আ পাঠ করলেন এবং আল্লাহ্ পাকও দো’আয় অসীম বরকত দান করলেন।

ফলে ধ্বংস প্রাপ্ত এলাকা সবুজ শস্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এর তাৎপর্য এই যে, যখন কোন ব্যক্তি কোন সওয়ারী হতে অবতরণ করে তখন সে যেন এ দো’আ পাঠ করে। আল্লাহ্ পাক এর বরকতে তাকে প্রকৃত গন্তব্য স্থানে পৌছিয়ে দিবেন।

আয়নায় চেহারা দেখার দু’আ

اللَّهُمَّ حَسَنْتَ خَلْقِي فَاحَسِنْ خُلُقِى.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা হাসানতা খলক্বী-ফাহাসিন খুলুক্বী।

অর্থ : “হে আল্লাহ্! তুমি আমার অবয়বকে সৌন্দর্য দান করেছ। অতঃপর আমার চরিত্র সুন্দর করে দাও।

১০ লক্ষ- ৭ কোটি নেকী ১ লক্ষ গুনা মাফের আমল

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ

يَحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيُّ لا يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرَ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু-লা-শারী- কালাহু-লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইউহয়ী-ওয়াইউমী-তু ওয়া হুওয়া হাইয়ুললা-ইয়ামূ-তু বিয়াদিহিল্ খাইর ওয়া হুওয়া’আলা-কুল্লি শাইয়িন-ক্বাদী-র।

অর্থ : হযরত ওমর ফারুক (রা.) বলেন, হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি বাজারে গিয়ে এ দু’আ পাঠ করবে, আল্লাহ্ পাক তার আমলনামায় দশ লক্ষ নেকী দান করবেন,

এবং তার আমলনামা থেকে দশ লক্ষ গুনাহ মিটিয়ে দিবেন আর তার জন্য দশ লক্ষ মরতরা বৃদ্ধি করে দিবেন ও অফুরন্ত শান্তি নিকেতন জান্নাতে তার জন্য একটা মনোরম দৃশ্যের অট্রালিকা তৈরী করবেন। (তিরমিযী, ইবনে মাজা ও মেশকাত শরীফ ২১৪ পৃষ্ঠা)

রমযানে ৭০ গুন, তাই রমযানে একবার পড়লে ৭ কোটি নেকী ১ লক্ষ গুনা মাফ হয়।

১ লক্ষ থেকে ৭০ লক্ষ নেকী লাভের আমল

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ .

উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী-। যে ব্যক্তি একশত বার এ দু’আ পাঠ করবে, আল্লাহ্ তা’আলা তার আমলনামায় এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নেকী প্রদান করবেন। রমযান ৭০ গুন, তাই রমযান ১০০ বার পড়লে ৭০ লক্ষ ১৬৮০ হাজার নেকী লাভ হইবে। (মুসলিম, তিরমিজী)

চল্লিশ হাজার নেকীর দু’আ

لا إله إلا الله وَاحِدًا أَحَدًا صَمَدًا لَمْ يَتَّخِذُ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوا أَحَدٌ.

উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া-হিদান আহাদান ছমাদান লাম ইয়াত্তাখিয ছ-হিবাতাওঁ ওয়ালা-ওয়ালাদান ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু-কুফু ওয়ান আহাদ। যে ব্যক্তি এ দু’আ দশবার পাঠ করবে, আল্লাহ্পাক তাকে চল্লিশ হাজার নেকী দান করবেন। (আহমদ)

আশি বৎসরের গুনাহ মাফের আমল

اللَّهُمَّ صَلِّي عَلَى مُحَمَّدِنِ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلَّمْ

تَسْلِيمًا.

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা সল্লি’আলা-মুহাম্মাদিনিন্ নাবিয়্যিল্ উমমিয়্যি ওয়া’আলা-আ-লিহী-ওয়া সাল্লিম তাসলী-মা।

হাদীসে পাকে এরশাদ হচ্ছে, যে ব্যক্তি জুমু’আর দিন আসরের নামাযের পর নিজ জায়গা থেকে উঠার পূর্বে আশি বার এ দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, তার আশি বৎসরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে এবং আশি বৎসরের এবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লিখা হবে। (মুসলিম শরীফ)

সত্ত্বর হাজার ফিরিশতাকে ক্লান্ত করে দেয়ার দো’আ

جَزَ اللَّهُ عَنِّى مُحَمَّدًا مَّا هُوَ أَهْلُه.

