অনেক সুন্দর এবং ভালো রূপকথার গল্প লিখিত পাবেন আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে হয়তো আপনি আর কখনো এরকম সুন্দর রূপকথার গল্প লিখিত কখনো দেখেননি
Table of Contents
দরদী মুরগী রূপকথার গল্প লিখিত
একদিন এক মুরগী খাবার খুঁজতে বেরিয়ে এদিক সেদিক টু মারছে। ঘুরতে ঘুরতে একটা ভাঙ্গা বাড়ির ভিতরে এসে ঢুকল। সেখানে পুরনো ইটের পাঁজার ফাঁকে এক বিষাক্ত সাপ ডিম পেড়েছিল। ডিমগুলোকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে মুরগীর খুব মায়া হল। সে মনে মনে বলল, আহা বাছারা !
আবাগী মা ডিম ফুটে বেরুবার আগেই ছেড়ে চলে গেছে। মুরগীর খুব ইচ্ছা হল তা দিয়ে ডিমগুলো ফোটায়। সে সাবধানে ডিমগুলোকে বুকের তলায় রেখে তা দিতে বসে পড়ল ।
এমন সময় এক চাতক পাখি সেখানে এল। মুরগীকে দেখতে পেয়ে সে বলল, কী ভাই, ডিমে তা দিতে বসেছ দেখছি।
মুরগী বলল, হ্যাঁ, তবে আমার ডিম নয়।
অবাক হয়ে চাতকপাখি জিজ্ঞেস করল, তোমার নয়! তবে কার ডিম নয়। অবাক হয়ে চাতকপাখি জিজ্ঞেস করল, তোমার নয়! তবে কার ডিমে তা দিচ্ছ?
মুরগী বলল, আর বলো না সে কথা। সাপেরা বড় নিষ্ঠুর প্রাণী। এই দেখো না বাচ্চা বেরুবার আগেই ডিমগুলো যেখানে সেখানে ফেলে রেখে কোথায় চলে গেছে । দেখে বড় মায়া হল। তাই-
চাতকপাখি হেসে উঠে বলল, তোমায় দেখছি সর্বনাশা বুদ্ধিতে ধরেছে। সাপ হল বিষধর প্রাণী। তাদের অমন করে লালন করতে আছে?
মুরগী বলল, আহা ষাট অমন করে বলো না। ওরা হল অবোধ শিশু। আমিও তো মা, কী করে ওদের এভাবে ফেলে রেখে যাই বল ?
চাতক বলল, নির্বোধ আর কাকে বলে? যদি প্রাণে বাঁচতে চাও তো শিগগির নেমে এসো। সাপের স্বভাবই হল ছোবল মারা। ওই ছোবল মারা। ওই ছোবল যার গায়ে পড়বে তার নির্ঘাৎ মরণ। বাচ্চারা ডিম থেকে বেরিয়ে এসে সবার আগে তোমাকে ছোবল মারবে।
শিক্ষামূলক ঃ ক্ষতি করাই যার স্বভাব, দয়া বা ভালবাসা দিয়ে তাকে পাল্টানো যায় না । রূপকথার গল্প লিখিত
বিধবার মুরগী
এক গ্রামে বাস করত এক গরীব বিধবা। সে কয়েকটা মুরগী পূষত। মুরগীর ডিম বিক্রি করে সে নিজের খরচ চালাত।
একটা লাল মুরগীকে বিধবাটি ভালবাসত খুব। সেটা প্রতিদিনই একটা করে ডিম দেয়। বিধবা তাই তাকে যত্ন করে একটু বেশি পরিমাণেই খাবার দিত ।
এভাবেই দিন চলছিল। কিন্তু কী হল, একদিন বিধবার মনে পড়ল, লাল মুরগীটাকে যদি আর বেশি করে খাবার দেয়া যায় তাহলে নিশ্চয়ই সে দিনে দুটো করে ডিম পারে। তাহলে তারও দুটো পয়সা লাভ বেশি হবে।
এই ভেবে পরদিন থেকেই সে লাল মুরগীকে বেশি বেশি খাবার দিতে লাগল ।
পরপর কয়েকদিন লাল মুরগী আগের মতোই প্রতিদিন একটা করে ডিম দিল।
