মহানবী সঃ-এর শেষ বাণী ও আজকের সমাজ – নেক আমল বই #12

মহানবী সঃ-এর শেষ বাণী ও আজকের সমাজ

আম্মাজান হযরত আয়শা সিদ্দীকাহ্ (রাঃ) বলেন, মৃত্যুর পূর্বে রাসূল (সঃ)-এর ঘাতক ব্যাধি এত বেশী বেড়ে গিয়েছিল যে হুজুর (সঃ) বসতেও সক্ষম ছিলেন না। কিন্তু ঐ কঠিন সময়ও নবী করীম (সঃ) চাদর হতে মাথা মুবারক বের করে দিয়ে দুটি কথাই বলতেন। ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের উপর এজন্য আল্লাহর আযাব এসেছিল যে, তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে সেজদার স্থান ও পুঁজার মন্ডপ বানিয়ে ছিল । কাজেই আমার উম্মতগণ যেন তা থেকে বেঁচে থাকে ।

দ্বিতীয় কথাটি ছিল-মহানবী (সঃ)-এর অবচেতন অবস্থায়ও বলে উঠতেন সালাত। সালাত ! অর্থাৎ নামায ! নামায! এর অর্থ হল আমার উম্মতগণ যেন নামাজকে ভালভাবে আঁকড়ে ধরে। কিছুতেই যেন নামাজ পরিত্যাগ না করে ।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ! একটু ভেবে দেখুন তো! দয়ালু নবী যে দুটি বিষয় সম্পর্কে মৃত্যুর পূর্বক্ষণেও আমাদের সতর্ক করে দিয়ে গেলেন, আমরা তাকে কতটা মূল্যায়ন করছি। আজকে আমরা নবী তো দূরের কথা একজন সাধারণ মানের ওলীর কবরকে আমরা পূজার মণ্ডপ বানিয়ে নিয়েছি। আর ঐ সকল মাজারে নানা ধরনের মান্নত করে থাকি। আর তাদের পদতলে নির্বিঘ্নে স্বীয় মস্তক লুটিয়ে দেই। অথচ এটা সম্পূর্ণ হারাম ও শিরকের অন্তর্ভূক্ত । আর আল্লাহ্ তায়ালা শিরক ব্যতীত সকল গোনাকেই তওবার মাধ্যমে মাফ করে দিবেন ।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ! অত্যন্ত আশ্চর্য হলেও সত্য যে, আমরা এহেন ঘৃণ্য অপকর্ম করছি। আর গোনাহের কাজে লিপ্ত হচ্ছি। কিন্তু এটাকে অন্যায় বা পাপ তো মনেই করছি না। বরং এটাকে পূণ্যের কাজ হিসেবে গ্রহণ করছি। আসুন আজ থেকে আমরা মাজার পূজা ও মাজারে মান্নত করা ছেড়ে দেই। আর কৃত | অপরাধের জন্য আল্লাহ্র দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করি। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

নবী করীম (সঃ) নামাজের ব্যাপারেও আমাদেরকে সচেতন থাকতে বলেছেন। জীবনের কোন অবস্থাতেই নামাজ পরিত্যাগ করা যাবে না। ইসলাম নামাজের জন্য কত সুন্দর বিধান করে দিয়েছেন। যদি কেউ দাঁড়িয়ে পড়তে না পারে তবে বসে পড়বে। আর তাও না পারলে শুয়ে শুয়ে রুক সিজদাহ ইশারা দিয়ে আদায় করেও নামাজের কর্তব্য সম্পাদন করবে। এভাবে আদায় করতে না পারলে ইশারা দিয়ে নামায পড়বে। সর্বাবস্থায়ই নামাজ পড়তে হবে।

নামাজের কোনই কনসেশন নেই। আর যদি কেউ এক ওয়াক্ত নামাজ ইচ্ছা করে কাজা করল তবে তাকে দু কোটি আটাশি লক্ষ বছর অগ্নির দাহ সহ্য করতে হবে। কিন্তু আফসোস! আজ আমরা নামাজকেও ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীন বুঝবার ও তদানুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমিন!

নবী-সাহাবী ও আউলিয়াদের নাম উচ্চারণের নিয়মাবলী
যখন পূর্ববর্তী কো নবীর নাম উচ্চারণ করা হয় তখন তাদের উপর এভাবে দরূদ পাঠাতে হয়-

উচ্চারণঃআলা নাবিয়্যিনা ওয়াআলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম । আমাদের নবী ও তাঁর উপর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। যেমন বলতে হবে হযরত আদম আলা নাবিয়্যিনা ওয়া আলাইহিস্ সালাতু ওয়াসসালাম । আর যদি পূর্ববর্তী একাধিক নবরি নাম উচ্চারণ করা হয় তখন বলতে হবে আলা নাবিয়্যিনা ওয়াআলাই হিমুসসালাতু ওয়াস্সালাম। আর আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর নাম নেওয়ার সাথে সাথে তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। কাজেই বলতে হবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষণ করুন।

কোন পুরুষ সাহাবীর নাম নেওয়া বা শোনার সাথে সাথে বলতে হবে, রাজিয়াল্লাহু আনহু ।
অর্থ : আল্লাহ্ তাঁর ব্যাপারে সন্তুষ্ট হয়েছেন।
কোন মহিলা সাহাবীর নামে আসলে পড়তে হয়, রাজিয়াল্লাহু আনহা অর্থাৎ আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তারা একাধিক হলে পড়তে হয়, রাজিয়াল্লাহু আনহুন্না। অর্থ আল্লাহ্ তায়ালা তাঁদের সকলের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন।

কোন ওলীর নাম আসলে বলতে হয়, রাহমাতুল্লাহি আলাইহি অর্থ তাঁর উপর আল্লাহর করুণা হোক (যদি তিনি মৃত হন) আর জীবিত হলে বলতে হয় দামাত বারাকাতুহুম বা মাদ্দা জিল্লুহুল আলী ।

মহানবী (সঃ)-এর শেষ বাণী

Table of Contents

নামাজের বিবরণ

ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ হচ্ছে দ্বিতীয় স্থানে। আর নামাজ সম্পর্কে মহানবী (সঃ) এরশাদ করেন-
আছছালাতু মিফতাহুল জান্নাহ্-অর্থ নামাজ বেহেশতের চাবি। একজন মুসলমানের চরম ও পরম পাওয়া হল আল্লাহর দীদার লাভ। যা জান্নাত বাসীগণ করবেন। আর এ জান্নাতে প্রবেশের জন্য মানুষকে ঈমান আয়নের সাথে সাথে আমলও করতে হয় অবশ্য করণীয় হিসেবে। এ আমল সমূহের মধ্যে প্রধান
আমল হল-নামাজ ।