উচ্চারণ: জাঝাল্লা-হু ‘আন্না মুহাম্মাদাম্ মা-হুওয়া আহলুহু। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এ দুরূদ শরীফ এক বার পাঠ করবে, সত্তর হাজার ফিরিশতা এক হাজার দিন পর্যন্ত তার আমলনামায় নেকী লিখতে লিখতে হয়রান হয়ে যাবে। তাবরানী, তারগীব)

শত শহীদের সাওয়াব অর্জনের আমল

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফেৎনা- ফাসাদের জামানায় আমার সুন্নাতকে মজবুতভাবে ধারণ করবে তাকে শত শহীদের সাওয়াব দান করা হবে। (বায়হাকী শরীফ ও মেশকাত শরীফ, ৩০ পৃষ্ঠা)

প্রত্যেক ফরয নামাযের পর বিশেষ আমল

৩৩ বার سُبْحَانَ اللَّهِ )সুবাহানাল্লা-হ্) এবং ৩৩ বার الْحَمْدُ لِلَّهِ )আলহামদু-লিল্লা-হ) এবং ৩৪ বার اللَّهُ أَكْبَرُ (আল্লা-হুআকবার) এবং একবার

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ

وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ .

উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারি- কালাহু-লাহুলমুলকু ওয়ালা হুল হামদু ওয়াহু ওয়া’আলা-কুল্লি শায়ইন্ ক্বাদি-র।

অর্থ : (আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন এলাহ নেই। তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। সমগ্র রাজত্ব তারই এবং সকল প্রশংসা তারই।

তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান) হযরত হারিস বিন মুসলিম রাযি. থেকে বর্ণিত, প্রিয়নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর উপরোক্ত আমল করবে, তার সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ভাসমান ফেনা সমতুল্য হয়। (মুসলিম শরীফ)

পাঞ্জেগানা নামাযের পর কুরআনী আমল ও ফযীলত

هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ

উচ্চারণ : হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যু-ম।

অর্থা: তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী (সূরা: বাক্বারা, আয়াত: ২৫৫) (ফজরের পরে ১০০ বার)।

هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ .

উচ্চ চারণ: হুওয়াল আ’লিয়্যুল আ’যীম।

অর্থ : তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) বিরাট ও মহান (সূরা: বাক্বারা, আয়াত: ২৫৫) (যোহরের পরে ১০০ বার)।

هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ .

উঃ চারণ: “হুওয়ার রাহমা-নুর রাহী-ম”

অর্থ: তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) পরম করুণাময় ও দয়ালু

(সূরা: হাশর, আয়াত: ২২) (আসরের পরে ১০০ বার)।

هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ .

উচ্চারণ: হুওয়াল গাফুর-র রাহী-ম।

অর্থ: তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) মহা ক্ষমাশীল ও দয়াময় (সূরা: হুদ, আয়াত: ১০৭) (মাগরিবের পরে ১০০ বার)।

هُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ.

উাচ্চারণ: হুওয়াল লাজ্বীফুল-খাবী-র।

অর্থ: তিনি (আল্লাহ্ তা’আলা) অতি পবিত্র ও অতি সতর্ক (সূরা: আন’আম, আয়াত: ১০৩) (আসরের পরে ১০০ বার)।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পরে উপরোক্ত তাছবীহ সমূহ প্রত্যেকটি ১০০ বার করে পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে তার

ইহকাল ও পরকালের সব রকম কল্যাণ অবধারিত।

ফজর ও মাগরিবের পর জাহান্নাম থেকে মুক্তির আমল

اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ.