কিন্তু তারপর থেকেই সে যেমন মোটাসোটা হতে লাগল, তেমনি ডিমের সংখ্যাও কমে আসতে লাগল।
সপ্তাহে দু-চার দিন করে ফাঁক যেতে লাগল। এরপর সপ্তাহে একটি করে ডিম হতে লাগল।
শিক্ষামূলক ঃ যার যেটুকু প্রয়োজন তার বেশি দিলে ফল বিপরীত হতে পারে। রূপকথার গল্প লিখিত
একচক্ষু হরিণ
এক ছিল হরিণ। তার একটা চোখ ছিল কানা। তাই খুব সর্ত হয়ে তাকে থাকতে হত। খোলা মাঠে সে চরত যেত না। এক চোখে দেখতে পায় না বলে সব দিকে নরজর যেত না। সে তাই বুদ্ধি করে নদীর ধারেই ঘাস খেতে যেত।
সেখানে একদিকে নদী একদিকে ডাঙা। ডাঙ্গার দিক থেকেই শত্রু আসার ভয়। তাই কানা হরিণ খারাপ চোখটি নদীর দিকে রেখে, ভাল চোখে ডাঙ্গার দিকে নজর রাখত। এমনি কর নিশ্চন্ত হয়ে সে ঘাস খেয়ে বেড়াত।
একদিন এক ব্যাধ নদী বেয়ে নৌকা নিয়ে চলেছে। মন্দ চোখটা নদীর দিকে থাকায় হরিন তাকে দেখতে পেল না। ব্যাধ কিন্তু দূর থেকে হরিণকে দেখতে পেল। সে তীরের দিকে এগিয়ে তার ধুনকে তীর জুড়ল। তারপর সেই তীর ছুঁড়ে দিল হরিণকে নিশানা করে।
বুকে তীর বিধে মাটিতে পড়ে ছটফট করতে লাগল হরিণ। সেই সময় নদীতে নৌকোর ওপর ব্যাধকে দেখে সে কাদতে লাগল। আর বলতে লাগল, হায়, যেদিক থেকে বিপদ আসবে না ভেবে নিশ্চিন্ত ছিলাম, সেদিক থেকেই শত্রু এসে আমাকে মারল । ধিক আমার বুদ্ধি !
শিক্ষামূলক ঃ নিরাপদ ভেবে আমারা যেদিকে নজর করি না অনেক সময় বিপদ সেই দিক থেকেই আসে ।রূপকথার গল্প লিখিত
কাঠুরিয়া ও শেয়াল
একদিন এক শেয়াল প্রাণভয়ে পালিয়ে এক কাঠুরিয়ার কাছে এল। তাকে সে বলল, ভাই আমার বড় বিপদ। গ্রামবাসীরা আমার পেছনে তাড়া করে আসছে। দয়া করে তুমি একটু আশ্রয় দাও। তাহলে এ যাত্রা প্রাণটা বাঁচে। শেয়ালের কথা শুনে কাঠুরিয়া শেয়ালকে তার কুঁড়েতে নিয়ে লুকিয়ে রাখল ।
কিছুক্ষণ পরেই শেয়ালের খোঁজে গ্রামবাসীরা সেখানে উপস্থিত হল। কাঠুরিয়াকে ডেকে তারা বলল, ভাই একটা শেয়ালকে এ পথ দিয়ে যেতে দেখেচো? পাজিটা আমাদের হাঁসমুরগী খেয়ে শেষ করছে।
কাঠুরিয়া বলল, না হে, এ পাশ দিয়ে কোন শেয়াল যায় নি তোকে এ কথা বললেও কাঠুরিয়া কিন্তু হাতের ইশারায় গ্রামবাসীদের দেখিয়ে দিল, শেয়াল কোথায় লুকিয়ে আছে।
গ্রামবাসীরা কিন্তু কাঠুরিয়ার ইঙ্গিত বুঝতে পারল না। তার মুখের কথা বিশ্বাস করে তারা সেখান থেকে চলে গেল ।
বিপদ কেটে গেলে শেয়াল কুঁড়ে থেকে বেরিয়ে বনের দিকে চলল ।
কাঠুরিয়া তখন তাকে ডেকে বলল, ওহে অকৃতজ্ঞ শেয়াল, এমন বিপদ থেকে তোমাকে বাঁচালাম আর তুমি আমাকে একবার ধন্যবাদ পর্যন্ত জানালে না—চুপচাপ চলে যাচ্ছে?