নামাজ পড়ার পূর্বে কি করতে হবে

নামাজ পড়ার পূর্বে ৭টি কাজ করা ফরজ। (১) শরীর পাক পাক করা (২) কাপড় পাক করা (৩) নামাজের জায়গা পাক করা (৪) ছতর ঢাকা (৫) কেবলা মুখী হওয়া। (৬) সময় হওয়া (৭) নামাজের নিয়ত করা। এগুলোকে নামাজের
শর্তও বলা হয় ।

শরীর পাক করার পদ্ধতি

শরীরকে হয়তো হৃদছে আকবর বা বড় নাপাকী কিংবা হৃদছে আসগর বা ছোট নাপাকী হতে পবিত্র করতে হবে। বড় নাপাকী হতে পবিত্র করতে হলে তাকে অবশ্যই গোসল করতে হবে আর ছোট নাপাকী হতে পবিত্র হওয়ার জন্য অজু করলেই চলবে শুধুমাত্র অজু করলেই চলবে।

গোসলের বিবরণ

গোসল এটা আরবী শব্দ-এর অর্থ হল ধৌত করা কিন্তু শরীয়তের পরিভাষায় সব ধরনের ধৌত করাকেই গোসল বলা হয় না, বরং পবিত্র পানি দ্বারা সমস্ত শরীর ধৌত করাকে গোসল বলা হয় ।

গোসল তিন প্রকার (১) ফরজ গোসল, (২) সুন্নাত গোসল (৩) মুস্তাহাব গোসল ।

যে কোরণে গোসল করা ফরজ

  • যৌন সম্ভোগ বা কামোদ্দীপনার সাথে বা হস্ত মৈথুন দ্বারা বীর্যপাত হলে ।
  • স্ত্রীলোকের গুপ্তাঙ্গের খতনার স্থান পর্যন্ত প্রবেশ করলে, বীর্যপাত হোক বা না হোক ।
  • দিবা নিশির যে কোন সময় ঘুমন্ত অবস্থায় বীর্যপাত হলে ।
  • মেয়েদের হায়েজ ও নিফাস বন্ধ হলে গোসল করা ফরজ।

নিফাসের মাসয়ালা

  • যে সকল মহিলাদের নিফাসের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই অর্থাৎ কোন বার পনের দিন কোন বার ত্রিশ দিন হয়ে থাকে। ঐ সকল মহিলার চল্লিশ দিন পর্যন্ত রক্ত শ্রাবকে নিফাস মনে করবে। আর যদি চল্লিশ দিনের উপরে রক্তস্রাব হয় তখন এটাকে এস্তেহাজা বলা হবে।
  • যদি কার নিফাসের নির্দিষ্ট সময় থাকার পর কখনও একাধারে চল্লিশ দিনের উপর রক্তস্রাব হয় তখন এ পর্বের নির্দিষ্ট সময়কে নিফাস মনে করে পরবর্তী দিন গুলোকে এস্তেহাজা মনে করতে হবে।

স্বাভাবিক সন্তান প্রসব না হয়ে যদি লেংড়া, কানা, খোঁড়া, মৃত কিংবা শুধু একটি মাংসপিণ্ড কিংবা একটি পা বা হাত ইত্যাদি প্রসব হয় তখনও এর পর যেই রক্তস্রাব হবে তাকেও নিফাসের অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং নিফাসী মহিলার যে হুকুম তারও সে হুকুম প্রযোজ্য হবে।

হায়েজ নিফাস কালে যে সকল কাজ করা যায় না।
হায়েজ ও নিফাস বিশিষ্ট মহিলাদের জন্য কিছু কিছু কাজ করা সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ । যদিও বাহিক্য দৃষ্টিতে সে কাজগুলো করা পূণ্যের হয়। তা নিম্নে দেয়া হল :

(১) নামাজ পড়া যাবে না ।
(২) রোযা রাখা যাবে না।
(৩) কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে না, উচ্চারণ না করে শব্দের বানান বলে দিতে পারবে আর মুনাজাতের আয়াত সমূহ পড়তে পারবে।
(৪) সেজদায় তেলওয়াত করা যাবে না ।
(৫) বায়তুল্লাহ শরীফের স্পর্শ করা যাবে না।
(৬) কুরআন শরীফ স্পর্শ করা যাবে না।
(৭) মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না ।

(৮) কুরআনে কারীমের আয়াত বা সূরা লিখা সম্বলিত কোন কাগজও স্পর্শ করা যাবে না।
(৯) স্বামীর সাথে সহবাস সম্ভোগ করা যাবে না। তবে একত্রে শয়ে কোনরূপ অসুবিধা নেই।
(১০) হায়েজ বা নিফাসের মুদ্দত অতিক্রান্ত হয়ে গেলে হায়েজ নিফাস হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রী গোসল করার পূর্বে স্বামীর সাথে সহবাস করতে পারবে না। তবে যদি এক নামাজের ওয়াক্ত অতিক্রান্ত হয়ে যায় তবে বিনা গোসলেই জী সহবাস করা যাবে।

(১১) যদি কোন মহিলার হায়েজের নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই ব বন্ধ হয়ে যায় তবে তার স্বামী হায়েজের সর্বোচ্চ সময় দশদিন অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত সে স্ত্রীকে ব্যবহার করতে পারবে না। কেননা হতে পারে কোন কারণ বশত রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে। আর এটা তাৎক্ষণিক বোঝা সম্ভব নয়। তাই দশদিন
অপেক্ষা করতে হবে।

(১২) কার নফল নামাজে হায়েজ আরম্ভ হলে সে ঐ নামাজ ছেড়ে দিবে। কিন্তু হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর ঐ নামাজের কাজা আদায় করতে হবে। আর যদি কার ফরজ নামাজের মধ্যে হায়েজ আরম্ভ হয় তবে সে ঐ নামাজ ছেড়ে দিয়ে কিন্তু আর এর কাজা করতে হবে না ।
(১৩) এস্তেহাজার মধ্যে নামাজ রোজা সবকিছুই করতে হবে। কেউ নামাজ রোজা ছেড়ে দিলে মস্তবড় গোনাগার হবে ।