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আজিরনি-মিনান্না-র।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমাকে আপনি জাহান্নামের আগুন থেকে • রক্ষা করুন। তুমি যদি ঐ দিনে অথবা রাত্রে মৃত্যুবরণ কর তাহলে তুমি জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পাবে। (বুখারী শরীফ)।

হযরত হারিস বিন মুসলিম (রাযি.) থেকে বর্ণিত, প্রিয়নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যখন তুমি ফজর ও মাগরিবের নামায পড়বে তখন কথাবার্তা শুরু করার – আগে সাতবার উপরোক্ত দু’আটি পড়ে নিবে।

সূরা ইয়া-সী-ন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

“বিস্মিল্লা-হির্ রাহমা-নির রাহী-ম্”

পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

يسَ وَالْقُرْءَانِ الْحَكِيمِ إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ عَلَى

صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ تَنْزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ

উচ্চারণ- ১. ইয়া-সী-ন, ২. ওয়াল্ কুরআ-নিল্হাকী-ম, ৩. ইন্নাকা লামিনাল মুরসালী-ন, ৪. ‘আলা-ছিরা-ত্বিম মুসতাক্বী-ম, ৫. তানযী-লাল্ ‘আযীযির রাহী-ম,

لِتُنْذِرَ قَوْماً مَّا أُنْذِرَ ءَابَاؤُهُمْ فَهُمْ غُفِلُونَ . لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلَى أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنُقِهِمْ أَغْلُلاً فَهِيَ إِلَى الْأَذْقِنِ فَهُم مُّقْمَحُونَ ، وَجَعَلْنَا مِن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ سَدّاً وَمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَهُمْ فَهُمْ لا يُبْصِرُونَ . وَسَوَاءُ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ

تُنْذِرُهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ .

উচ্চারণ- ৬. লিতুনযিরা ক্বাওমাম্ মা-উনযিরা আ- বা-উহুম্ ফাহুম গা-ফিল্‌-ন, ৭. লাক্বাদ্ হাক্বক্বাল্ ক্বাওলু ‘আলা- আকছারিহিম ফাহুম্ লা-ইউ’মিনূ-ন, ৮. ইন্না- জ্বা’আলনা-ফী-আ’না-ক্বিহিম আগলা-লান ফাহিয়া ইলাল্ • আক্ব-নি ফাহুম্ মুকুমা হুন, 

৯. ওয়া জ্বা’আলনা-মিম্ বাইনি আইদী-হিম সাদ্দাওঁ ওয়া মিন খালফিহিম সাদ্দান্ ফাআগ্‌শাইনা-হুম্ ফাহুম লা-ইউবছিরু-ন, ১০. ওয়া সাওয়া-উন ‘আলাইহিম্ আআন্যারতাহুম্ আম্ লাম্ তুনযিরহুম লা-ইউ’মিনূ-ন।

إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمَنَ بِالْغَيْبِ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ . إِنَّا نَحْنُ نُحْيِ الْمَوْتَى وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَعَاثَارَهُمْ وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنُهُ فِي إِمَامٍ مُّبِيْنٍ

وَاضْرِبْ لَهُمْ مَّثَلاً أَصْحَبَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُونَ إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُمْ مُرْسَلُونَ قَالُوا مَا أَنْتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا وَمَا أَنزَلَ

الرَّحْمَنُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَكْذِبُونَ .

উচ্চারণ-১১. ইন্নামা-তুনযিরু মানিত্ তাবা’আয যিকরা ওয়া খাশিয়ার রাহমা-না বিলগাইবি ফাবাশশিরহু বিমাগফিরাতিওঁ ওয়া আজ্বরিন কারী-ম, ১২. ইন্না-নাহনু নুহয়িল- মাওতা-ওয়া নাকতুবু মা- ক্বাদ্দামু-ওয়া আ-ছা-রাহুম; ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহ্ছইনা-হু ফী -ইমা-মিম্ মুবী-ন,

১৩. ওয়াদ্বরির্ লাহুম্ মাছালান্ আছহা-বাল্ ক্বারইয়াতি। ইয জ্বা-আহাল্ মুরসালু-ন, ১৪. ইয আরসালনা- ইলাইহিমুছ নাইনি ফাকায্যাবু-হুমা- ফা’আযযাযনা- বিছা-লিছিন্ ফাক্বা- লু-ইন্না- ইলাইকুম মুরসালু-ন, ১৫. ক্বা-লু-মা-আনতুম্ ইল্লা- বাশারুম্ মিছলুনা-ওয়ামা-আনযালার রাহমা-নু মিন্ শাইয়িন্ ইন্ আনতুম ইল্লা-তাকযিবু-ন।

قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُونَ . وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلغُ الْمُبِينُ ، قَالُوا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهُوا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُمْ مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيمُ . قَالُوا طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ أَمِنْ ذُكِّرْتُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمُ مُسْرِفُونَ .

وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يُقَوْمِ اتَّبِعُوا

الْمُرْسَلِينَ .

উচ্চারণ-১৬. ক্বা-লু-রাব্বুনা- ইয়া’লামু ইন্না- ইলাইকুম্ লামুরসালু-ন, ১৭. ওয়ামা-‘আলাইনা-ইল্লাল্ বালা-গুল্ মুবী-ন, ১৮. ক্বা-লু-ইন্না তাত্বাইয়্যারনা বিকুম লাইল্লাম্ তান্তাহ্- লানার্ জুমান্নাকুম্ ওয়া লায়া মাস্ সান্নাকুম্ মিন্না-‘আয়া-বুন আলীম, ১৯. ক্বা-লু-ত্বা-ইরুকুম মা’আকুম; আইন্ যুক্কিবতুম; বাল্ আনতুম্ ক্বাওমুম্ মুসরিফু-ন, ২০. ওয়াজ্বা-আ মিন্ আক্বছাল্ মাদী-নাতি রাজুলুই ইয়াস্স্স-ক্বা-লা ইয়াক্বাওমিত্ তাবি’উল মুরসালী-ন।

اتَّبِعُوا مَنْ لا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُمْ مُهْتَدُونَ . وَمَا لِيَ لا أَعْبُدُ الَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ . أَتَّخِذُ مِنْ دُونِهِ شَفَاعَتُهُمْ وَالِهَةً إِنْ يُرِدْنِ الرَّحْمَنُ بِضُرٍ لا تُغْنِ عَنِّي شَيْئًا وَلَا يُنْقِذُونَ إِنِّي إِذًا لَفِي ضَلَلٍ مُّبِينٍ إِنِّي ءَامَنْتُ

بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُونِ

উচ্চারণ- ২১. ইত্তাবি’উ-মাল্লা-ইয়াসআলুকুম আজ্বরাও

ওয়া হুম্ মুহতাদূ-ন, ২২. ওয়ামা-লিয়া লা- আ’বুদুল্লাযী- ফাত্বারনী-ওয়া ইলাইহি তুরজ্বা’উ-ন, ২৩. আআত্তা-খিযু মিন্ দু-নিহী-আ-লিহাতান ইয় ইউরিদনির রাহমা-নু বিছুররিল লা- তুগনি ‘আন্নী-শাফা-‘আতুহুম্ শাইআওঁ ওয়ালা-ইউনক্বিযূ-ন, ২৪. ইন্নী-ইযাল্লাফী-দ্বালা-লিম্ মুবী-ন, ২৫. ইন্নী-আ- মানতু বিরাব্বিকুম্ ফাসস্মা’উ-ন”

قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يُلَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُونَ . بِمَا غَفَرَ لِي رَبِّي وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُكْرَمِينَ . وَمَا أَنزَلْنَا عَلَى قَوْمِهِ مِنْ بَعْدِهِ مِنْ جُنْدٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنْزِلِينَ . إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خُمِدُونَ . يُحَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ مَا يَأْتِيهِمْ مِنْ رَّسُولٍ إِلَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِعُونَ ..