ঘুরে দাঁড়িয়ে শেয়াল বলল, আমি অকৃতজ্ঞ নই ভাই। তোমার কাজে আর কথায় যদি মিল থাকত তবে তোমাকে আমি অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতাম ।
তুমি গ্রামবাসীদের মুখে যা বলেছো আর হাতের ইশারায় যা দেখিয়েছো তা সবই ঘরের বেড়ার আড়াল থেকে আমি দেখতে পেয়েছি। গ্রামবাসীরা তোমার ইঙ্গিত বুঝতে পারলে এতক্ষণে আমাকে অক্কা পেতে হত ।
শিক্ষামূলক ঃ মুখে মহৎ কথা আর ব্যবহার দুর্বৃত্তের মতো, এমন লোক সকলেরই ঘৃণার পাত্র । রূপকথার গল্প লিখিত
রোগী ও হাতুড়ে চিকিৎসক
অনেক দিক থেকে কঠিন পীড়ায় ভুগছিল একটি লোক। শহরের এক নামজাদা চিকিৎসকের ওষুধ খাচ্ছিল সে। চিকিৎসক বলেছেন, ভয়ের কিছু নেই, তবে অনেক দিন ওষুধ খেতে হবে।
একদিন হঠাৎ রোগের কুব বাড়বাড়ি হল। তখন তার বাড়ির লোকজন তাড়াহুড়োর করে নতুন এক ডাক্তারকে নিয়ে এল।
এই ডাক্তারটি ছিল নেহাতই হাতুড়ে। কিন্তু তার ঠাটবাট ছিল অভিজাত চিকিৎসকের মতো। ডাক্তার রোগীকে পরীক্ষা করে চিন্তিত মুখে বলল, আমাকে একেবারে শেষ সময়ে ডাকলেন। শরীরের যা অবস্থা দেখছি, দিন দুই টিকবেন কিনা সন্দেহ।
এই বলে ব্যবস্থাপত্র কিছু না দিয়ে নতুন ডাক্তার বিদায় নিল । সৌভাগ্যক্রমে, আগের ডাক্তারের ওষুধ খেয়ে রোগীও সামলে উঠল। তারপর কিছুদিনের মধ্যেই হাঁটাচলার শক্তিও ফিরে পেল ।
একদিন পথে বেড়াবার সময় রাগীর সঙ্গে দেখা হল সেই হাতুড়ে ডাক্তারের । ডাক্তার তাকে বলল, সুপ্রভাত! আপনি ফিরে এসেছেন দেখছি। তা যমালয়ের সবাই আছে কেমন?
রোগী হেসে উত্তর করল, সবাই ওখানে বেশ আনন্দেই আছে মশায়। তবে একদিন এক গুরুতর ঘটনা ঘটেছিল।
হাতুড়ে ডাক্তার জানতে চাইল, গুরুতর ঘটনাটা কী শুনি!
রোগী বলল, আর বলবেন না মশাই, সেদিন যমরাজ পৃথিবীর চিকিৎসকদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়েয়েছিলেন। তারা নাকি অসুস্থ মানুষকে মরতে দেয় না। চিকিৎসকদের শাস্তি দেবার জন্য তাদের নামের একটা তালিকাও প্রস্তুত হতে লাগল।
আপনার নামটাও সেই তালিকায় বসাতে যাচ্ছিল, জানতে পেরে আমি বাধা দিয়ে ঠেকিয়েছি। নিশ্চয় কোন দুষ্ট লোক শত্রুতা করে আপনার নামটা চিকিৎসক হিসেবে প্রচার করেছে। আমি বারবার শপথ করে বলেছি, চিকিৎসক হবার কোন যোগ্যতাই আপনার নেই। চিকিৎসকদের তালিকায় আপনার নাম রাখা মোটেই উচিত হবে না ।
শিক্ষামূলক ঃ মুর্খ হাতুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসার একটাই কৌশল, মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করা। রূপকথার গল্প লিখিত
ফেরিওয়ালা
এক ছুতোর দেবতা হামেসের একটি কাঠের মুর্তি বানিয়েছিল । একদিন সে মূর্তিটি বিক্রি করার জন্য হাটে নিয়ে এল। কিন্তু অনেকক্ষণ বসে থাকার পরও কোনও খদ্দের তার কাছে এল না ।
ছুতোর তখন চিৎকার করে বলতে লাগল আমি এক আশ্চর্য মূর্তি বিক্রি করতে এসেছি। এ মূর্তি যে কিনবে, সে দেবতার আশীর্বাদে অনেক ধন- দৌলতের মালিক হবে।
বারবার চিৎকার করে ছুতোর একই কথা বলতে লাগল । এমন সময় একজন এসে ছুতোরকে জিজ্ঞেস করল, ওহে, তোমার কথা কি সত্য? মূর্তিটা কিনলে বড়লোক হওয়া যাবে?
ছুতোর বলল, সত্যি কি মিথ্যে মূর্তিটা কিনে বাড়ি নিয়ে গেলেই বুঝতে পারবেন। দেবতা হামেসের এ এক আশ্চর্য মূর্তি।
সেই লোক তখন বলল, যদি তাই হয়, তুমি এটিকে কাছে না রেখে বিক্রি করতে নিয়ে এলে কেন?