সুন্নত গোসল

চারটি কারণে গোসল করা সুন্নত।
(১) শুক্রবার দিন ছুবহে সাদেকের পরে জুমার নামাজের জন্য গোসল করা সুন্নত ।
(২) উভয় ঈদের নামাজের জন্য ।
(৩) হজ্জ শেষে আরাফার দিনে পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর গোসল করা সুন্নত।
(৪) গহজ্জের নিয়তে ইহ্রাম বাঁধার জন্য গোসল করা সুন্নত ।

মুস্তাহাব গোসল

একাধিক কারণে গোসল করা মুস্তাহাব
১। পবিত্র অবস্থায় মুসলমান হওয়ার পর গোসল করা। তবে অপবিত্র অবস্থায় মুসলমান হলে গোসল করা ফরজ।
২। বয়সের হিসেবে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর ।
৩। পাগলের সুস্থ হওয়ার পর ।
৪। বেহুশ ব্যক্তির হুশ ফিরে আসার পর ।
৫। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির নেশা দূর হওয়ার পর।
৬। হাজামত (ক্ষৌর কর্ম) এর পর।
৭। লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত ও শবে কদরে।
৮। মদীনা শরীফ প্রবেশকালে ।
৯। ১০ই জিলহজ্জ ফরজ নামাজের পর মুয়দাফিফায় অবস্থানের জন্য।
১০। মক্কা শরীফ প্রবেশের জন্য ।


১১। তাওয়াফে যিয়ারতের জন্য ।
১২। কুসূফ, খুসুফ ও ইস্তেস্কার নামাজের জন্য।
১৩। গুনাহ হতে তওবা করার জন্য ।
১৪। বিপদ আপদ ও মুসিবতের সময় নামাজ আদায়ের জন্য ।
১৫। মুসাফিল ব্যক্তির বাড়িতে পৌঁছার পর।
১৬। ইস্তিহাজাহ্ বন্ধ হওয়ার পর ।

গোসলের ফরজ তিনটি

১। গড় গড়া সহ উত্তম রূপে কুলি করা। কিন্তু রোযাদার হলে গড় গড়া করবে না।
২। নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌঁছান ।
৩। সমস্ত শরীর ভালভাবে ধৌত করা। যাতে শরীরের কোথাও এক চুল পরিমাণ জায়গা শুকন না থাকে যদি এ তিনটি জিনিসের কোন একটির সামান্যতম জায়গাতেও যদি পানি না পৌঁছে তবে তার ফরজ গোসল আদায় হবে না, এবং ঐ জাতীয় গোসলের পর নামাজ পড়লে নামাজও আদায় হবে না ।

গোসলের সুন্নত

গোসলের সুন্নত মোট ছয়টি
১। গোসলের নিয়তে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া ।
২। লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা ।
৩। কাপড় বা শরীরের কোন জায়গায় নাজাসাত লেগে থাকলে গোসলের পূর্বে তা ধৌত করা ।
৪। গোসলের পূর্বে ওজু করা ।
৫। সমস্ত শরীর তিনবার ধৌত করা।
৬। গোসলখানায় যদি পানি বা কাদা জমে থাকে তবে অন্য স্থানে সরে গিয়ে পা ধৌত করা ।

গোসলের মুস্তাহাব

গোসলের মুস্তাহাব আটটি
১। গোসলের নিয়ত করা।
২। গোসলের জন্য পরিমিত পানি ব্যবহার করা।
৩। শরীরকে ভাল ভাবে মর্দন করে গোসল করা।
৪। লোক চক্ষুর আড়ালে গোসল করা।
৫। উঁচু জায়গায় গোসল করা।
৬। গোসলে করার সময় কার সাথে কথা বার্তা না বলা ।
৭। গোসলে বিনা ওজরে কার সাহায্য না লওয়া।
৮। গোসল শেষে সমস্ত শরীর মুছে ফেলা।

অজুর বিবরণ

অজু আরবী শব্দ। এর অর্থ হল হাতমুখ ধৌত করা। পরিচ্ছন্ন হওয়া অজু করা (আ কাউছার পৃঃ ৫৯৪) ইসলামের পরিভাষায় নামাজ কোরআন তেলাওয়াত বা অন্যান্য ইবাদত করা কিংবা সর্বদা পবিত্র অবস্থায় থাকার জন্য এক বিশেষ পদ্ধতিতে মুখমণ্ডল, হাত পা ইত্যাদি ধৌত করার নামই হল অজু। এ অজু ব্যতীত নামাজ হবে না। তাইতো হাদীসে অযুকে নামাজের চাবি বলা হয়েছে।

উচ্চারণ ঃ মিফতাহুল জান্নাতি আচ্ছালাতু ওয়া মিফতাহুছ ছালাতি আততুহুরু!
অর্থ : বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ আর নামাজের চাবি হচ্ছে পবিত্রতা বা অজু।

অজু কিভাবে করতে হয়


প্রথমতঃ পবিত্র পানি সংগ্রহ করতে হবে অতঃপর-

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহ্মানির রাহীম ।
অর্থ : পরম করুণাময় আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। অতঃপর অজুর জন্য এভাবে নিয়ত করবে ।

উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন্ আতা ওয়াজ্জাআ নিরাফায়িল হাদাছি, ওয়া ইস্তেবাহাহাতান লিস সালাতি, ওয়া তাক্বাররুবান ইলাল্লাহি তায়ালা ।
অর্থ : আমি নাপাকী বিদূরীত করা ও নামাজ বৈধ হওয়া ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য অজু করার নিয়ত করছি।

অতঃপর উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করতে হবে। এক হাতের অঙ্গুলীকে অপর হাতের অঙ্গুলীর ভিতর ঢুকিয়ে খিলাল করবে এবং সম্ভব হলে সময় এ দোয়া পাঠ করবে।

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম। ওয়াল হামদু লিল্লাহি আলা দ্বীনিল ইসলাম। আল ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বাতিলুন। আল ইসলামু নূরুন ওয়াল কুফরু জুলমাতুন।

অর্থ ঃ সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য তিনি আমাদের ধর্মকে ইসলাম মনোনীত করেছেন। এ জন্য, ইসলাম সত্য কুফর বাতিল, ইসলাম জ্যোতিময় আর কুফর আঁধারে পরিপূর্ণ।
এরপর তিনবার কুলি করতে হবে। আর রোযাদার না হলে কুলির সাথে গড়গড়া করবে এবং মিছওয়াক করবে। আর মিছওয়াক না থাকলে হাতের অঙ্গুলি দিয়ে দাঁত মর্দন করবে এবং সম্ভব হলে এই দোয়া পাঠ করবে-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আয়িনী আ’লা তিলাওয়াতিল কুরআন, ওয়া জিকরিকা । ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনিই বাদাতিকা ।
অর্থ : হে, আল্লাহ্, তুমি তোমার কুরআন তেলাওয়াত, তোমার কৃতজ্ঞতা এবং তোমার সুন্দর ইবাদত করার ক্ষেত্রে আমায় সাহায্য কর বা আমায় শক্তি
দাও ।