উচ্চারণ- ২৬. ক্বী-লাদ্ খুলিল্ জ্বান্নাতা; ক্বা-লা ইয়া- লাইতা ক্বাওমী-ইয়া’লামু-ন, ২৭. বিমা- গাফারালী-রাব্বী-ওয়া জা’আলানী-মিনাল মুকরামী-ন, ২৮. ওয়ামা- আনযালনা- ‘আলা- ক্বাওমিহী-মিম্ বা’দিহী মিন্ জুনদিম্ মিনাস্ সামা- ই ওয়ার্মা-কুন্না-মুনন্যিলী-ন, ২৯. ইন্ কা-নাত্ ইল্লা-ছোইহাতাও ওয়া-হিদাতান্ ফাইযা-হুম্ খা-মিদূ-ন, ৩০. ইয়া-হাসরাতান্ ‘আলাল্ ‘ইবা-দ, মা-ইয়া’তী-হিম মিরাসূ-লিন্ ইল্লা-কা-নূ বিহী-ইয়াসতাহযি’উ-ন।

أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنَ الْقُرُونِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لا يَرْجِعُونَ . وَإِنْ كُلٌّ لَمَّا جَمِيعُ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ . وَعَايَةٌ لَّهُمُ الْأَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنُهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا

حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُونَ . وَجَعَلْنَا فِيهَا جَنْتٍ مِّنْ نَّخِيلٍ وَأَعْنَبٍ وَفَجَّرْنَا فِيهَا مِنَ الْعُيُونِ ، لِيَأْكُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ وَمَا

عَمِلَتْهُ أَيْدِيهِمْ أَفَلَا يَشْكُرُونَ ..

উচ্চারণ- ৩১. আলাম্ ইয়ারাও কাম্ আহলাকনা-ক্বাবলাহুম মিনাল কুরূ-নি আন্নাহুম ইলাইহিম্ লা-ইয়ারজ্বি’উ-ন, ৩২. ওয়া ইন্ কুললুল্লাম্মা-জ্বামী-‘উল লাদাইনা-মুহদ্বারূ-ন, ৩৩. ওয়া আ-য়াতুল লাহুমুল্ আরদুল মাইতাতু, আহইয়াইনা-হা- ওয়া আখরাজ্বনা-মিনহা-হাব্বান্ ফামিনহু ইয়া’কুলু-ন, 

৩৪. ওয়া জ্বা’আলনা-ফী-হা-জ্বান্না-তিম্ মিন্ নাখি-লিও ওয়া আ’না- বিও ওয়া ফাজুজ্বারনা-ফী-হা-মিনাল ‘উয়ু-ন, ৩৫. লিইয়া’কুলু- মিন্ ছামারিহী-ওয়ামা- ‘আমিলাতহু আইদী-হিম্; আফালা- ইয়াশকুরূ-ন,

سُبْحَانَ الَّذِي خَلَقَ الْأَزْوجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ . وَعَايَةٌ لَّهُمُ الَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُمْ مُّظْلِمُونَ . وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ ، وَالْقَمَرَ قَدَّرْ لَهُ مَنَازِلَ حَتَّى عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ . لا الشَّمْسُ يَنْبَغِي لَهَا أَنْ تُدْرِكَ القَمَرَ وَلا أَلَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ .

উচ্চারণ- ৩৬. সুবহা-নাল্লাযী-খালাক্বাল আযওয়া-জ্বা আখিরাতের পাসপোর্ট রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামাজ ১২৩ কুল্লাহা-মিম্মা-তুমবিতুল আরদু ওয়া মিন্ আনফুসিহিম্ ওয়া মিম্মা-লা ইয়া’লামু-ন, ৩৭. ওয়া আ-য়াতুল লাহুমুল লাইলু, নাসলাখু মিনহুন নাহা-রা ফাইযা-হুম্ মুজলিমূন, 

৩৮. ওয়াশ শামসু তাজুরী লিমুসতাক্বাররিল্লাহা- যা-লিকা তাক্বদী-রুল্ ‘আযী-যিল ‘আলী-ম, ৩৯. ওয়াল ক্বামারা ক্বাদ্দারনা-হু মানা- যিলা হাত্তা- ‘আ-দা কাল’উরজুনিল্ ক্বাদী-ম, ৪০. লাশ শামসু ইয়ামবাগী-লাহা- আন্ তুদরিকাল ক্বামারা ওয়ালাল্ লাইলু সা- বিকুন নাহা-রি; ওয়া কুললুন ফী ফালাকিই ইয়াসবাহু-ন।

وَعَايَةً لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ . وَخَلَقْنَا لَهُمْ مِّنْ مِثْلِهِ مَا يَرْكَبُونَ ، وَإِنْ نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنْقَذُونَ . الأَرَحْمَةً مِنَّا وَمَتَاعًا إِلى حِينٍ ، وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّقُوْا مَا بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَمَا

خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ .

উচ্চারণ- ৪১. ওয়া আ-য়াতুল্ লাহুম্ আন্না- হামালনা- যুররিয়‍্যাতাহুম ফিল্ ফুলকিল্ মাশহু-ন, ৪২. ওয়া খালাক্বনা- লাহুম্ মিমু মিছলিহী-মা-ইয়ারকাবু-ন, ৪৩. ওয়া ইন্‌ নাশা’নুগরি কুহুম ফালা-ছারীখা লাহুম্ ওয়ালা-হুম ইউনক্বাযূ-ন, ৪৪. ইল্লা-বাহমাতাম্ মিন্না-ওয়া মাতা’আন ইলা-হী-ন, ৪৫. ওয়া ইযা-ক্বী-লালাহুমুত্তাকু-মা-বাইনা আইদী-কুম্ ওয়ামা- খালফাকুম্ লা’আল্লাকুমুরহাম্-ন,

وَمَا تَأْتِيهِمْ مِّنْ ءَايَةٍ مِّنْ عَايَتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا عَنْهَا مُعْرِضِينَ . وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنْفِقُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ ءَامَنُوا أَنُطْعِمُ مَنْ لَّوْ يَشَاءُ اللَّهُ أَطْعَمَهُ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَلٍ مُّبِينٍ ، وَيَقُولُونَ مَتَى هُذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صُدِقِينَ . مَا يَنْظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَحْصِمُونَ. فَلَا يَسْتَطِيعُونَ

تَوْصِيَةً وَلَا إِلَى أَهْلِهِمْ يَرْجِعُوْنَ ..

উচ্চারণ-৪৬. ওয়ামা-তা’তীহিম্ মিন আ-য়াতিম মিন্ আ-য়া-তি রাব্বিহিম্ ইল্লা-কা-নৃ-‘আনহা-মু’রিদ্বী-ন, ৪৭. ওয়া ইযা-ক্বীলা লাহুম আনফিকু মিম্মা-রাযাক্বাকুমুল্লা-হু ক্বা-লাল্লাযী-না কাফারূ- লিল্লাযী-না আ-মানু- আনুত্ব’ইমু মাল্লাও ইয়াশা-উল্লা-হু আত্ব’আমাহ্- ইন্ আনতুম্ ইল্লা-ফী-দ্বালা-লিম্মুবী-ন, 

৪৮. ওয়া ইয়াকু-লু-না মাতা-হা-যাল ওয়া’দু ইন কুনতুম ছা-দিক্বী-ন, ৪৯. মা-ইয়ানজুরূ-না ইল্লা-ছাইহাতাও ওয়া- হিদাতান্ তা’খুযুহুম্ ওয়াহুম্ ইয়াখিছছিমূ-ন, ৫০. ফালা-ইয়াসতাত্বী-‘উ-না তাওছিয়াতাও ওয়ালা- ইলা- আহলিহিম্ ইয়ারজ্বি’উ-ন।

وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُمْ مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ

يَنْسِلُونَ . قَالُوا يُوَيْلَنَا مَنْ بَعَثَنَا مِنْ مَّرْقَدِنَا هُذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ . إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً

وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعُ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ . فَالْيَوْمَ لا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئاً وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ . إِنَّ

أَصْحُبَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَكِهُونَ .

উচ্চারণ- ৫১. ওয়ানুফিখা ফিছ ছু-রি ফাইযা-হুম মিনাল

আজ্বদা-ছি ইলা- রাব্বিহিম ইয়ানসিল্‌-ন, ৫২. ক্বা-লু- ইয়া- ওয়াইলানা- মাম্ বা’আছানা-মিম্ মারক্বাদিনা;- হা-যা-মা- ওয়া’আদার রাহমা-নু ওয়া ছাদাকাল্ মুরসাল্-ন, ৫৩. ইন্ কা- নাত ইল্লা-ছোইহাতাও ওয়া-হিদাতান ফাইযা-হুম্ জ্বামী-‘উল্ লাদাইনা-মুহদ্বারূ-ন, 