ছুতোর উত্তর করল, আমার যে টাকার প্রয়োজন এখনই। কিন্তু মূর্তিটা কাছে রাখলে সেই টাকা পেতে অনেক সময় লাগবে ।
শিক্ষামূলক ঃ কিছু লাভের আশায় যে কোনও অন্যায় কাজের ঝুঁকি নিতেও দুর্জন লোকের বাঁধে না। রূপকথার গল্প লিখিত
কৃষক ও সিংহ
একদিন এক সিংহ খাবার খুঁজতে বেরিয়ে এক কৃষকের গোয়াল ঘরে ঢুকে পড়েছিল। দেখতে পেয়ে কৃষক সিংহকে তাড়াবার চেষ্টা করল না। সে সিংহটাকে ধরার মতলব করে গোয়ালের দরজা বন্ধ করে দিল। তারপর লম্বা লাঠি নিয়ে বাইরে থেকে নানা ভাবে সিংহকে বিরক্ত করতে লাগল ।
সিংহ ভয় পেয়ে পালাতে গিয়ে দেখে বেরুবার দরজাটা বন্ধ। তখন প্রচণ্ড রাগে সে ভয়ঙ্কর গর্জন করে গোয়ালের গরুগুলোকে মারতে লাগল । গরুগুলোকে মরতে দেখে কৃষক বুঝতে পারল কাজটা সে খুবই ভুল করেছে। সিংহ ধরতে গিয়ে নিজের গরুগুলোকে খোয়াল। সে তাড়াতাড়ি গোয়ালের দরজা খুলে দিল।
সঙ্গে সঙ্গে সিংহ লাফিয়ে বাইরে গিয়ে গর্জন করতে করতে বনে পালিয়ে গেল। গরুর আর্তনাদ ও সিংহের গর্জন শুনে কৃষকের বউ বাড়ি ভেতর থেকে ছুটে এল। এসে সে দেখল কৃষক মৃত রক্তাক্ত গরগুলোর পাশে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বউকে দেখে কৃষক হায় হায় করে উঠল। সে কাতর স্বরে বলল, গিন্নি, আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল । গোয়ালের একটা গরুও বেঁচে নেই । কৃষকের বউ জিজ্ঞেস করল, এমন সর্বনাশ হল কি করে?
আমি যে সিংহেরও গর্জন শুনতে পেলাম । কৃষক তখন তার সিংহ ধরার মতলবের কথা খুলে বলল । শুনে কৃষকের বউ স্বামীকে ভর্ৎসনা করে বলল, যেমন বোকার মত কাজ করেছ তেমনি ফল পেয়েছ। এখন আর কপাল চাপড়ে কি হবে?
সিংহের মত ভয়ঙ্কর জন্তুকে দেখলে লোকে ভয়ে পালিয়ে যায় আর সেই জন্তুকে তুমি গেলে কিনা ধরতে। বুদ্ধি বটে তোমার।
শিক্ষামূলক ঃ যেখানে ক্ষতির সম্ভাবনা সেখান থেকে দূরে থাকাই মঙ্গল । রূপকথার গল্প লিখিত
তাঁতী ও তার বৌ
এক গ্রামে এক তাঁতী বাস করত। সে ছিল বুদ্ধিমান আর খুবই শান্তশিষ্ট মানুষ। তাই গাঁয়ের লোকে তাকে ভালবাসত। এ ভালমানুষ তাঁতী একা ছিল ভালই ছিল। কিন্তু একদিন বিয়ে করে ঘরে বউ এনেই পড়ল মহা ফ্যাসাদে।
বউটি ছিল বড্ড মুখরা। বাড়ির কাজের লোকদের সে দু’দণ্ড শান্তিতে থাকতে দিত না। ছুতোনাতায় ক্যাট ক্যাট করে কথা শোনাত, ঝগড়া বাঁধিয়ে বসত। নতুন বউ সবার কাজের দোষ ধরার জন্যই যেন মুখিয়ে থাকত।
এ নিয়ে নিত্য কথা কাটাকাটি বিবাদ হত। তাঁতীর বাড়িতে কাক-পক্ষী বসার উপায় রইর না। বাড়ির লোকের শান্তি ঘুচল ।
বেচারা তাঁতী শান্তশিষ্ট মানুষ। সে অনেক করে বউকে বোঝাবার চেষ্টা করল। কিন্তু ঝগড়াটে বউ কি আর তার কথায় কান দেয়। উল্টো তাকেই মুখ ঝামটা খেতে হয় ।
তাঁতীর কাজকর্ম মাথায় উঠল। কী করে বউ-এর স্বভাব বদলানো যায় কেবল এ চিন্তাই তার মাথায় পাক খেতে লাগল ।
অবশেষে কোন উপায় না দেখে বউকে একদিন রেখে এল তার বাপের বাড়িতে ।
বেশ কিছুদিন বাপের বাড়ি কাটিয়ে বউ আবার তাঁতীর বাড়িতে ফিরে এল । তাঁতী বউকে জিজ্ঞেস করল, বিয়ের পরে প্রথম বাপের বাড়ি গেলে, সে বাড়ির লোকজন তোমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করল?