এরপর ডানহাতে পানি নিয়ে তিন বার নাকে পানি টেনে নিতে হবে এবং বাম হাতের কনিষ্ঠা অঙ্গুলি দ্বারা নাকের ভিতর পরিষ্কার করবে। যদি রোযাদার হয় তবে সে নাকে পানি টানবে না বরং তখন হাত দিয়ে ঢেলে দিলে যতটুকু যায় তাই যথেষ্ট এবং সম্ভব হলে এ দোয়া পাঠ করবে।

উচ্চারণ ঃ আল্লাহুম্মা আরিযনী রালয় হাতা জান্নাতি, ওয়ালা তুরিহনী রায়ে হাতান নারি ।
অর্থ : হে প্ৰভু । আমার আপনি বেহেশেতের ঘ্রান লওয়ার তওফিক দিন এবং জাহান্নামের দুর্গন্ধ থেকে আমায় হিফাজত করুন।
এরপর সমস্ত চেহারাকে তিন বার ধৌত করতে হবে। তার সীমা হল কপালের চুলের গোড়া হতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং উভয় কানের লতী পর্যন্ত যদি কার দাড়ি ঘন হয় তখন সে দাড়িতে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে তা খেলাল করবে। এবং সম্ভব হলে এ দোয়া পাঠ করবে ।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বাইয়িদ ওয়াজহী ইয়াওমা তাবইয়াদ্দু উজুহুন ও তাস ওয়াদ্দু উজুহুন ।
অর্থ ঃ প্রভৃ হে! তুমি আমার চেহারাকে রওশন কর সেদিন, যেদিন কতেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল আলোকিত হবে। আর কতেক হবে কৃষ্ণবর্ণের। এর তিনবার ডানহাতে কুনই সহ ধুবে এবং ডান হাতকে হাম দ্বারা ভাল করে মর্দন করবে আর সম্ভব হলে এ দেয়া পড়বে ।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আ’তিনী কিতাবী বিয়ামীনী ওয়া হাসিবনী হিসাবাই য়াসীরান ।
অর্থ : ওহে, পরওয়ারদেগার! তুমি আমার আমলনামা আমার ডান হাতে প্রদান কর ও আমার থেকে সহজ ভাবে হিসেব গ্রহণ কর। এরপর অনুরূপ ভাবে বাম হাত ধুবে তিনবার এবং এ দোয়া পাঠ করবে যদি সম্ভব হয়।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাতু’তিনী কিতাবী বিশিমালী ওয়া রঅ মিন ওয়ারায়ি জাহরী।
অর্থ : হে আমার প্রভু! তুমি আমার আমলনামা আমার বাম হাতে দিওনা।
আর আমার পশ্চাতেও নয় । অতঃপর সমস্ত মাথা একবার মাছাহ্ করতে হবে এবং মাছাহর সাথে কান ও গর্দানকেও মাছাহ্ কবে এবং মাছের সময় এ দোয়া পড়া ভাল ।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আজিন্নানী তাহ্তা জিল্লি আরশিকা ইয়াওমা লা-জিন্নাইল্লা জিল্লু আরশিক।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমার তোমার আরশের ছায়াতলে ছায়া প্রদান কর সেদিন, যেদিন তোমার আরশের ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না এবং কান মাছার সময় এ দোয়া পড়বে যদি সম্ভব হয়।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাজ আলনী মিনাল্লাজীনা ইয়াসতামিউনাল ক্বওলা ফাওয়ায়াত্তাবিউনা আহসানাহু ।
অর্থ : হে প্ৰতি পালক! যারা আপনার কথা শুনে তাকে ভালভাবে অনুস্মরণ করে আমায় তাদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং গর্দান মাছাহ্ করার সময় এ দোয়া পড়া ভাল বা মুস্তাহাব।

অর্থ : হে আল্লাহ্! তুমি আমার গর্দানকে জাহান্নামের অগ্নি হতে মুক্ত রাখ । এরপর উভয় পা টাখনুগিরাসহ দৌত করবে প্রথমে ডান পা ধুইবে এবং পড়বে ।
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাব্বাতি ক্বাদামী আলাস সিরাতা ইয়াওমা তাঝিলুল আক্বদাম।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আমার পা সুদৃঢ় রাখ সিরাতের উপর সেদিন যেনিদ সেখান হতে বহু পা পিছলে যাবে, এবং বাম পা ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে।
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আল জাম্বী মাগফুরান ওয়া সা’য়ী মাশকুরান ওয়া তিজারাতীলান তাবুরা ।

অজু শেষে আকাশের দিকে তাকিয়ে এ দোয়া পাঠ করতে হবে।
উচ্চারণ ঃ আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অর্থ : আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই তিনি এক তাঁর কোন শরীক বা অংশিদার নেই এবং আমি আরও স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

যে ব্যক্তি অজুর শেষে উপরোক্ত দোয়া পড়ে তার জন্য বেহেশতের আটটি দরজা খোলা থাকবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করবে। (মিশকাত পূঃ
৩৯)

অজুর ফরজ সমূহ

অজুর ফরজ চারটি :
(১) সমস্ত মুখমণ্ডল অর্থাৎ মাথার অগ্রভাগের চুলের উৎপত্তি স্থল হতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হতে অপর কানের লতি পর্যন্ত একবার
ধৌত করা।
(২) উভয় হাতের কনুই সহ একবার ধোয়া !
(৩) মাথার চারভাগের এক ভাগ মাছাহ্ করা ।
(৪) উভয় পা টাখনু সহ ধৌত করা।
উল্লেখিত অঙ্গ সমূহের কোন একটি হতে যদি এক চুল পরিমাণ জায়গা শুকন থাকে তবে অজু হবে না, এবং যদি দাড়ি ঘন হয় তবে দাড়ির উপরি ভাগ সম্পূর্ণ রূপে ধৌত করা ফরজ। আর যদি দাড়ি পাতলা হয় তবে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছান ফরজ ।