৫৪. ফালইয়াওমা লা-তুজলামু নাফসুন্ শাইআওঁ ওয়ালা- তুজ্বযাওনা ইল্লা-মা-কুনতুম তা’মালু-ন, ৫৫. ইন্না আছহা-বাল্ জ্বান্নাতিল্ ইয়াওমা ফী-শুগুলিন্ ফা-কিহূন,

هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَلٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِثُونَ . لَهُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَلَهُمْ مَّا يَدَّعُونَ . سَلَامُ قَوْلاً مِّنْ رَّبِّ رَّحِيمٍ . وَامْتَارُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُونَ . أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يُبَنِي

ءَادَمَ أَنْ الا تَعْبُدُوا الشَّيْطَنَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ .

উচ্চারণ- ৫৬. হুম্ ওয়া আযওয়া-জুহুম্ ফি জিলা-লিন্ ‘আলাল আরা- ইকি মুত্তাকিউ-ন। ৫৭. লাহুম্ ফী-হা-ফা-কিহাতুও ওয়া লাহুম্ মা-ইয়াদ্দা’উ-ন, ৫৮. সালা-মুন্ ক্বাওলাম্ মির্ রাব্বির্ রাহী-ম, ৫৯. ওয়াম্ তা-যুল ইয়াওমা আইয়্যুহাল মুজুরিমূ-ন, ৬০. আলাম্ আ’হাদ্ ইলাইকুম্ ইয়া-বানী-আ-দামা আল্লা-তা’বুদুশ শাইত্বা-ন, ইন্নাহ্-লাকুম ‘আদুওয়্যুম্ মুবী-ন।

وَأَنِ اعْبُدُونِي هَذَا صِرْطُ مُّسْتَقِيمُ . وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِيلاً كَثِيراً أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ . هُذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ

أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ .

উচ্চারণ- ৬১. ওয়া আনি’বুদু-নী-হা-যা-ছিরা- তুমুসতাক্বী-ম, ৬২. ওয়ালাক্বাদ আদ্বাল্লা মিনকুম্ জ্বিবিল্লান্ কাছী-রান; আফালাম্ তাকূ-নৃ-তা’ক্বিল্-ন, ৬৩. হা-যিহী- জ্বাহান্নামুল্লাতী-কুনতুম তৃ-‘আদূ-ন, ৬৪. ইছলাওহাল্ ইয়াওমা বিমা-কুনতুম্ তাকফুরূ-ন, ৬৫. আল ইয়াওমা নাখতিমু ‘আলা-আফওয়া- হিহিম্ ওয়াতুকাল্লিমুনা-আইদী-হিম্ ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম্ বিমা-কা-নু-ইয়াকছিবৃ-ন,

وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلَى أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَأَنَّى يُبْصِرُونَ وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنُهُمْ عَلَى مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ . وَمَنْ تُعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ أَفَلا يَعْقِلُونَ ، وَمَا عَلَّمْتُهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنْبَغِي لَهُ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرُ وَقُرْءَانُ مُّبِينٌ لِيُنْذِرَ مَنْ كَانَ حَيًّا وَيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِينَ …

উচ্চারণ- ৬৬. ওয়ালাও নাশা- উ লাত্বামাসনা- ‘আলা-আ’ইউনিহিম্ ফাসতাবাকুছ ছিরা-ত্বা ফাআন্না-ইউবছিরূ-ন, ৬৭. ওয়ালাও নাশা- উ লামাসাখনা-হুম্ ‘আলা-মাকা-নাতিহিম্ ফামাস্ তাত্বা-‘উ-মুদ্বিয়্যাও ওয়ালা-ইয়ারজ্বি’উ-ন, 

৬৮. ওয়ামান্ নুআম্মিরহু নুনাক্কিসহু ফিল খালকি; আফালা-ইয়াক্বিল্-ন, ৬৯. ওয়ামা- ‘আল্লামনা-হুশ্ শি’রা ওয়ামা-ইয়ামবাগী-লাহ্; ইন্ হুওয়া ইল্লা-যিকরুও ওয়া কুবআ-নুম্ মুবী-ন, ৭০. লিইউনযিরা মান্ কা- না হাইয়াও ওয়া ইয়াহিক্বক্বাল ক্বাওলু ‘আলাল্ কা-ফিরীন।