তার স্বভাবমত তাঁতী বউ ঝংকার দিয়ে বলল, সেকথা আর বলো না! অন্য সবাই যেমন তেমন, পাজির ধাড়ি রাখাল ছেলেগুলো মোটেও ভাল ব্যবহার করেনি।
শুনে তাঁতী হেসে বলল, তাহলেই বোঝ কাণ্ডটা। ওই রাখাল ছেলেরা খুব অল্প সময়ের জন্যই বাড়িতে থাকে। কিন্তু ওইটুকু সময়ের মধ্যে এমন ব্যবহার তারা পেত যে তোমার ওপর তারা সন্তুষ্ট থাকতে পারত না।
এতদিন পরে বাপের বাড়ি গিয়েও তুমি সকলের মন জয় করে আসতে পারলে না। এখন এ বাড়িতে সারাক্ষণ রয়েছ, মানুষগুলো কতটা শান্তিতে রয়েছে, নিজেই একবার ভেবে দেখ । মুখরা বউ এ কথার আর কোনও জবাব করল না ।
শিক্ষামূলক ঃ অনেক সময় সামান্য ঘটনা থেকেই বড় সমস্যা সমাধানের উপায় স্থির করা যায়। রূপকথার গল্প লিখিত
সাহসী গাধা
এক মোরগ আর এক গাধা একদিন বনে ঘুরতে বেরিয়েছিল। কিছুদূর যাবার পর এক সিংহ পড়ল সামনে। হৃষ্টপুষ্ট গাধাকে দেখে সিংহের মুখে পানি গড়াতে লাগল । কিন্তু মোরগের ভয়ে সে এগুতে পারে না।
কী কারণে কে জানে, সিংহ মোরগের ডাক একদম সহ্য করতে পারে না। তাই মোরগ দেখলেই সে ছুটে পালায়।
এখন গাধাকে সতর্ক করার জন্য মোরগ যেই ডেকে উঠল কোঁ-ক্কর কোঁ- সিংহও তৎক্ষণাৎ পড়িমরি করে দৌড়ে পালাল সেখান থেকে ।
বোকা গাধা তো অত শত জানে না। সে ভাবল সিংহ তার ভয়েই পালিয়ে গেছে। সে তখন আরও বেশি ভয় দেখাবার জন্য বীরদর্পে ধাওয়া করে গেল সিংহের পেছনে।
এদিকে সিংহ কিছু দূর ছুটে গিয়ে পেছন ফিরে তাকাল। সে দেখল, গাধা ছুটে তার দিকেই আসছে আর মাথা ঝাঁকিয়ে আস্ফালন করছে। ধারে কাছে মোরগকে দেখা যাচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়িয়ে সে ঘাড় কামড়ে গাধাকে মারল ।
শিক্ষামূলক ঃ নিজেকে বড় মনে করে নির্বোধেরাই বেঘোরে মারা পড়ে। রূপকথার গল্প লিখিত
শিকারী কুকুর ও খরগোস
একদিন ভয়ঙ্কর চেহারার এক কুকুর অনেকক্ষণ তাড়া করার পর একটা খরগোসকে ধরল। ধরে কখনও কামড়ে কখনও জিব দিয়ে চেটে শিকার নিয়ে মজা করতে লাগল ।
খরগোস অমন কুকুর কখনও দেখেনি। কুকুরটা তাকে নিয়ে কি করতে চাইছে, বুঝতে না পেরে সে বলল, তুমি যদি আমার বন্ধু হও তাহলে কামড়ে কষ্ট দিচ্ছ কেন? আর যদি শত্রু হও তবে অমন করে জিভ চেটে আদর করাই বা কেন?
শিক্ষামূলক ঃ অজানা বন্ধুর চেয়ে চেনাজানা শত্রুও ভাল । রূপকথার গল্প লিখিত
Read More: গল্পের বই