অজুর সুন্নত সমূহ

নিয়ত করা। * বিসমিল্লাহ্ বলে অজু শুরু করা। * উভয় হাতের কব্জা পর্যন্ত ধৌত করা। * মেছওয়াক করা। * গড়গড়া সহ উত্তম রূপে কুলি করা নাকে পানি দেয়া। * দাড়ি খিলাল করা। * পূর্ণ মাথা একবার মাছাহ্ করা। * মাথা ব্যতীত অজুর অন্যান্য অঙ্গ সমূহ তিনবার ধৌত করা। * উভয় কান মাছাহ্ করা * মাথা মাছেহের পর ঐ অবশিষ্ট পানি দ্বারা উভয় কান মাছাহ্ করা ৷ হাত-পা ধৌত করার পর সময় অঙ্গগুলোর অগ্রভাগ হতে শুরু করা। * মাসেহ্ করার সময় মাথার সম্মুখ ভাগ হতে মাসেহ্ শুরু করা। * গর্দান মাসেহ ডান দিক থেকে অজু আরম্ভ করা। অজুর অঙ্গ সমূহ এক অঙ্গ শুকানর পূর্বেই অপর অঙ্গ ধৌত করা।

অজুর মুস্তাহাব সমূহ

*উঁচু জায়গায় বসে অজু করা। * কিবলার দিকে মুখ অজু করা। * বিনা ওজরে কার সাহায্য গ্রহণ না করা। * দুনিয়ারী কথাবার্তা হতে বিরত থাকা। * ডান হাত দ্বারা কুলি করা * ডানহাত দ্বারা নাকে পানি দিয়ে বাম হাত দ্বারা তা পরিষ্কার করা * সময় হওয়ার পূর্বে অজু করে নামাজের জন্য প্রস্তুত থাকা। * উভয় কানের ছিদ্রে শাহাদত আঙ্গুলি প্রবেশ করান * প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় বিসমিল্লাহ্ পাঠ করা। * আংশটি, নাক-ফুল, চুড়ি ইত্যাদি যদি ঠিলা হয় তবে মাড়াচাড়া দিয়ে পানি পৌঁছানো মুস্তাহাব আর যদি ঢিলা না হয় তবে ভালভাবে নাড়াচাড়া করে অবশ্যই পানি পৌঁছাতে হবে। * অজু শেষে কিবলা মুখি হয়ে দাঁড়িয়ে কালিমায়ে শাহাদত পাঠ করা। * অজু শেষে কিছু অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করা এবং এই দোয়া পাঠ করা।

উচ্চারণ : আল্লাহুমাজ আলনী মিনাত্তাউয়া বীনা ওয়াজ আলনী মিনাল মুতাত্বাহ্হিরীনা। ওয়াজ আলনী মিন ইবাদিকাছ ছলেহীনা ।
অর্থ : হে আল্লাহ্! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর। আর আমাকে পবিত্র ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত কর, আমাকে সৎকর্মশীল বান্দাদের মধ্যে গণ্য কর ।

অজুর মাকরূহ সমূহ

নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো অজুর মধ্যে মাকরূহ । অযুতে প্রয়োজনের অধিক বা কম পানি ব্যবহার করা। * চেহারার উপর পানি জোড়ে নিক্ষেপ করা । * অজু করতে বসে বা অজুর মধ্যে দুনিয়াদারীর কথা বলা। * বিনা প্রয়োজনে কার থেকে সাহায্য গ্রহণ করা। * এক বারের অধিক মাথা মাছাহ্ করা । * অজুতে কোন অঙ্গ তিন বারের বেশী বা কম ধৌত করা। * নাপাক জায়গায় বসে অজু করা। * নাক বা মুখে বাম হাত দ্বারা পানি দেয়া। * ডানহাত দ্বারা নাক পরিষ্কার করা।

অজু ভঙ্গের কারণ

  • পায়খানা পেশাব করা। * গুহ্যদ্বার হতে বায়ু নির্গত হওয়া। * গুহ্যদ্বার হতে কোন বস্তু যথা ক্রিমি, পাথর ইত্যাদি বের হওয়া। * শরীরের কোন স্থান হতে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয় গড়িয়ে পড়া। * খাদ্য, পিত, পানি, রক্ত এসব জিনিসের বমি মুখ মুখ ভরে হওয়া এবং এ সকল জিনিস অল্প অল্প করে কয়েক বার বের হলে তা যদি মুখ ভরা পরিমাণ হয়ে তবুও অজু ভেঙ্গে যাবে।

থুথুতে রক্তের পরিমাণ বেশী বা সমান হওয়া। * চিৎ কাত বা উপুর অথবা কোন বস্তুর সাথে এমনভাবে হেলান দিয়ে নিদ্রা যাওয়া, যদি ঐ বস্তুটা সরিয়ে দিয়ে তবে সে পড়ে যাবে। * বেহুঁশ হওয়া। * পাগল হওয়া। * প্রাপ্ত বয়স্কের রুকু সেজদা বিশিষ্ট নামাজে উচ্চস্বরে হাসা। * নারী-পুরুষের লিঙ্গ কামোত্তেজনার সাথে সরাসরি পরস্পর স্পর্শ হলে। এ হুকুম সমলিঙ্গ বা বিপরীত লিঙ্গ উভয় ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। * মণী বা কামরস বের হলে। * সন্তান ভূমিষ্ট হলে।

যে সকল কারণে অজু ভঙ্গ হয় না

  • রক্ত বের হয়ে স্থানচ্যুত না হলে অজু নষ্ট হয় না। * রক্ত বের হওয়া ছাড়া শরীরের কোন জায়গা হতে গোশত খসে পড়লে অজু নষ্ট হয় না। জখম বা নাক হতে পোকা বের হলে অজু নষ্ট হয় না। * যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে অজু নষ্ট হয় না তবে এরূপ করা শোভনীয় নহে। মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু নষ্ট হয় না। তবে কোন মিহরা যদি সেজদারত অবস্থায় ঘুমায় তবে তার অজু ভেঙ্গে যাবে। কারণ তাদের সেজদায় গিয়ে ঘুমানটা শায়িত হয় ঘুমানর সাদৃশ। * তদ্রূপ কোন বেড়া বা দেয়ালে হেলান না দিয়ে নিতস্ব চেপে বসে ঘুমালে অজু ভঙ্গ হবে না । * অনুরূপ ভাবে অজু করার পর পানাহার করলে অজুভঙ্গ হবে না। যদিও তা উত্তপ্ত গরমও হয়ে থাকে ।