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعُماً فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ وَذَلَّلْتُهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوْبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُونَ وَلَهُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ أَفَلَا يَشْكُرُونَ وَاتَّخَذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالِهَةً لَعَلَّهُمْ يُنْصَرُونَ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَهُمْ

وَهُمْ لَهُمْ جُنْدٌ مُّحْضَرُونَ

উচ্চারণ- ৭১. আওয়ালাম্ ইয়ারাও আন্না-খালাক্বনা-লাহুম্ মিম্মা-‘আমিলাত্ আইদী-না-আন্‌’আ-মান্ ফাহুম লাহা-মা- লিকুন, ৭২. ওয়া যাল্লাল্লা-হা-লাহুম্ ফামিনহা-রাক্-বুহুম্ ওয়া মিনহা-ইয়া’কুলু-ন, 

৭৩. ওয়া লাহুম্ ফী-হা-মানা-ফি’উ ওয়া মাশা-রিবু; আফালা-ইয়াশকুরূ-ন, ৭৪. ওয়াত্তাখাযূ-মিন্ দু- নিল্লা-হি আ-লিহাতাল্ লাআল্লাহুম্ইউনছারূ-ন, ৭৫. লা- ইয়াসতাত্বী-উ-না নাছরাহুম্ ওয়াহুম্ লাহুম জুনদুম মুহদ্বারূ-ন,

فَلَا يَحْزُنُكَ قَوْلُهُمْ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ أَوَلَمْ يَرَ الإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَهُ مِنْ نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ وَضَرَبَ لَنَا مَثَلاً وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِ الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمْ مِّنَ الشَّجَرِ الْأَخْضَرِ نَارِ أَ فَإِذَا أَنْتُمْ مِنْهُ تُوْقِدُونَ .

উচ্চারণ-৭৬. ফালা-ইয়াহ্যনকা ক্বাওলূহুম। ইন্না-না’লামু মা ইউসিররূ-না ওয়ামা-ইউ’লিনূন, ৭৭. আওয়ালাম্ ইয়ারাল্ ইনসা-নু আন্না-খালাক্বনা-হু মিন নুত্বফাতিন ফাইযা-হুওয়া খাছী-মুম্ মুবী- ন, 

৭৮. ওয়া দ্বারাবা লানা-মাছালও ওয়া নাসিয়া খালক্বাহু’- ক্বা-লা মাই ইউহয়িল্ ‘ইজা-মা ওয়া হিয়া রামী-ম, ৭৯. কুল্ ইউহয়ী-হাল্লাজী-আনশাআহা- আওয়্যালা মাররাহ্: ওয়া হুওয়া বিকুল্লি খালকিন ‘আলী-মু, ৮০. আল্লাযী জা’আলা লাকুম্ মিনাশ্ শাজ্বারিল্ আখদ্বা-রি না-রান্ ফা-ইযা- আনতুম মিনহু তৃ-ক্বিদূ-ন।

أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاتِ وَالْأَرْضَ بِقْدِرٍ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُم بَلَى وَهُوَ الْخَلْقُ الْعَلِيمُ إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ

فَيَكُونُ . فَسُبْحْنَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَالَيْهِ تُرْجَعُونَ

উচ্চারণ- ৮১. আওয়া লাইসাল্ লাযী-খালাক্বাস সামা- ওয়া-তি ওয়াল্ আরদ্বা বিক্বা-দিরিন্ ‘আলা-আই ইয়াখলুক্বা মিছলাহুম; বালা- ওয়া হুওয়াল খাল্লা-কুল ‘আলী-ম। ৮২. ইন্নামা-আমরুহ্- ইযা-আরা-দা শাইআন্ আই ইয়াকু-লা লাহ্-কুন ফাইয়াকূ-ন। ৮৩. ফাসুবহা-নাল্লাযী বিয়াদিহী- মালাকৃ-ত কুল্লি শাইয়িও ওয়া ইলাইহি তুরজ্বা’উ-ন।

নেক আমল বই

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top