ক্ষত ও ব্যান্ডেজের উপর দিয়ে অজু করার নিয়ম

যদি কার কোন অজুর সঙ্গে ক্ষত থাকে এবং তাতে পানি ব্যবহার করা অসম্ভব হয়। কিংবা কার অজুর সঙ্গে এমন ব্যান্ডিজ থাকে যা খোলা দুষ্কর কিংবা খুললে ক্ষতির আশংকা থাকে এমতাবস্থায় ঐ ক্ষত বা ব্যান্ডিজের চতুষ্পার্শ্ব ভাল ভাবে ধুয়ে এর উপর দিয়ে মাছেহ্ করবে। অজু করার পর যদি ব্যান্ডিজ খসে পড়ে এবং ঘা কাঁচা থাকে তাহলেও তার পূর্বের মাছেহ্ বাতিল হবে না । হ্যাঁ যদি ঘা শুকিয়ে গিয়ে থাকে তবে তাকে অবশ্যই ঐ স্থান ধুইতে হবে নতুন করে অজু করতে হবে না ।

ইস্তেঞ্জার বিবরণ

মলমূত্র পরিত্যাগ করা মানুষের স্বভাব জাত রীতি । প্রিয় নবী (স) মানুষকে কিভাবে মলমূত্র ত্যাগ করতে হয় তা ভালভাবে শিখিয়ে গেছেন । হুজুর (স) বলে দিয়েছেন যে যখন মানুষ স্বীয় মলমূত্র ত্যাগ করতে চায় তখন যেন সে নিভৃতে জন মানব শূন্য প্রাস্তরে গিয়ে কোন কিছুর আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে তার হাজত যেন সে পূর্ণ করে। তবে বর্তমান যুগের বাথরুমের কারণে নিভৃতে শূন্যপ্রান্তরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মোট কথা হল প্রসাব পায়খানা করতে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে অন্যান্য লোকদের থেকে আড়াল করতে হবে। বাথরুমে হাজত পূর্ণ করবে। আর যদি দোয়া পাঠ করে বাম পা আগে প্রবেশ করিয়া স্বীয় হাজত পূর্ণ করবে। আর যদি জনশূন্য প্রান্তর বা কোন জঙ্গলে স্বীয় মল মূত্রত্যাগ করে তবে সতর খোলার পূর্বে এ দোয়া পাঠ করবে।

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযু বিকা মিলাল খুবছি ওয়াল খাবায়িছ।
অর্থ : হে আল্লাহ্! আমি মহিলা ও পুরুষ শয়তান থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি।
এবং দাঁড়িয়ে সতর খোলা ঠিক নয় বরং বসার সময় কাপড় উঠাতে হয়। আর বাথরূমে অধিক সময় থাকলে রোগা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বের হওয়ার সময় এ দোয়া পাঠ করবে।

উচ্চারণ ঃ গুফরানাকা আল হামদু লিল্লাহিল্লাজী আযহাবা আন্নিল আযা ওয়া আফা-নি ।
অর্থ : হে প্ৰভূঃ আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সকল প্রশংসা সে মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য। যিনি আমার থেকে অশুভ ও নাপাক বস্তুকে দূর করে আমায় স্বাচ্ছন্দ ফিরিয়ে দিয়েছেন।

ইস্তিঞ্জা সম্পর্কে কতিপয় জ্ঞাতব্য

  • মলমূত্র ত্যাগের পর উভয় রাস্তা পরিষ্কার করার লক্ষ্যে ঢিলা, কুলুখ, টয়লেট পেপার ও পানি ব্যবহার করাকে ইস্তিঞ্জা বলা হয় ।
  • পেশাব পায়খানা হতে পবিত্র হওয়া আবশ্যক। এ ব্যাপারে নবী করীম (স) ইরশাদ করেন ।
    উচ্চারণ : ইস্তানজিলু আনিল বাউল ফাইন্না আম্মাতা আজাবির কবরি মিনহু।

অর্থ : তোমরা পেশাবের ছিটা ফোটা হতে উত্তম ভাবে পবিত্রতা অর্জন কর বা বেঁচে থাক । কেননা অধিকাংশ কবরের আজাব এ কারণেই হয়ে থাকে ।

  • পেশাব পায়খানা হতে উত্তম ভাবে পরিষ্কার হওয়া ফরজ।
  • পেশাব পায়খানা হতে নাপাকি দূরিভূত করার জন্য পানি ব্যবহারের পূর্বে ঢিলা বা টয়লেট পেপার ব্যবহার করা সুন্নাত।
  • তিনটি দিলা বা তিন টুকরা টয়লেট পেপার ব্যবহার করা সুন্নত পায়খানা হতে পরিষ্কার হওয়ার জন্য। তবে যদি পরিষ্কার তিন দ্বারা না হয় তবে এর অধিক
    ব্যবহার করা জায়েজ আছে। তবে বেজোড় ব্যবহার করা মুস্তাহাব ।
  • মাটি ও মাটি জাতীয় জিনিষ । যথাঃ বালি, পাথরের টুকরা, টয়লেট পেপার নেকড়া ইত্যাদি কুলুখ হিসাবে ব্যবহার করা জায়েজ।
  • হাড্ডি, মানুষের খাদ্য, কাচ, মানব দেহের কোন অংশ, পশুর খাদ্য। উপযোগী গাছের পাতা, পাকা ইট, কাগজ, গোবর, কয়লা এবং মানুষের প্রয়োজনীয় বস্তু কুলুখ হিসেবে ব্যবহার করা মাকরুহ্ ।
  • পেশাব-পায়খানা প্রবেশের সময় বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত আর বের হওয়ার সময় ডান পা আগে বের করা সুন্নত।
  • পায়খানা প্রসাবের জন্য পূর্বে উল্লেখিত দোয়া পড়া সুন্নত ।
  • পেশাব-পায়খানায় খোলা মস্তকে প্রবেশ করা মাকরুহ।
  • কিবলার দিক মুখ বা পিঠ করে পেশাব পায়খানা করা মাকরুহে তাহরীমী।
  • নিচু জায়গায় বসে উঁচু জায়গায় পেশাব করা এবং এমন জায়গায় পেশাব করা যেখান থেকে ছিটে কাপড়ে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। বা প্রবল বাসাতের মুখোমুখি হয়ে পেশাব করা মাকরুহ্ ।
  • পানিতে, মানুষের বিশ্রাম স্থলে, ফলবান বৃক্ষের নিচে, ছায়াদান গাছের নিচে, সাপ বিচ্ছুর কীট পতঙ্গ ইত্যাদি গর্তে, কবরস্থানে ও মানুষ চলাচলে রাস্তায় পেশাব ও পায়খানা করা মাকরুহ।
  • আল্লাহর নাম মহানবীর এবং কুরআনের আয়াত যদিও এটা কোন রুমালে বা টুপিতে বা আংটিতে বা তাবিজের ভিতরের হউক এটা নিয়ে পেশাব পায়খানায় যাওয়া জঘন্যতম ধৃষ্টতা ও মহা অন্যায় এবং মস্তবড় গোনাহের কাজ।
    অনুরূপ ভাবে পায়খানা পেশাবের সময় কোরআন তেলাওয়াত করা বা জিকির করা বা দরূদ শরীফ পাঠ করাও মহা অপরাধ। এতে ছাওয়াবের তো আশা করাই যায় না বরং উল্টো আর গোনাগার হবে।
  • পায়খানা পেশাবে গিয়ে ধূমপান করাও মাকরুহ।
    *পায়খানা পেশাবের সময় মুখে থাকা খাদ্য চর্বন করা বা কোন কিছু খাওয়া বা কাউকে সালাম দেয়া বা সালামের উত্তর দেয়া বা কার সাথে কোন রূপ কথা বলা ইত্যাদি মাকরুহ্ ।

যে সকল জিনিস দ্বারা কুলুখ অবৈধ

লোহা, তামা-পিতল, স্বর্ণ, রৌপ্য, কয়লা, চুনা, মসজিদের মাটি, গৃহের দেয়াল, কাচা ঘাস, কাঁচা কুটা, কাঁচা পাতা, চুল, গোঁফ, মানুষের কোন অঙ্গ, কাগজ, ফল-মূল, তরিতরকারী, হারাম বা হালাল জন্তুর মাংস বা তাদের পশম বা চামড়া হাড্ডি কিংবা শিং এবং যে ঢিলা বা টয়লেট পেপার কে একবার ব্যবহার করা হয়েছে তাকে পুনরায় ব্যবহার করা অবৈধ ও মাকরুহ।
তদ্রুপ দুধ, খেজুর রস, ডাবের পানি, তালের রস, ইক্ষুর জোস, তৈল, ডালডা, ঘি, সিরকা প্রভৃতি দ্বারাও ইস্তিঞ্জা করা নাযায়েজ ।

অজুর প্রকার ভেদ

অজু তিন প্রকার : (১) ফরজ অজু, যথা : নামাজ আদায় করার জন্য অজু করা ফরজ। (২) ওয়াজিব অজু যথাঃ বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফের জন্য অজু করা ওয়াজিব। (৩) মুস্তাহাব অজু যথা : পবিত্র অবস্থায় অজু করা, ঘুমানর জন্য অজু করা, এবং মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানর পর অজু করা।

তায়াম্মুমের বিবরণ

তায়াম্মুম আরবী শব্দ। এর অর্থ হল ইচ্ছে করা। কিন্তু শরীয়তের পরিভাষায় মাটি বা মাটি জাতীয় দ্রব্য দ্বারা এক বিশেষ পন্থায় পবিত্রতা অর্জনের ইচ্ছে করাকে তায়াম্মুম বলা হয়। তায়াম্মুম শুধুমাত্র উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য বৈধ করা হয়েছে যা অজু ও গোসলের প্রতিনিধি। তবে অজু ও গোসলে তায়াম্মুম করার নিয়ম পদ্ধতি একই। শুধু কেবল নিয়ত পরিবর্তন করতে হবে। নামাজের জন্য তায়াম্মুম করলে ঐ তায়াম্মুম দ্বারা কোরআন পড়া যাবে। কিন্তু কুরআন পড়ার জন্য তায়াম্মুম করলে তা দ্বারা নামাজ পড়া যাবে না, বরং নামাজের জন্য আলাদা তায়াম্মুম করতে হবে।

তায়াম্মুম কিভাবে করতে হয়

প্রথম তায়াম্মুমের নিয়ত করবে যে-
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আতায়াম্মামা লির যয়ীল হদছি, ওয়াইসতিবাহাতাল লিছ ছালাতি । ওয়া তাকারুবান ইলাল্লাহি তায়ালা।
অর্থ : আমি বড় ও ছোট নাপাক দূর করার জন্য এবং নামাজ বৈধ হওয়ার জন্য এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তায়াম্মুমের নিয়ত করছি।
নিয়ত করার পর বিসমিল্লাহ বলে পবিত্র মাটি বা মাটি জাতীয় দ্রব্যের উপর হাত রেখে হাতকে সামনে ও পিছনের দিকে টানবে। অতঃপর উভয় হাতকে মাটির থেকে উঠিয়ে উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী দ্বারা পরস্পর পরস্পরকে সামান্য আঘাত করবে যাতে করে অতিরিক্ত ধুলা লাগবে তা যেন পড়ে যায়।

এরপর সমস্ত মুখমণ্ডল একবার মাসাহ করবে এবং দাড়ি থাকলে তা খেলাল করবে। অতঃপর পুনরায় উভয় হাতকে মাটিতে পূর্বে ন্যায় মেরে ঝেড়ে নিয়ে প্রথমে ডানহাত দ্বারা বামহাত অতঃপর বাম হাত দ্বারা ডানহাত মাসাহ্ করবে। হাতে চুরি, ঘড়ি থাকলে তা নাড়াচাড়া করতে হবে এবং যদি আংটি থাকে তবে তা খুলে নিতে হবে।

কোন অবস্থায় তায়াম্মুম করা বৈধ

  • এক মাইলের মধ্যে পানি না পেলে, কিংবা পানির স্থানে কোন হিংস্র প্রাণী বা ক্ষতিকর প্রাণী থাকলে অথবা পানির স্থানে এমন কোন শত্রু থাকলে যে তার কাছে গেলে জানমাল ইত্যাদির ক্ষতির আশংকা রয়েছে। তখন তায়াম্মুম করা বৈধ ।
  • অসুস্থ অবস্থায় পানি ব্যবহারের প্রতি অক্ষম হলে অথবা পানি ব্যবহার করলে মৃত্যু রোগ বৃদ্ধি কিংবা রোগ সৃষ্টির আশংকা থাকলে তায়াম্মুম করা বৈধ।
  • কূপ আছে কিন্তু পানি উঠানোর ব্যবস্থা নেই, সাথীর কাছে পানি আছে কিন্তু সে দিচ্ছে না, বা পানি যে পরিমাণে আছে তা দ্বারা অজু গোসল করলে পিপাসায় কষ্ট পাবার আশংকা আছে। কিংবা খাদ্য পাকানোর ক্ষেত্রে পানির সংকটের আশংকা থাকলেও তায়াম্মুম করা জায়েজ আছে ।
  • উভয় ঈদের নামাজ কিংবা জানাজার নামাজ সম্পূর্ণ রূপে ছুটে যাওয়ার ভয় হলে (তবে মৃতের অবিভাবক হলে পারবে না) তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতে পারবে আর যদি অজু করে এ সকল নামাজগুলোা কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না ।
  • যানবাহনের আরোহানবস্থায় যদি পানি না পাওয়া যায় এবং পানি খুঁজতে গেলে গাড়ি ছেড়ে দেয়ার ভয় থাকলে এবং যাত্রা অনেক দূরের হলে এবং সে পথ অতিক্রম করার আর কোন ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবে।
  • যদি পানি কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু কেনার মত পয়সা তার না থাকলে তার জন্য তায়াম্মুম করা জায়েজ অথবা পানির মূল্য অত্যন্ত চড়া হলে ক্রয় করা ওয়াজিব নয় বরং তখনও তায়াম্মুম করা জায়েজ।
  • প্রথম ওয়াক্তের পর যদি পানি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে মাকরুহ ওয়াক্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম। পানির অপেক্ষা না করে প্রথম ওয়াক্তে
    তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করলে নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু যদি ওয়াক্তের মধ্যেই পানি পাওয়া যায় তবে তাকে পুনরায় অজু করে নামাজ আদায় করতে
    হবে।

কোন বস্তু দিয়ে তায়াম্মুম করতে হয়

তায়াম্মুমের জন্য মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তু হওয়া আবশ্যক। যথাঃ পাথর, কংকর, চুনা, ইট ইত্যাদি দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে।

  • কাঠ, লৌহ, পিতল, চামড়া, কাপড় ইত্যাদির উপর যদি এ পরিমাণ ধূলা জমে থাকে যে তাতে হাত ফেললে হাতে ধুলা লেগে যায় তবে ঐ সকল বস্তুর দ্বারাও তায়াম্মুম করা জায়েজ।
    *পাথর সম্পূর্ণ ধুলা মুক্ত হলে উহার উপর তায়াম্মুম করা জায়েজ।

তায়াম্মুমের ফরজ সমূহ

তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি, (১) নিয়ত করা (২) সমস্ত মুখমণ্ডল মাসাহ্ করা (যতটুকু ওজুতে ধুতে হয়) (৩) উভয় হাতের কনুই সহ মাসাহ্ করা। উল্লেখ্য যে এর থেকে কোন একটি বা তার কিয়দাংশ বাকি থেকে গেলে তায়াম্মুম বৈধ হবে না এবং ঐ তায়াম্মুম দ্বারা নামাজ ও কোরআন স্পর্শ ও করতে পারবে না ।

তায়াম্মুমের সুন্নত সমূহ

তায়াম্মুমের সুন্নত সাতটি, যথা : (১) তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা, (২) উভয় হাতের তালু মাটিতে রেখে সামনে ও পিছনে এক বার টানা, (৩) মাটিতে হাত রাখার সময় আঙ্গুলগুলো একটু ফাঁক করে রাখা, (৪) মাটি হতে হাত উঠানর পর একটু ঝাড়া, (৫) প্রথমে মুখ ও পরে উভয় হাত মাসাহ্ করা, (৬) মুখ মণ্ডল ও উভয় হাত মাসাহ্ করার মাঝে বিলম্ব না করা এবং (৭) তরতীব ঠিক রাখা ।

তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণ

  • যে সকল কারণে অজু ভঙ্গ হয় ঐ কারণগুলোতে তায়াম্মুম ও ভেঙ্গে যায় এবং যে সকল কারণে গোসল ফরজ হয় তাতেও তায়াম্মুম ভেঙ্গে যায় ।
  • পানি পাওয়া গেলে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যায় ।
  • পানি ব্যবহার করার অক্ষমতা দূর হয়ে গেলেও তায়াম্মুম ভেঙ্গে যায়।

মুজার উপর মাসাহ্ করা বর্ণনা

যদি কেউ পায়ে চামড়ার মোজা পরিধান করে তবে তার জন্য মুজার উপর পা ধোয়ার পরিবর্তে মাসাহ্ করা বৈধ হবে। কেননা হাদীসে এসেছে যে নবী করীম (স) মুজার উপর মাসাহ্ করেছেন ।

উচ্চারণ ঃ ইন্নাহু আলাই হিস্সালাম আতা ইলা সুবাতাতি কুওমিন ফাবালা ওয়া তাওয়াদ্দা আ ওয়া মাছাহাআলা খুফফাইহি।
অর্থ : হুজুর (স) কোন এক সম্প্রদায়ের ময়লা আবর্জনার স্থানে আসলেন। অতঃপর পেশাব করলেন, অজু করলেন এবং উভয় মুজার উপর মাসাহ করলেন।
যদি কোন ব্যক্তি সম্পূর্ণ অজু করার পর মুজা পরিধান করে তখন অজু ভাঙ্গার পর হতে ঐ ব্যক্তি যদি মুকীম হয় তবে একদিন একরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসাহ্ করতে পারে আর যদি মুসাফির হয় তবে তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ্ করতে পারবে। তবে যদি কার গোসল ফরজ হয় তবে সে মুজার উপর মাসাহ্ করলে হবে না। বরং তাঁকে মুজা খুলে পা ধুতে হবে।

মাসাহ্ করার নিয়ম

হাতের আঙ্গুল ও পায়ের আঙ্গুলগুলোকে ভিজিয়ে পায়ের আঙ্গুল হতে টের টাখন পর্যন্ত নিয়ে আসলেই মুজা মাসাহ্ হয়ে যাবে। পায়ের উপরি ভাগেই মাসাহ্
করা পায়ের তলায় নয় ।

মুজা মাসাহ ভঙ্গের কারণ

যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় ঐ সকল কারণে মুজা মাসাহ্ও শেষ হয়ে যায় এবং মুজা খুলে ফেললে বা মুজার ভিতর পানি ঢুকলে বা মুজা মাছাহের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা মুজা এ পরিমাণ ফেটে গেলে যে, তার দ্বারা পায়ের ছোট তিন আঙ্গুলের সমান বা বেশী হয়ে আসে শুধুমাত্র পা ধুয়ে নিলেই চলবে নতুন করে অজু করতে হবে না।

Read More: নেক আমল বই

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top